জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশি কূটনীতিকদের ব্যর্থতায় একাত্তরে ২৫শে মার্চের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘একাত্তরের ২৫ মার্চের গণহত্যা ও আমাদের ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠন আয়োজিত এই সেমিনারে মন্ত্রী বলেন, আমাদের মুখ্য সুযোগ ছিল ২০১৫ সালে। ওই সময় জাতিসংঘ যখন আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়, তখন দেশের কূটনীতিকেরা ২৫ মার্চের গণহত্যার প্রেক্ষাপট সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারেননি।
তিনি বলেন, ২৫ মার্চের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়া খুব সহজ হবে না। একাত্তরে পাকিস্তানকে সহযোগিতা, সমর্থন জানিয়ে আসা আমেরিকা, চীন ও ইসলামিক উম্মাহর দেশগুলোর অমানবিক চেহারা যে তাহলে প্রকাশ হয়ে যাবে। তবে সরকার এখন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ২৫ মার্চের গণহত্যা বিষয়ে সারা বিশ্বে জনমত গঠনে কাজ করছে।
মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, এ দেশে যারা স্বাধীনতা প্রিয় এবং স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাস করেন, তাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানিরা যে পৈশাচিক, অমানবিক হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল, সেই দিনটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গণহত্যার স্বীকৃতি দেওয়ার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই কাজটি করেছেন। শুধু তাই নয়, দিবসটিকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে কীভাবে স্বীকৃতি পাওয়ানো যায়, সে বিষয়ে আন্তর্জাতিক মহলে কথা বলার ব্যাপারে জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
আমরা ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করছি। আশা করি, অতি দ্রুত এটি বাস্তবায়ন করা হবে।
‘সম্প্রীতি বাংলাদেশের’ আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে এ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন নুজহাত চৌধুরী। সেমিনারে মুক্তিযোদ্ধা (বীরপ্রতীক) ওয়াকার হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অসীম সরকার, সাবেক তথ্য ও সংস্কৃতি সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।