× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের খসড়া ইশতেহারে ৫ প্রতিশ্রুতি

শেষের পাতা

কাফি কামাল
১৫ নভেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার

শান্তি ও কল্যাণকর সংসদীয় গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ রাষ্ট্র তৈরির জন্য জাতির উদ্দেশে ৫ প্রতিশ্রুতি দিতে যাচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রাথমিক খসড়ায় এসেছে এসব প্রতিশ্রুতি। ইশতেহার তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সূত্র বলেছে,  প্রস্তাবিত প্রতিশ্রুতিগুলো নিয়ে আলোচনা চলছে। বাস্তবতা বিবেচনা করে প্রয়োজনের নিরিখে কিছুটা পরিবর্তন এলেও এসব প্রতিশ্রুতি প্রাধান্য পাবে ইশতেহারে।

খসড়ায় প্রস্তাবিত প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন, বেকারত্ব নিরসন, বিচার ব্যবস্থার সংস্কার, কৃষিতে ভর্তুকি, দ্রব্যমূল্য নির্ধারণ ও শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ।

যার মধ্যে প্রথম প্রতিশ্রুতি হচ্ছে- স্থানীয় সমবায়ের মাধ্যমে কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের উৎপাদন খরচের সর্বোচ্চ দ্বিগুণ মূল্য স্থির হবে বিক্রয়মূল্য হিসেবে এবং নগরবাসী কৃষিপণ্য পাবেন উৎপাদক সমবায় সমিতির নির্ধারিত মূল্যের সর্বোচ্চ ২-৩ গুণ অধিক মূল্যে।

কৃষকের প্রতি কেজি মুলার স্থানীয় বিক্রয় দর ৫ টাকা হলে তা নগরবাসী পাবেন ১০-১৫ টাকায়।
প্রয়োজনমাফিক সকল কৃষিপণ্য উৎপাদনের জন্য ভর্তুকি দেয়া হবে। যাতে কৃষিতে কর্মসংস্থান বাড়ে এবং ভারত ও পাশের দেশগুলো থেকে কৃষিজাত পণ্যের আমদানি কমে।

দ্বিতীয় প্রতিশ্রুতি- বাজার মূল্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শ্রমিকের মজুরি নির্ধারণ হবে এবং সামরিক বাহিনীর দরে সকল শ্রমিককে রেশন দেয়া হবে। শ্রমিকরা মাসিক মাত্র ২৫০ টাকা প্রিমিয়ামে সকল স্বাস্থ্য সুরক্ষা বীমা সুবিধা পাবেন। শ্রমিকরা কেবল ওষুধের মূল্য দেবেন।

তৃতীয় প্রতিশ্রুতি- সারা দেশের জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় দ্রুত উন্নয়নের নিমিত্তে ‘১৯৮২ সালের জাতীয় ওষুধনীতির’ সুষ্ঠু প্রয়োগ হলে তিন মাসের মধ্যে সকল অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের মূল্য ন্যূনতম অর্ধেক হবে। সকল ডায়াগনস্টিক পরীক্ষার দর কমপক্ষে ৫০ ভাগ কমবে। হৃদরোগের চিকিৎসা খরচও একই হারে কমবে। প্রাথমিক অবস্থায় ঢাকা শহরে নতুন কোনো হৃদরোগের সরকারি হাসপাতাল তৈরি না করে দেশের ৮টি প্রধান শহরে হৃদরোগের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। গ্রামীণ জনসাধারণকে স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার লক্ষ্যে সকল ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ১ বছর ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে সার্বক্ষণিকভাবে অবস্থান করে একবছর প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হবে।

সকল বড় ও জেলা শহরে জেনারেল প্রাকটিশনার্স প্রথা চিকিৎসা সৃষ্টি করে দ্রুত যথাযথ চিকিৎসার জন্য রেফারেল ব্যবস্থা শুরু হবে। আইনের সংশোধন করে অঙ্গ প্রতিস্থাপন নিয়মাবলী সহজলভ্য করা হবে। বাংলাদেশের সর্বত্র ৬ মাসের মধ্যে কিডনি প্রতিস্থাপন হবে দেড় থেকে দুই লাখ টাকায়।

চতুর্থ প্রতিশ্রুতি- দুই বছরের মধ্যে দেশে ৫ লাখ গ্রাজুয়েটের কর্মসংস্থান হবে। সকল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর তিন মাস বাধ্যতামূলক সামরিক শিক্ষা দেয়া হবে দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে। বয়োবৃদ্ধরা বাস ও ট্রেনে ভ্রমণ সুবিধা পাবেন এবং শিক্ষিত বয়োবৃদ্ধদের জন্য অবৈতনিক কর্মসংস্থান হবে।

পঞ্চম প্রতিশ্রুতি- ঢাকা শহরে আর একটিও সরকারি বিল্ডিং এমনকি সরকারি হাসপাতালও নয়। দুই বছরের মধ্যে প্রশাসন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও টেক্সট বই প্রকাশনা, গণপরিবহন, নারী উন্নয়ন এবং সমাজকল্যাণ ব্যবস্থাপনা ৮টি প্রদেশ বা ১৭টি স্টেটভিত্তিক বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকবে সুপ্রিম কোর্ট, সেনাবাহিনী, পররাষ্ট্র, বৈদেশিক বাণিজ্য, বিমান ও সমুদ্রবন্দর, আন্তঃজেলা মহাসড়ক এবং ইনকাম ট্যাক্স ও শুল্ক ব্যবস্থাপনা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও নৌবাহিনীর সদরদপ্তর এবং নৌ ও বন্দর মন্ত্রণালয় চট্টগ্রামে স্থানান্তরিত হবে। আইন ও বিচার বিভাগের সংস্কার, বিচারকদের স্বচ্ছ নিয়োগ পদ্ধতি ও বিচার কাজে তাদের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ, হাইকোর্টের বিচারপতিদের বার্ষিক ছুটি ৪ সপ্তাহে সীমিতকরণ এবং সর্বোচ্চ ৫ বছরের মধ্যে মামলার রায় চূড়ান্ত করা হবে। সকল সিভিল ও ক্রিমিনাল মানহানি মামলায় বাধ্যতামূলক কোর্ট ফি নির্ধারণ, পুলিশ বা অন্যভাবে সৃষ্ট মিথ্যা মামলার জন্য ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থা এবং কেবলমাত্র অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বাসস্থানের শহরের আদালতে মানহানি মামলা করতে হবে, অন্যত্র নয়। অহেতুক মামলার জট কমানোর লক্ষ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ মানহানির মামলা করতে পারবেন না। আইনের অপপ্রয়োগ নয়, সঠিক প্রয়োগই লক্ষ্য।

খুনের মামলা ছাড়া অন্য মামলায় আসামিদের হাইকোর্টে জামিন হলে সরকার সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে অহেতুক সময় ও অর্থব্যয় করবে না। সংবিধানের সংস্কার করা হবে। গণভোট, ন্যায়পাল নিয়োগ হবে। আলাদা সাংবিধানিক কোর্ট স্থাপন করা হবে প্রত্যেক প্রদেশ বা স্টেটে। সুপ্রিম কোর্ট থাকবে কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীতে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর