তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে দুর্র্র্বৃত্তরা হত্যা করলো শিশু জুবায়েতকে। শিশুর বাড়ির পাশে লেবু বাগান থেকে গতকাল ভোরে কয়েক টুকরো মাংস, হাড় ও মাথা উদ্ধার করে র্যাব। শিয়াল-কুকুর খেয়ে ফেলেছে শিশু জুবায়েতের দেহ। এ ঘটনায় র্যাবের টিম হত্যাকারী মো. মহিদুল হক ও উজ্জ্বল মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় মহিদুলের স্ত্রী সাগরিকা বেগমকে।
র্যাব-৪ এর উপ-অধিনায়ক মেজর আব্দুল হাকিম জানান, গত ১৭ই জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে খেলনা বারুদ কিনে দেয়ার নাম করে জুবায়েতকে অপহরণ করা হয়। ওইদিনই তাকে আজিজের লেবু বাগানে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর ফেলে রাখা হয় লেবু বাগানে। পর দিন শুক্রবার সকাল সাড়ে সাতটায় এক নারী তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ১২ ঘণ্টার মধ্যে সাভারে মুক্তিপণ নিয়ে যেতে বলে।
অপহরণকারীদের কথামতো টাকা নিয়ে গেলে তারা বিভিন্ন সময় স্থান পরিবর্তন করে। শনিবার রাতে মহিদুলকে কালিয়াকৈর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মহিদুলের দেয়া তথ্যমতে আরেক আসামি উজ্জ্বলকে রোববার সকালে জালশুকা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামি মহিদুল ও উজ্জ্বল মিয়া ৩ লাখ টাকার জন্য শিশুটিকে হত্যা করে বলে স্বীকার করে র্যাবের কাছে। এদিকে মহিদুলের স্ত্রী সাগরিকা বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের হেফাজতে নিয়েছে র্যাব।
র্যাব-৪ এর কোম্পানি অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আতিকুল হক জানান, শিশু জুবায়েতের লাশ উদ্ধার করার জন্য আসামিদের ঘটনাস্থলে নেয়া হয়। সেখানে গিয়ে দেখা যায় জুনায়েতের লাশের শরীরের কয়েকটি খণ্ড ও মাথা এবং জামা-কাপড় পড়ে আছে। স্থানীয়রা জানায়, শিয়াল- কুকুরে লাশ খেয়ে ফেলেছে। পুলিশ লাশের মাথা ও কয়েকটি খণ্ড উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য ঢাকায় পাঠাবে বলে জানায়।
জুবায়েতের বাবা মো. সামছুল হক জানান, গত ২রা জানুয়ারি জালশুকা নাছুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছেলেকে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি করেন। দুই সপ্তাহ আগে ছেলের সুন্নাতে খৎনা করায়। এখনো তার ঘা শুকায়নি। ঘা নিয়ে সে স্কুলে যেত। ওইদিন সে স্কুল থেকে আসার পর প্রতিবেশী মহিদুল খেলনা বন্দুকের বারুদ কিনে দেয়ার নাম করে জুবায়েতকে নিয়ে যায়। এরপর আজিজের লেবু বাগানে নিয়ে হত্যা করে। পরের দিন ৩ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। অপহরণকারীর কথামতো ৩ লাখ টাকা নিয়ে সাভারে গেলে টাকা নিতে আসেনি তারা। গত বৃহস্পতিবার ছেলেকে হত্যা করে মুক্তিপণ দাবি করে বলে জানান।
সাটুরিয়া থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, গত শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ছেলের চাচা মোকলেছুর রহমান। ওইদিনই এসআই সামছুল আলম বিষয়টি অনুসন্ধান করেন। পরে র্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে।