ভারতের অন্যতম প্রধান তদন্তকারি সংস্থা সিবিআইয়ের দুই শীর্ষ কর্তার লড়াই এমন কুৎসিত পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। সোমবারই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে সিবিআইয়ের ডিরেক্টর অলোক ভার্মা ও বিশেষ ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানাকে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে ডেকে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে আস্থানার সঙ্গে তদন্তকারি দলে কর্মরত ডেপুটি সুপার দেবেন্দ্র কুমারকে সাক্ষীর বয়ান বদলের অভিযোগে সিবিআই গ্রেপ্তার করেছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের অনুমতি ছাড়াই যেভাবে সিবিআইয়ের দু’নম্বর শীর্ষ কর্তা হিসেবে পরিচিত রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের তরফে এফআইআর করা হয়েছে তাতে ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর। প্রধানমন্ত্রীর অধীনেই সিবিআই পরিচালিত হয়। গুজরাট ক্যাডারের পুলিশ অফিসার রাকেশ আস্থানাকে মোদির আস্থাভাজন বলে মনে করা হয়। সিবিআইয়ে দুই নম্বরে রাকেশকে নিয়ে আসা নিয়ে সিবিআই ডিরেক্টর অলোক ভার্মার প্রবল আপত্তি ছিল। কিন্তু রাকেশকে সিবিআইয়ের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিয়েই নিয়ে আসা হয়েছে। অলোক ভার্মার অবসরের পর রাকেশেরই পরবর্তী ডিরেক্টর হওয়ার কথা রয়েছে।
সেই পরিকল্পনা বানচাল করতেই আস্থানার বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে বলে মনে করছেন রাকেশ-ঘনিষ্ঠ অফিসাররা।
অবশ্য রাকেশ আস্থানা বেশ কিছুদিন ধরেই ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ তুলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি ভিজিল্যান্সকে তা লিখিতভাবে জানিয়েছেন। কিন্তু ডিরেক্টর অলোক ভার্মার অভিযোগ বাঙ্গালুরুর মাংস ব্যবসায়ী মইন কুরেশির কাছ থেকে আলোক ভার্মা ২ কোটি রূপি ঘুষ নিয়েছেন। একই অভিযোগ করেছেন রাকেশ ভার্মার বিরুদ্ধে খোদ ডিরেক্টর। এই ঘুষ নেওয়া নিয়ে দেশের অন্যতম প্রধান তদন্তকারি সংস্থার দুই শীর্ষ কর্তার লড়াই শুরু হওয়ায় সংস্থার ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে সকলে অভিযোগ তুলেছেন। স্বাভাবিকভাবে এই ঘটনা প্রচারের আঙিনাতে চলে এসেছে। সোমবার কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীও এ নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। গুজরাট ক্যাডারের অফিসার রাকেশ আস্থানাকে প্রধানমন্ত্রীর প্রিয়পাত্র বলে তোপ দেগেছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে যতবেশি জল ঘোলা হবে, ততই বিপাকে পড়বে বিজেপি। নির্বাচনের মুখে সমস্যায় পড়তে হবে তাদের। এরপরেই সরকার নড়েচড়ে বসেছে।