× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

অভিভাবকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী / সন্তানদের সঙ্গে দূরত্ব নয় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলুন

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
৯ ডিসেম্বর ২০১৮, রবিবার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে কোনো দূরত্ব না রেখে বরং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য মায়েদের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, যাতে করে কোনো সমস্যা হলেই ছেলে-মেয়েরা তাদের নিজেদের মনের কথা মা’কে বলতে পারে। কারণ মা-বাবাই হচ্ছে সন্তানের সব থেকে বড় বন্ধু। কাজেই সেই ধরনের একটা পরিবেশ সৃষ্টির উদ্যোগ মা’কেই নিতে হবে। গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বেগম রোকেয়া দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত ‘রোকেয়া পদক-২০১৮’ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন- প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। সচিব নাসিমা বেগম এনসিডি স্বাগত বক্তৃতা করেন। এ বছর নারীর ক্ষমতায়নে আসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ দেশের বিশিষ্ট ৫ জন মহিলাকে বেগম রোকেয়া পদক-২০১৮তে ভূষিত করা হয়।
তারা হচ্ছেন- সাবেক প্রতিমন্ত্রী জেবুন্নেসা তালুকদার, কুমিল্লা মহিলা কলেজের সাবেক শিক্ষয়িত্রী অধ্যাপক জোহরা আনিস, সুনামগঞ্জের বিশিষ্ট সমাজ ও সাংস্কৃতিক কর্মী শিলা চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখিকা এবং সমাজকর্মী রমা চৌধুরী এবং ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার লেখিকা ও সমাজকর্মী রোকেয়া বেগম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পিতা-মাতাকে বিশেষ করে মায়েদের তাদের সন্তানকে বেগম রোকেয়ার আদর্শে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমরা চাই আমাদের নারীরা সুশিক্ষিত হবে এবং নিজের সন্তানকে উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস এবং মাদক থেকে ছেলে-মেয়েরা যেন দূরে থাকে সেজন্য মায়েদের বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বেগম রোকেয়াকে নারী জাগরণের অগ্রদূত এবং সত্যিকারের প্রগতিশীল ব্যক্তিত্ব আখ্যায়িত করে বলেন, বেগম রোকেয়া আমাদের যে শিক্ষা দিয়ে গেছেন এবং তাঁর যে স্বপ্ন ছিল আজকে কিন্তু পৃথিবী সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশকে এইদিকে আমরা অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছি। নারীদের জন্য তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার মাতৃত্বকালীন ছুটির মেয়াদ ৬ মাসে বর্ধিত করেছে, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নারী আসন এক-তৃতীয়াংশে উন্নীত করা হয়েছে, জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্যের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করে ৫০ করা, মহিলা উদ্যোক্তাদের কম সুদে ঋণ, ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে আড়াই লাখ ল্যাকটেটিং মা ও ৭ লাখ গর্ভবতী দরিদ্র মায়ের ভাতার পরিমাণ ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৮০০ টাকা করা হয়েছে।

ন্যাশনাল হেল্পলাইন সেন্টার ১০৯ চালু, ৩ দফা বাড়িয়ে পোশাক শ্রমিকদের বেতন ৮ হাজার টাকায় উন্নীত করা, কর্মজীবী মহিলাদের জন্য হোস্টেল নির্মাণ এবং ৪ হাজার ৮৮৩টি কিশোর-কিশোরী ক্লাব স্থাপনের মধ্য দিয়ে কিশোর-কিশোরীকে বিভিন্ন সৃজনশীল, গঠনমূলক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের প্রশিক্ষণ প্রদানের উদ্যোগও তুলে ধরেন তিনি। দেশের ২ কোটি ৪০ লাখ ছেলে-মেয়েকে বৃত্তি এবং উপ-বৃত্তি দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব বৃত্তি-উপ-বৃত্তির শতকরা ৭৫ শতাংশই নারীরা পাচ্ছে। প্রতিমাসের শুরুতে ১ কোটি ৩০ লাখ মায়ের কাছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাঁর সন্তানের বৃত্তির টাকা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও শতকরা ৬০ ভাগ নিয়োগ নারীদের মধ্য থেকেই করা হচ্ছে। আজ বাংলাদেশে রাজনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, আইন প্রণয়ন, নীতি-নির্ধারণ, প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চপর্যায়, অর্থনীতি, সাংবাদিকতা, ক্রীড়া, তথ্য-প্রযুক্তি, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং খেলাধুলাসহ পেশাভিত্তিক সকল স্তরে নারীদের গর্বিত পদচারণা রয়েছে।

এভারেস্ট বিজয় থেকে শুরু করে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের কর্মকাণ্ডে নারীরা সাফল্যের সঙ্গে ভূমিকা রাখছেন। নারীর ক্ষমতায়নের চিত্র তুলে ধরতে তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদেশের প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, বিরোধী দলের নেতা এবং সংসদ উপনেতা এই চারটি পদেই নারীরা আসীন, যার নজির বিশ্বে বিরল। প্রধানমন্ত্রী এ সময় জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১, নারী উন্নয়নে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা ২০১৩-২০২৫, পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন-২০১০ এবং এই সংক্রান্ত বিধিমালা-২০১৩ প্রণয়ন এবং নারীদের সুরক্ষা প্রদানে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন। পুরস্কারপ্রাপ্তদের সাবেক প্রতিমন্ত্রী জেবুন্নেসা তালুকদার অনুষ্ঠানে পদক বিজয়ীদের পক্ষে নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, আজকে যতটুকু আমরা এগুতে পেরেছি তার পথ দেখিয়েছেন বেগম রোকেয়া। কারণ, তিনি নারী সমাজকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছিলেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর