× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মমতা তুলে নিলেন ধরনা, শিলংয়ে সিবিআই জেরা করবে রাজীব কুমারকে

শেষের পাতা

কলকাতা প্রতিনিধি
৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, বুধবার

রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে গোটা দেশের নজর ছিল সুপ্রিম কোর্টের দিকে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ জানার পর আলোচনা শুরু হয়েছে কার জয় হয়েছে। এরই মধ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, তিনি ধরনা তুলে নিচ্ছেন। এদিন সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ তেলেগু দেশম নেতা চন্দ্রবাবু নাইডু এবং আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠক শেষে তিনদিনের ধরনা তুলে নেয়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি। তিনি বলেন, এই ধরনায় গণতন্ত্রের জয় হয়েছে। তবে, তিনি ঘোষণা করেন এরপর ১৩ ও ১৪ই ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে ধরনা হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আদালতের রায়ে আমাদের জয় হয়েছে। আদালত রাজীব কুমারের গ্রেপ্তারির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, তার নৈতিক জয় হয়েছে।
অন্যদিকে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ দাবি করেছেন, জয় হয়েছে সিবিআইয়ের। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, রাজীব কুমারকে জেরা করা যাবে বলে দেয়া নির্দেশের ফলে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বড় ধাক্কা খেয়েছে। প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চ মঙ্গলবার জানিয়ে দিয়েছে, কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হতেই হবে। তবে তাকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। নির্দেশে বলা হয়েছে, রাজীব কুমারকে সিবিআই নিরপেক্ষ জায়গা হিসেবে মেঘালয়ের রাজধানী শিলংয়ে সিবিআই দপ্তরে জেরা করবে। ১৮ই ফেব্রুয়ারির মধ্যে হবে এই জেরা। আদালতের এই নির্দেশ ঘোষণার পর পরই রাজীব কুমার হাজির হয়েছিলেন মমতার ধরনা মঞ্চে। সেখানে তিনি মমতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন পরবর্তী রণকৌশল নিয়ে।

জানা গেছে, এদিনই রাজীব কুমার সিবিআইকে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। সেই চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, আগামী ৮ই ফেব্রুয়ারি সিবিআই চাইলে তিনি হাজিরা দিতে পারবেন। আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পরই রাজীব কুমারকে জেরার জন্য সিবিআই বিশেষ দল গঠনের তৎপরতা শুরু করেছে। সোমবারই  সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে সিবিআই। তদন্তে বাধা দেয়া ও তথ্য লোপাটের চেষ্টা এবং আদালত অবমাননার দুটি আবেদন জানিয়েছে সিবিআই। একই সঙ্গে সিবিআই-এর আর্জি ছিল, সুপ্রিম কোর্ট রাজীব কুমারকে আত্মসমর্পণ করতে বা সিবিআইয়ের সামনে হাজির হতে নির্দেশ দেয়া হোক। অন্য দিকে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যে তদন্ত হচ্ছে, তাতে রাজ্য প্রশাসন বাধা দিচ্ছে বলে আদালত অবমাননার মামলা হোক। মঙ্গলবার সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে একটি হলফনামাও জমা দেয়া হয়েছে। এই হলফনামায় তথ্য লোপাট ও বিকৃত করার অভিযোগ করা হয়েছে।

এদিকে, সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবার কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার, রাজ্যের মুখ্য সচিব মলয় দে এবং রাজ্যের ডিজিপি বীরেন্দ্রকে নোটিশ পাঠিয়েছে। নোটিশের জবাব পাওয়ার পরই শীর্ষ আদালত ঠিক করবে, তাদের আদালতে হাজিরা দিতে বলা হবে কি না। আগামী ২০শে ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি। আগামী ২০শে ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানি হবে বলে জানানো হয়েছে।  আদালতের নির্দেশ জানার পর কলকাতায় ধরনা মঞ্চে দাঁড়িয়ে মমতা প্রথমে বিরক্তি প্রকাশ করেন। পরে অবশ্য সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, ?এটা আমাদের নৈতিক জয়। এটা মানুষের জয়। আইনের জয়। তিনি বলেছেন, ?আমাদের মামলা জোরালো। আমরা কখনোই বলিনি অসহযোগিতা করব। আমরা তদন্তকারীদের পূর্ণ সহযোগিতার পক্ষে। আমরা কোনো সিবিআই অফিসারের বিরুদ্ধে নই। কিন্তু এটা যা হয়েছে তা কেন্দ্রের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। আমি শুধু রাজীব কুমারের জন্য ধরনা দিচ্ছি না। দেশের সব অফিসারের জন্য দিচ্ছি। এই জয় সংবিধানের। এই জয় সারা দেশের, দেশবাসীর, সংবিধান বাঁচাও আন্দোলনের। বেআইনি অর্থলগ্নী সংস্থার তদন্তে ‘সহযোগিতা’ না করার অভিযোগ নিয়ে সিবিআই অফিসারেরা রোববার সন্ধ্যায় কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বাড়িতে হানা দেয়া থেকেই কেন্দ্র ও রাজ্যের সংঘাতের সূত্রপাত।

এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী দেশ ও সংবিধান বাঁচানোর জন্য ধর্মতলায় ধরনায় বসেছেন। তার এই আন্দোলনে সমর্থন জানিয়েছেন দেশের সব বিরোধী নেতা। ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রীয় জনতা পার্টির নেতা তেজস্বী যাদব এবং ডিএমকে নেত্রী কানিমোঝি কলকাতায় এসে মমতার ধরনা মঞ্চে গিয়ে দেখা করে সংহতি জানিয়েছেন। মঙ্গলবার অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুও ধরনা মঞ্চে এসেছিলেন। আদালত জেরার পক্ষে রায় দেয়ার পরও পাল্টাপাল্টি আক্রমণ চলছে। এদিনই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে রাজ্য সরকারকে চিঠি লিখে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে সর্বভারতীয় সার্ভিস রুল ভাঙার অভিযোগ তুলে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একজন আইপিএস অফিসার হওয়া সত্ত্বেও রাজীব কুমার মমতার ধরনায় উপস্থিত ছিলেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর