× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সাইকেলে চেপে অর্ধেক বিশ্ব

ষোলো আনা

নীলয় বিশ্বাস নীল
২৬ অক্টোবর ২০১৮, শুক্রবার

দেশ-বিদেশ ঘুরে বেরানোর সখ অনেকেরই আছে। এজন্য চাই ওয়ালেটে টাকা ও সময়। ধরুন আপনি মাতৃভূমি থেকে কয়েক হাজার মাইল দূরে চাকরি করেন। ঘরে ফিরতে বাইসাইকেল ব্যবহার করলে কেমন হয়? শুনতে ভয়াবহ লাগলেও এই অসাধ্য কাজটি সাধন করেছেন ভারতের নাগরিক যোগেশ গুপ্তা। ৩২ বছর বয়সী ভারতীয় এই নাগরিক ভারতের মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা। দেশে পড়াশোনার পাঠ চুকিয়ে উচ্চতর শিক্ষার জন্য পাড়ি জমান লন্ডনে। সেখান থেকে চাকরি জুটিয়ে চলে যান নেদারল্যান্ডস। ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে বেশ ভালোভাবেই দিন চলছিল তার।

যোগেশ অর্ধেক বিশ্ব বাই সাইকেলে পাড়ি দেয়ার যাত্রা শুরু করেন ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে।
নেদারল্যান্ডস থেকে পর্তুগাল হয়ে ৩১ দেশ পাড়ি দিয়ে আসেন ভারতে। ২০১৮ সালের ২৬শে এপ্রিল দেশের মাটিতে পা রাখেন এই ৩২ বছর বয়সী যুবক। এই দীর্ঘ ২৪ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিতে তার লেগে গেছে প্রায় ৬শ’ দিনের উপরে।

 ‘নেদারল্যান্ডসে পাঁচ বছর কাজ করার পর কেমন যেন একটা একঘেয়েমি ভাব চলে আসে। অন্যরকম কিছু একটা করার চিন্তা মাথায় আসছিল। সেই থেকে সাইকেল নিয়ে যাত্রা শুরু করার পরিকল্পনা করি।’ বলেন যোগেশ গুপ্তা।
তিনি আরো বলেন, ‘এর আগে আমি মোটরবাইক নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলাম। অফিস থেকে ৭ মাসের বিনা বেতনে ছুটি নিয়ে বের হয়েছিলাম। সেবার নেদারল্যান্ডস থেকে মধ্য আমেরিকা হয়ে সাউথ আমেরিকায় যাত্রা শেষ করছিলাম। আইনি জটিলতা আর বাইক খারাপ হয়ে যাওয়ার কারণে সেবার আর বেশি দূরে যাওয়া হয়নি। সাউথ আমেরিকাতেই বাইকে ফেলে আবার কর্মস্থল নেদারল্যান্ডসে চলে আসি।’

‘আমার সাধারণ একটা গিয়ার সাইকেল ছিল, যদিও এটা দীর্ঘ দূরত্ব পাড়ি দেয়ার মতো নয়। আমি এটাকে আমার সাধারণ কাজেই বেশি ব্যবহার করতাম। এর আগে আমি সাইকেল নিয়ে সর্বোচ্চ ১৫ কিমি পাড়ি দিয়েছি। আপনি যদি সাইকেল নিয়ে রেসিং করতে না যান তাহলে এই ভ্রমণের জন্য আপনাকে বিশেষজ্ঞ হতে হবে না। আমার যাত্রাপথ শুরু হয়েছিল নেদারল্যান্ডস থেকে। নেদারল্যান্ডস থেকে সোজা চলে আসি পর্তুগালে। সেখান থেকে শুরু হয় মূল যাত্রা। যাত্রা পথে কোনোদিন ২শ’ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছি, আবার কোনোদিন ২০ কিলমিটারও পাড়ি দেয়া হয়নি। যাত্রাকালে অনেক ভালো মানুষের আতিথেয়তা পেয়েছি। কেউ দুপুরের খাবার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে, কেউ রাতের থাকার জায়গা দিয়েছে। বেশিরভাগ কেটেছে তাঁবু আর স্লিপিং ব্যাগে। সিংহভাগ যাত্রাপথ কেটেছে ঝামেলাবিহীন ভাবে।

দেশ থেকে ১০ কিলোমিটার দূরত্বে এসেই ঝামেলা পোহাতে হয়। পাকিস্তান থেকে ভিসা পায়নি। তাই একমাত্র উপায় ছিল তখন মিয়ানমার। যদিও মিয়ানমারে ট্রানজিটের অনুমতি ছিল না। এরপর কম্বোডিয়াতে ভিসার জন্য আবেদন করি। কিন্তু এখানে নাকি বিশেষ অনুমোদন লাগবে। এ ব্যাপারে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী আমাকে যথেষ্ট সাহায্য করেছে। এরপর কম্বোডিয়া থেকে মিয়ানমার হয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পা রাখি। যখন যাত্রা শুরু করেছিলাম তখন সবাই পাগল বলেছিল। দূরত্বের কথা জিজ্ঞেস করলে গুগুল ম্যাপ বের করে দেখিয়ে দিতাম। পরিবারের কেউই প্রথমে বুঝে উঠতে পারছিল না, আমি কি করতে যাচ্ছি। অনেক গালমন্দ শুনতে হয়েছে এ নিয়ে। যদিও এখন তারা বেশ সুখী ও আমাকে নিয়ে গর্ববোধ করে।’
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর