পশ্চিমবঙ্গে রথযাত্রার কথা, গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা করার জন্য রাজ্য সরকারের অনুমতি না পেয়ে বারে বারে আদালতে গিয়েও অনুমতি আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি। মঙ্গলবার শুনানীর শেষে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে এখনই রথযাত্রা করতে পারবে না বিজেপি। আদালতের পর্যবেক্ষণ, রথযাত্রার জন্য আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়া নিয়ে রাজ্য সরকারের উদ্বেগ অযাচিত নয়। বিজেপিকে রাজ্যের কাছে রথযাত্রার অনুমতি চেয়ে নতুন করে আবেদন করতে হবে। রথযাত্রা নিয়ে টানাপড়েন চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এর আগে সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে বিজেপি জানিয়েছিল, রথযাত্রার ৪০ দিনের সূচি ছোট করে ২০ দিন করতে চায় দল। পরিবর্তিত সূচিতে তারা তিনটির বদলে ৪টি রথযাত্রা বার করতে চেয়েছিল। হলদিয়া শহর থেকে চতুর্থ যাত্রা করার পরিকল্পনাও করে ফেলেছিল রাজ্য বিজেপি।
এর আগে কলকাতা হাইকোটের সিঙ্গল বেঞ্চ ও ডিভিশন বেঞ্চ রথযাত্রার অনুমতি দিতে রাজি হয়নি। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টর দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ কমিটির নেতারা। রাজ্য সরকারের পক্ষে আদালতে ৩১টি গোয়েন্দা রিপোর্ট পেশ করে রথযাত্রা হলে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে বিচারপতি এল এন রাও এবং এস কে কৌলের বেঞ্চ রথযাত্রার অনুমতি দিতে অস্বীকার করেছে। তবে বেঞ্চ রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, বিজেপি যাতে নিরাপদে পশ্চিমবঙ্গে মিছিল এবং সমাবেশ করতে পারে সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখতে। এছাড়া বিজেপি যখন ফের রথযাত্রার আবেদন করবে, তখন যেন সংবিধানে উল্লিখিত ভাষা এবং অভিব্যক্তি বয়ানের মৌলিক অধিকারের কথা মাথায় রেখে অনুমতি দেয় রাজ্য, সেই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তৃণমূল কংগ্রেস এদিনের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে। তবে বিজেপির রাজ্য নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার জানিয়েছেন, গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা আপাতত আটকে গেল ঠিকই, কিন্তু আমাদের রাজনৈতিক যাত্রা কোনও ভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। সুপ্রিম কোর্ট আমাদের ‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’-র বিশদ পরিকল্পনা নতুন করে বানিয়ে ফের প্রশাসনের কাছে জমা দিয়ে অনুমতি চাইতে বলেছে। কিন্তু আমাদের কোনও সভা বা মিছিলকে কোনও ভাবে আটকানো যাবে না, তাও জানিয়ে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তাই রাজ্যে ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রের প্রতিটিতে আলাদা আলাদা করে সভা করার যে পরিকল্পনা ছিল, তা নির্দিষ্ট কর্মসূচি মেনেই হবে।