× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, গ্রীষ্মে বর্ষার আলামত

শেষের পাতা

আব্দুল আলীম
২৫ মে ২০১৮, শুক্রবার

বর্ষা শুরুর আরো কিছুদিন বাকি। গ্রীষ্মকালের এই সময়ে সূর্যের প্রচণ্ড তাপে খাঁ খাঁ করে চারদিক। জলাধারের পানি শুকিয়ে মাটিতে ফাটল ধরে। অনেক নদীই হারায় তার স্বাভাবিক নাব্যতা। তবে এ বছরের আবহাওয়া সম্পূর্ণ বিপরীত। প্রায় দুই মাস আগে থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও বৃষ্টি হচ্ছে। সঙ্গে থাকছে বজ্রপাত।
মৌসুমের প্রায় এক মাস  আগেই প্রকৃতিতে পাওয়া যাচ্ছে গ্রীষ্মের আলামত। সারাদিন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে জনজীবনে নেমে আসছে দুর্ভোগ। কখনো বা মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টিতে ডুবে যাচ্ছে শহরাঞ্চলের রাস্তাঘাট। গ্রামাঞ্চলেও আগাম বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন কৃষকরা। আবহাওয়া ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা বলছেন- প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আবহাওয়ার স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এল নিনো-লা নিনোর প্রভাব ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অসময়ে এমন নিয়মিত বৃষ্টিপাত দেখা যাচ্ছে। সাধারণত লা নিনোর প্রভাবে ভারত বর্ষের অঞ্চলগুলোতে অসময়ে অধিক বৃষ্টিপাত, বন্যা ও ঝড়-জলোচ্ছ্বাস দেখা যায়। অন্যদিকে এল নিনোর প্রভাবে এই অঞ্চলে প্রচণ্ড খরা দেখা দেয়। এ সময় বর্ষা মৌসুমে অধিক বৃষ্টিপাতও হয়ে থাকে। তবে প্রচণ্ড খরা ভারতে হয়, বাংলাদেশে খুব একটা দেখা যায় না।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এ কে এম সাইফুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, গ্রীষ্মকালেও এখন প্রতিদিন বৃষ্টিপাত এটা আবহাওয়ার স্বাভাবিক প্রক্রিয়া নয়। আমি মনে করি দুইটি কারণে আবহাওয়ার এমন অস্বাভাবিক আচরণ হতে পারে। এর একটি হলো- প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আবহাওয়ার স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এখন লা নিনো চলছে। যদিও লা নিনো প্রায় শেষের দিকে। এটির কারণে বর্ষাকাল শুরুর এতো আগে থেকেই বৃষ্টিপাত হচ্ছে। লা নিনোর এই সময়টাতে আমাদের দেশে ঝড়-বৃষ্টি একটু বেশি হয়। আবহাওয়া অস্থির থাকে। আরেকটি কারণ হতে পারে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। স্বাভাবিক আবহাওয়ায় কয়েক বছর পর পর অতিবৃষ্টি ও বন্যা হয়। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে হয়তো এখন থেকে ঘন ঘন বন্যা হবে। আবার বর্ষাকাল শুরুর আগে চলতি বছরের মতো বৃষ্টিপাত শুরু হবে।

তবে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. আব্দুল মান্নান মানবজমিনকে বলেন, গত মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৭ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছিল। কিন্তু মে মাসে যে পরিমাণ বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা তা এখনো হয়নি। মে মাসের প্রথমার্ধে চারদিকে খাঁ খাঁ করে। দ্বিতীয়ার্ধে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। কিন্তু এবার পুরো মাস জুড়েই বৃষ্টিপাতের পরিমাণ সংখ্যাগত দিক থেকে বেশি। প্রতিদিনই দেশের কোনো না কোনো জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন অল্প অল্প করে বৃষ্টি হলেও এই মাসে যে পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ার কথা সেটা এখনো হয়নি। তবে মাসের এখনো যে কয়দিন বাকি আছে সে কয়দিনের বৃষ্টিপাত রেকর্ড করলে হয়তো ঘাটতি পূরণ হয়ে যাবে। তিনি বলেন, প্রতিদিন বৃষ্টি হচ্ছে এটা কাছাকাছি অন্যান্য কয়েক বছরের তুলনায় বৈরী। প্রকৃতপক্ষে মে মাসে এই ধরনের বৃষ্টিপাত আগেও হতো। তবে গত কয়েক বছর ধরে আবহাওয়া স্বাভাবিক আচরণ করছে না। এর কয়েকটি কারণ থাকতে পারে। তার মধ্যে অন্যতম হলো- এ বছর শীতকালে খুব বেশি বৃষ্টিপাত হয়নি। সারা দেশের গড় তাপমাত্রাও বেশি সময় ধরে খুব বেশি নিচে নামেনি। বাংলাদেশে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা একটু বেশি ছিল। আবার বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে মৌসুম শুরুর আগে থেকেও  এমন বৃষ্টি  শুরু হতে পারে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর