× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কামাল লোহানীর প্রশ্ন শাজাহান খান কী করে মন্ত্রী

এক্সক্লুসিভ

স্টাফ রিপোর্টার
৩ মে ২০১৮, বৃহস্পতিবার

সাংস্কৃতিক সংগঠক কামাল লোহানী নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের মন্ত্রিত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সড়কে মৃত্যুর মিছিলের বিপরীতে পরিবহন চালক-শ্রমিকদের ‘যথোপযুক্ত শাস্তির বিপরীতে’ মন্ত্রী অবস্থান নিয়েছেন এমন অভিযোগ করে তিনি এই প্রশ্ন তোলেন। মঙ্গলবার মে দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আরণ্যক নাট্যদলের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে কামাল লোহানী এমন মন্তব্য করেন। কামাল লোহানী বলেন, সড়কে চালকদের যোগ্যতা নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠছে, যখন মানুষ মারার অপরাধে তাদের মৃত্যুদণ্ডের দাবি উঠেছে, তখন তার বিপরীতে অবস্থান নেন মন্ত্রী শাজাহান খান। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক কামাল লোহানী নৌপরিবহন মন্ত্রীর সমালোচনায় বলেন, আজকে আমরা যখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এক বাংলাদেশ গড়ার কথা বলছি, তখন সেই বাংলার মন্ত্রিসভায় এই কুৎসিত লোকটি কি করে সদস্য হন! কামাল লোহানী বলেন, তিনি (শাহজাহান খান) একইসঙ্গে শ্রমিক আন্দোলন করছেন, আবার মন্ত্রিত্বও জাহির করছেন- এটা কি করে সম্ভব!
সামপ্রতিক কয়েকটি দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনার পর চালকদের শাস্তি নিশ্চিতের দাবি নতুন করে জোরালো হয়ে উঠলেও নৌমন্ত্রী শাজাহান খান গত রোববার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, চালকদের সাজা বাড়ালেই দুর্ঘটনা কমবে বলে তিনি মনে করেন না। ওইদিন তিনি আরো বলেন, যারা বলেন সাজা বাড়ালেই দুর্ঘটনা কমবে, আমি এই তত্ত্বের সঙ্গে, এই কথার সঙ্গে একমত না। তাহলে বাংলাদেশে কোনো খুন হতো না, খুনের সাজা হলো ফাঁসি। তারপরেও কি খুন বন্ধ হয়ে আছে?
আরণ্যক সভাপতি মামুনুর রশীদও নৌপরিবহনমন্ত্রীর সমালোচনা করেন এবং তাকে বিচারের কাঠগড়ায় তোলার দাবি জানান।
মামুনুর রশীদ বলেন, বাংলাদেশের ২ শতাংশ মানুষ ৯৮ শতাংশ রাষ্ট্রীয় সম্পদের মালিক বনে গেছে। উল্টোদিকে বাঙালির মধ্যে এখনও কর্মসংস্কৃতি আসেনি। বাঙালি সেই অলস আর কুঁড়েই থেকে গেছে।
সড়কে বিশৃঙ্খলা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নারায়ণগঞ্জের এমপি আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমানেরও সমালোচনা করেন কামাল লোহানী। তিনি বলেন, বাস চালক-শ্রমিকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে তিনি এখন সেই টাকার বলে মানুষ কিনে নিচ্ছেন। সম্প্রতি একটি পত্রিকায় সমপ্রতি শামীম ওসমানের বিষয়ে তার একটি লেখা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে জানিয়ে কামাল লোহানী বলেন, ৬২ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে দেখলাম না কোনোদিন লেখা ফিরে এসেছে। লেখা হয় ছাপা হবে, না হলে তা ডাস্টবিনে নিক্ষিপ্ত হবে। কোনোদিন ফিরে আসেনি লেখা। কামাল লোহানী বলেন, আমি সেই বহুল প্রচারিত দৈনিকের একজনকে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন, এ নিয়ে আর জিজ্ঞাসা করবেন না। অর্থের জোর বড় সাংঘাতিক। উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাবেক এই সভাপতি অভিযোগ করেন, সরকার এখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারা দিয়ে মুক্তবাক, মুক্তকণ্ঠ ‘রোধ করতে চায়’। শ্রমিক আন্দোলনে নেতৃত্বের পুুরোভাগে থাকা বিরাট হৃদয় অগ্নিগর্ভ চোখগুলো এখন বন্ধ হয়ে আসছে বলেও মন্তব্য করেন কামাল লোহানী। নাট্যকার মান্নান হীরা অভিযোগ করেন, এখনকার শ্রমিক আন্দোলনের নেতারা ‘ক্ষমতাসীনের স্তুতিতে মুখর’ থাকেন। তিনি বলেন, এদেশের যে শ্রমিক শ্রেণি রয়েছে তারা এখন মৃতপ্রায়। শ্রমিক শ্রেণির কণ্ঠে এখন অধিকার আন্দোলনের বিপরীতে শোনা যায় সরকারি প্রচারণা। আন্দোলনের ধ্বনির চেয়ে তাদের কণ্ঠে শোনা যায় শোষকের জয়গান। ট্রেড ইউনিয়নের ম্যানেজমেন্ট এখন শোষকের সঙ্গে আপস করে শ্রমিকদের অন্ধকারে রেখেছে। শ্রমিক শ্রেণির অধিকার আদায়ের সংগ্রামে সমাজের বিভিন্ন স্তরের সঙ্গে সাংস্কৃতিক কর্মীদের সমন্বয়ের পরামর্শ দেন মান্নান হীরা। এর আগে মে দিবসের আন্তর্জাতিক সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় আরণ্যকের মে দিবস উদযাপন। নাট্য নির্দেশক অভিনেতা আসাদুল ইসলাম আবৃত্তি করেন ‘তিতাস একটি লাশের নাম’ ও ‘কমান্দান্তে’ কবিতা দু’টি। পরে আরণ্যক পরিবেশন করে পথনাটক ‘অরণ্যমঙ্গল’।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর