× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

নি র্বা চ নী হা ল চা ল, ময়মনসিংহ- ১১ / আওয়ামী লীগের ভালুকায় বিএনপির দৃষ্টি

ইলেকশন কর্নার

মতিউল আলম ও মনিরুজ্জামান খান, ময়মনসিংহ থেকে
১২ নভেম্বর ২০১৮, সোমবার

ময়মনসিংহ-১১ আসন ভালুকা উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। নির্বাচনকে সামনে রেখে এ আসনে বড় দুই দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তৎপরতা চলছে। তফসিল ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনতে ব্যস্ত। আওয়ামী লীগের আসন হিসেবে পরিচিত ভালুকায় সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকা দিন দিন বাড়ছে। অপরদিকে, বিএনপি দলীয় কোন্দল মিটিয়ে ভোটের রাজনীতিতে তারা ভালো অবস্থানে রয়েছে। তবে জাতীয় পার্টি ও জামায়াতসহ অন্যান্য দলের কোনো প্রার্থীর প্রচারণা তেমন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
এ আসনের চারবারের এমপি, সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এম. আমানউল্লাহ। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর বার্ধক্যের কারণে সাংগঠনিকভাবে অনেকটা নিষ্ক্রিয় এ সুযোগ কাজে লাগাতে চান অনেকে।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন, বর্তমান এমপি অধ্যাপক ডা. এম. আমানউল্লাহ, ভালুকা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক আলহাজ গোলাম মোস্তফা, মুক্তিযুদ্ধের কিংবদন্তি আফসার বাহিনীর প্রধান ১১নং সাব সেক্টর কমান্ডার মরহুম মেজর (অব.) আফসার উদ্দিনের পুত্র সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজিমউদ্দিন আহমেদ ধনু, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী পাপুয়া নিউগিনি শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ এমএ ওয়াহেদ, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সহ-সভাপতি আশরাফুল হক জর্জ, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ইঞ্জিনিয়ার মহিউদ্দিন, ভালুকা উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম পিন্টু, ভালুকা উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও ভাষাসৈনিক ও সাবেক এমপি মোস্তফা এমএ মতিনের মেয়ে মনিরা সুলতানা মনি, সাবেক ছাত্রনেতা ব্রিটিশ কলাম্বিয়া (কানাডা) আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক বিজ্ঞানী ড. শফিউল আজম খোকা, প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা মরহুম কেবিএম আছমত আলীর ছেলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কেবিএম হাদিউজ্জামান সেলিম, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান বিপ্লব, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আওয়ামী লীগ নেতা হাজী রফিকুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট রাখাল চন্দ্র সরকার।

স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলেছেন, বর্তমান এমপি অধ্যাপক ডা. এম আমানউল্লাহকে ভালুকাবাসী চার বার ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলেও তিনি জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেননি। এ অভিযোগ অস্বীকার করে এমপি অধ্যাপক ডা. এম আমানউল্লাহ বলেন, তিনি কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেন না, ভবিষ্যতেও দেবেন না।
তিনি বলেন, অবহেলিত ভালুকা তার সময় একটি আধুনিক ভালুকায় রূপান্তরিত হয়েছে। মনোনয়ন পেলে আগামীদিনেও বিজয়ী হবেন বলে তিনি মনে করেন।
মনোনয়ন প্রত্যাশী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা বলেন, ১৯৬৯-এর ১১ দফার আন্দোলন থেকে শুরু করে এখনও নিষ্ঠার সঙ্গে সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। গোলাম মোস্তফা জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর তার সময়ে কাঁচা রাস্তা পাকা করার পাশাপাশি বিভিন্ন মন্ত্রীর সুপারিশ নিয়ে উপজেলা পরিষদের একটি বড় ভবন ও এলাকার প্রায় সব বড় রাস্তার উন্নয়ন করা হয়েছে। মনোনয়নের ক্ষেত্রে এসব বিবেচনায় নিলে প্রার্থিতা পাওয়ার প্রত্যাশা করেন তিনি।

সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজিম উদ্দিন আহাম্মেদ ধনু, প্রয়াত পিতা, মুক্তিযোদ্ধা, ১১নং সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার, আফসার বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আফসার উদ্দিন আহাম্মেদের অবদান তুলে ধরে জনমতের বিচারে মনোনয়ন দেয়া হলে তিনি অবশ্যই মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। পিতার মতো তিনিও জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সচেতন রয়েছেন এবং দলীয় মনোনয়ন পেলে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত বলে জানান তিনি।

অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কিডনি রোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কেবিএম হাদিউজ্জামান সেলিম জানান, আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তাদের পারিবারিক ঐতিহ্য রয়েছে। ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলন করায় তার বাবা ও তৎকালীন ভালুকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চাচাকে সেনাবাহিনী ধরে নিয়ে টানা ১১ দিন নির্যাতন চালায়। ছাত্রজীবন থেকে তিনিও ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তিনি ১৯৯৭ সাল থেকে ভালুকাবাসীর সেবা করে আসছেন। মনোনয়নের ক্ষেত্রে দল এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নেবে বলে মনে করেন তিনি।
২৫ বছর ধরে জনকল্যাণমূলক কাজে নিয়োজিত ইঞ্জিনিয়ার মহিউদ্দিন আহাম্মেদ জানান, সঠিকভাবে প্রার্থী নির্বাচন করলে দল তাকেই মনোনয়ন দেবে। জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ভালুকা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম পিন্টু জানান, কাজের মূল্যায়ন করা হলে তিনি অবশ্যই মনোনয়ন পাবেন।
ময়মনসিংহের সরকারি মুমিনুন্নিসা মহিলা কলেজের সাবেক ভিপি, জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ভালুকা উপজেলা পরিষদের দুবারের নারী ভাইস চেয়ারম্যান মনিরা সুলতানা মনি জানান, পারিবারিক ঐতিহ্যকে অনুসরণ করে তিনি শিক্ষাজীবন থেকেই দলের রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত। দল অবশ্যই আমলনামা বিবেচনা করে মনোনয়ন দেবে বলে মনে করেন তিনি।
কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট শাহ মো. আশরাফুল আলম জর্জ এর আগেও মনোনয়ন চেয়েছেন, এবারও মনোনয়ন চাইবেন- নিশ্চয়ই দল তাকে মূল্যায়ন করবে। একই সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান বিপ্লব বলেন, তিনি আশাবাদী যে দল তার কর্মের মূল্যায়ন করবে।
এ আসনে বিএনপি থেকে যারা মনোনয়ন চাইবেন তারা হলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সাবেক সদস্য, ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান ভালুকা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফখরউদ্দিন আহাম্মেদ বাচ্চু, বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ ফোরামের সাবেক মহাসচিব ও ময়মনসিংহ (দক্ষিণ) জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মোর্শেদ আলম এবং জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আনোয়ার আজিজ টুটুল। উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফখর উদ্দিন আহাম্মেদ বাচ্চু বলেন, অভ্যন্তরীণ কোন্দল মিটিয়ে বিএনপি এখন ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে। তিনি বলেন, সরকারি দলের হামলা, মামলা ও নির্যাতনের পর দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। তৃণমুলে ওয়ার্ডভিত্তিক প্রতিটি দলীয় কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি। বিগত দিনে সরকারবিরোধী আন্দোলন ও সংগ্রামে পুলিশি নির্যাতনের ফলে দলের নেতাকর্মীরা আগের চেয়ে আরো ঐক্যবদ্ধ। সরকারের কর্মকাণ্ডের কারণেই দিনদিন বিএনপির সমর্থন বাড়ছে। কাজেই ২০০৮ সালের প্রেক্ষাপট আর বর্তমান প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। আগামী সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হলে ও দল তাকে মনোনয়ন দিলে তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবেন বলে আশা করেন।
অ্যাডভোকেট আনোয়ার আজিজ টুটুল বলেন, দীর্ঘ তিন দশক ধরে তিনি জেলা ও উপজেলার রাজনীতি করছেন। ভালুকায় বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমেও সম্পৃক্ত আছেন। তিনি এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ ছাড়াও জাতীয় পার্টি থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে সাবেক এমপি মেজর (অব.) আব্দুল হামিদ ও জেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল কাইয়ূম এ আসনে মনোনয়ন চাইবেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর