× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির শতবর্ষপূর্তি, শান্তির জন্য সংগ্রামের আহ্বান

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৫ বছর আগে) নভেম্বর ১২, ২০১৮, সোমবার, ৯:৪৩ পূর্বাহ্ন

বিশ্বনেতাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে শান্তির জন্য সংগ্রাম করার আহ্বান জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোন। গতকাল প্যারিসে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির শতবর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। এসময় সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানসহ অর্ধশতাধিক বিশ্ব নেতা উপস্থিত ছিলেন। তাদের উদ্দেশ্যে ম্যাক্রোন বলেন, পরস্পরকে ভয় দেখানো বাদ দিয়ে আসুন আমরা সম্ভাবনা তৈরি করি। ফরাসি মাটি থেকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের চিহ্ন মুছে যায়নি। ফ্রান্স, ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, সর্বোপরি গোটা বিশ্বের কোথাও এটা বিস্মৃত হবে না। আসুন আমরা ভুলে না গিয়ে স্মরণ করি। যারা যুদ্ধ করেছেন তাদের আদর্শ, নীতি ও দেশপ্রেমকে আমরা যেন বাদ না দেই।
ম্যাক্রোন তার বক্তৃতায় সকল দেশের সম্মিলিত প্রয়াসে বিশ্বকে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান। এসময় তিনি জাতীয়তাবাদের সংকীর্ণতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ফ্রান্স একটি উদার দেশ। এটি বিশ্বজনীন মূল্যবোধের ধারক-বাহক। যা জাতীয়তাবাদের পুরোপুরি বিপরীত। কেননা, জাতীয়তাবাদ শুধু নিজের রক্ষণাবেক্ষণের কথা বলে। ম্যাক্রোন বলেন, জাতীয়তাবাদ হলো দেশপ্রেমের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। নিজেদের স্বার্থ আগে দেখলে, অন্যদের বিষয় কে দেখবে?

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির শতবর্ষপূর্তির মূল আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে ফ্রান্সের প্যারিসে। সেখানকার আর্ক ডি ট্রায়োম্ফি স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন ৬০টিরও বেশি দেশের সরকার প্রধান। গতকাল সকাল থেকেই প্যারিসে বৃষ্টিপাত ছিল। এরই মধ্যে নির্ধারিত অনুষ্ঠান শুরু হয়। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোনের সঙ্গে একই মোটর শোভাযাত্রায় আর্ক ডি ট্রায়োম্ফি চত্বরে উপস্থিত হন বেশির ভাগ সরকার প্রধান। শোভাযাত্রায় জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল ম্যাক্রোনের ঠিক পাশেই বসা ছিলেন। পরে বিশ্ব নেতারা ছাতা মাথায় দিয়ে একইসঙ্গে হেঁটে স্মৃতিস্তম্ভের দিকে এগিয়ে যান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে হতাহতদের প্রতি তারা শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। বিশ্লেষকরা বিশ্বনেতাদের এ সমন্বিত পদযাত্রাকে বিশ্ব শান্তির প্রতি পদযাত্রা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।  

কিছুক্ষণ পরে নিজের গাড়িতে চড়ে আলাদাভাবে সেখানে উপস্থিত হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। পায়ে হেঁটে একাই এগিয়ে যান স্মৃতিস্তম্ভের দিকে। এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি সারাহ স্যান্ডার্স বলেন, নিরাপত্তা প্রটোকলের কারণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অনুষ্ঠানস্থলে আলাদাভাবে উপস্থিত হয়েছেন। কিছুক্ষণ পরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও আলাদাভাবে অনুষ্ঠানস্থলে হাজির হন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ব নেতারা আর্ক ডি ট্রায়োম্ফি চত্বরে অবস্থান করছিলেন। বিকালে ‘প্যারিস পিস ফোরাম’ নামে একটি জোটের উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। যেসব ভুলের কারণে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল, সেগুলোর যেন পুনরাবৃত্তি না হয়, সেই লক্ষ্যে এ বহুপক্ষীয় জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটবে।

বৃটিশ রানীর শ্রদ্ধা
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহতদের স্মরণে লন্ডনে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে  শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বৃটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। পরে প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’ ও বিরোধী দলীয় নেতা জেরেমি করবিনও শ্রদ্ধা জানান। এসময় বাইরে বিপুল সংখ্যক মানুষ জড়ো হয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে নিহতদের স্মরণ করেন। পরে তারা স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন। এদের মধ্যে রাজনৈতিক নেতা ও সেনা কর্মকর্তারাও ছিলেন।
 
 বৈশ্বিক সংঘাতের নিরসন চান পোপ
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির শতবর্ষ পূর্তির দিনে বৈশ্বিক সংঘাত নিরসনের দাবি জানিয়েছেন খ্রিস্টান ধর্মের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা পোপ ফ্রান্সিস। তিনি বলেন, যুদ্ধের সংস্কৃতি বন্ধ করার জন্য প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির শতবর্ষপূর্তি একটি বড় সতর্কবার্তা। মর্মান্তিক এ ঘটনায় ভুক্তভোগীদের জন্য প্রার্থনার সময় আসুন আমরা বলি, শান্তির জন্য বিনিয়োগ করুন, যুদ্ধের জন্য নয়।

উল্লেখ্য, ১৯১৪ সালের ২৮শে জুলাই ইউরোপে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়। এটা ১১ই নভেম্বর ১৯১৮ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। এটি ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাতের একটি। এর ফলে পরবর্তী সময়ে এর সঙ্গে যুক্ত দেশগুলোর রাজনীতিতে বিরাট পরিবর্তন হয়। অনেক দেশে এটা বিপ্লবেরও সূচনা করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে একপক্ষে ছিল ওসমানীয় সাম্রাজ্য, অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি, জার্মানি ও বুলগেরিয়া। যাদের বলা হয় কেন্দ্রীয় শক্তি। আর অপরপক্ষে ছিল সার্বিয়া, রাশিয়া, বৃটেন, ফ্রান্স, জাপান, ইতালি, রুমানিয়া ও আমেরিকা। এরা মিত্রশক্তি বলে পরিচিত।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর