× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শোক

বিনোদন


২৫ মার্চ ২০১৯, সোমবার

গাজী মাজহারুল আনোয়ার
মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সূচনা হয়েছিলো ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গানটির মধ্যদিয়ে। এই গানের গীতিকার আমি, প্রথম সুরকার ছিলেন আনোয়ার পারভেজ- শাহনাজের বড় ভাই। মূল শিল্পী ছিলেন আব্দুল জব্বার ও শাহনাজ। পরবর্তীতে সুরকার হিসেবে আনোয়ার পারভেজের উদ্যোগে আলতাফ মাহমুদ, আলাউদ্দিন আলীও সম্পৃক্ত হয়েছিলেন। তো, সেই ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গানের শিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহ চলে গেলেন। তাকে আমি খুব কাছে থেকে চিনি ও জানি। দোয়া করি আল্লাহ যেন তার আত্মাকে শান্তি দেন, তাকে  বেহেশতবাসী করেন।

শবনম  
আমার স্বামী রবিন ঘোষ একজন সংগীত পরিচালক ছিলেন। তার সুর সংগীতে শাহনাজ অনেক সিনেমাতে গান গেয়েছে।
রবিন যখন চলে যায় তখন শাহনাজই আমাকে বেশি সান্ত্বনা দিয়েছিল। সেই শাহনাজই এখন আমাকে ছেড়ে চলে গেল। আমি কতটা যে কষ্ট পেয়েছি তা বলে বুঝাতে পারবো না। আমার এখনো বিশ্বাসই হচ্ছে না যে, শাহনাজ নেই। তাকে নিয়ে রবিন একটি কথা প্রায়ই বলতো, শাহনাজের মতো সংগীতশিল্পী এই পৃথিবীতে আর দ্বিতীয়টি জন্মাবে না।

খুরশিদ আলম
শাহনাজ রহমতুল্লাহ শিল্পীর পাশাপাশি একজন অসাধারণ মানুষ ছিলেন। খুব সহজেই মানুষকে আপন করে নিতেন। মানুষকে বিশ্বাস করতেন। তার দুই ভাই আনোয়ার পারভেজ ও জাফর ইকবাল কেউ নেই। সেই চলে যাওয়ার পথে আজ তিনিও চলে গেলেন। আমরা সব সময় আমাদের লিজেন্ডদের গান সংরক্ষণের কথা বলে আসছি। আবদুল আলিম, আইয়ুব বাচ্চুসহ অনেকের গান সংরক্ষণের কথা বলেছি। কিন্তু কিছুই হচ্ছে না। এরপরেও আমি বলবো শাহনাজ রহমতুল্লার গানগুলো বিশেষ ভাবে রাখা প্রয়োজন।  

রুনা লায়লা  
শাহনাজের হঠাৎ চলে যাওয়ার খবরটা শুনে আমি ভীষণ আপসেট হয়ে পড়েছি। কত বছর ধরে শাহনাজকে চিনি, জানি। তার সঙ্গে কত যে স্মৃতি, এর কোনো হিসাব নেই। খবরটা শুনে আমি কোনোভাবেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। গত বছর একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে আমার শেষ দেখা হয়েছে। শাহনাজের চলে যাওয়ায় যে অপূরণীয় ক্ষতি হলো তাতে সত্যিই আমি ভাষাহীন হয়ে পড়েছি। দোয়া করি আল্লাহ যেন তাকে বেহেশত নসিব করেন।

আলম খান  
শাহনাজের বড় ভাই সংগীত পরিচালক আনোয়ার পারভেজ আমার ঘনিষ্ঠ একজন বন্ধু ছিল। যে কারণে তাদের বাসায় আমার নিয়মিত যাওয়া-আসা ছিল। কিন্তু আমার সুর-সংগীতে শাহনাজ কোনো গানে কণ্ঠ দেয়নি। এটা যখন আজ বসে বসে ভাবছিলাম তখন নিজেই অবাক হলাম। কী অপূর্ব কণ্ঠ ছিল তার। দেশের গান, আধুনিক গান, গজলে তার অসাধারণ গায়কীতে মুগ্ধ হয়েছে এদেশের গানপ্রেমী মানুষেরা। একজন সত্যিকারের সংগীতশিল্পীর যেমন ভদ্র হওয়া উচিত শাহনাজ ঠিক তেমনি ছিল। শাহনাজ শতভাগ সফল একজন সিংগীতশিল্পী ছিলেন। তারমধ্যে কোনো অহংকার ছিল না, এটাই ছিল তার বড় গুণ। দোয়া করি মহান আল্লাহ যেন তাকে বেহেশত নসিব করেন।

শহীদুল্লাহ ফরায়জী
শাহনাজ রহমতুল্লাহর কোনো গান ফ্লপ নেই। বিশেষ করে দেশের গানে তাকে ‘আনবিটেন’ বলা হয়। অনেক শিল্পীর কিছু গান ফ্লপ হয়। কিন্তু শাহনাজ রহমতুল্লাহর ক্যারিয়ারে এটা নেই। দেশের গান, সিনেমার গান, আধুনিক গান- সবখানেই এ শিল্পী ছিলেন সফল। একাধিক ভাষায় গাইতে পারতেন তিনি। ছিলেন বাঙালির গর্ব। যতদিন আমরা বেঁচে থাকবো, আমাদের পরের প্রজন্ম ও বাংলা ভাষাভাষির অনুভূতি যতদিন থাকবে ততদিন শাহনাজ রহমতুল্লাহ বেঁচে থাকবেন। 

ফরিদ আহমেদ
আমি যখন পেশাগতভাবে ব্যস্ত হয়ে উঠেছি তখন শাহনাজ আপা গান গাওয়াই ছেড়ে দিয়েছেন। তাই তাকে দিয়ে গান করানোর সৌভাগ্য আমার হয়ে ওঠেনি। এমন সৌভাগ্য থেকে কোনো সংগীত পরিচালকই দূরে থাকতে চান না। কিন্তু আমাকে আপার চলে যাওয়ার মধ্যদিয়ে সারা জীবন দূরেই থাকতে হবে। এই কষ্টটা আসলে মেনে নেয়ার মতো নয়। দোয়া করি আল্লাহ যেন তাকে বেহেশতবাসী করেন, আমিন।

কুমার বিশ্বজিৎ  
আদর, শাসন এবং দুঃখ-কষ্টে মানসিক শক্তির আশ্রয়টুকু হারালাম। আমি দোয়া করি শাহনাজ রহমতুল্লাহকে যেন আল্লাহ বেহেশত নসিব করেন। তিনি এমনই একজন শিল্পী ছিলেন যার কণ্ঠের মডিউলিশন, ব্রেথ কন্ট্রোল, থ্রোয়িং, এক্সপ্রেশন বাংলাদেশের আর কোনো শিল্পীর মধ্যে নেই। তার এসব বিষয় এবং তার আদর্শকে ফলো করলেই শিল্পী হওয়া যেতে পারে। আমার মনে হয় বাংলাদেশের সব শিল্পীর প্রিয়শিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহ।

সামিনা চৌধুরী
আমি শাহনাজ রহমতুল্লাহকে চাচী বলে ডাকি। তিনি বাংলাদেশের অনেক বড় সম্পদ। তার জীবনযাত্রা অনেক সুন্দর ছিল। তিনি ধর্ম-কর্ম সবকিছু অনেক সুন্দর ভাবে আদায় করতেন। পাড়া-পড়শিদের সঙ্গে তার ছিল দারুণ সু-সম্পর্ক। তিনি এত বড় একজন শিল্পী হয়েও কোনো দাম্ভিকতা প্রকাশ করতেন না। তার মধ্যে কোনো রাগ-ক্ষোভ থাকতো না। আমাদের তিনি যেভাবে আদর-স্নেহ করতেন কখনো ভুলতে পারবো না। ছোটবেলা থেকে আমি তার গান করছি। আগামীতেও চাচীর গান করবো।

তারিন  
শ্রদ্ধেয় শাহনাজ রহমতুল্লাহর হঠাৎ এভাবে চলে যাওয়াটা আমাদের জন্য সত্যিই অনেক কষ্টের। কয়েক বছর আগে একটি গানের প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানে তার সঙ্গে আমার দেখা হয়। সেখানে দীর্ঘদিন পর তার সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করি। তারপর ২০১৭ সালের একদিন তিনি আমাকে তার সঙ্গে মধ্যাহ্ন ভোজে অংশগ্রহণের জন্য নিমন্ত্রণ করলেন। আমি তার বাসায় গেলাম। তিনি আমাকে পাশে বসিয়ে তার গান শোনালেন। আমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনলাম। আমি নিজ হাতে তাকে খাইয়ে দিলাম। সবশেষে তিনি আমাকে পার্লের একটি মালা উপহার দিলেন। আল্লাহ যেন শাহনাজ আপাকে বেহেশত নসিব করেন- এই দোয়াই করি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর