আসন্ন লোকসভা নির্বাচন বর্জন করার হুমকি দিয়েছে কাশ্মিরের শিখ সম্প্রদায়। তাদের অভিযোগ, সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে সরকার তাদের প্রতি ঔদাসিন। তাদের কোনো দাবি মেনে নেয়া হচ্ছে না। এ কারণে তারা লোকসভা নির্বাচনে ভোট দেবেন না। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইকোনমিক টাইমস।
শিখ নেতারা বলছেন, মাইনরিটি কমিউনিটি অ্যাক্টকে বর্ধিত করার যে দাবি তারা করছেন রাজ্যের কাছে, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার অথবা রাজ্য সরকার কোনো দৃষ্টিই দিচ্ছে না। তাদের সেসব দাবির কাছ থেকে তারা সরে রয়েছে। একই অবস্থা হয়েছে স্কুল কলেজে পাঞ্জাবি ভাষার প্রচলনের দাবির ক্ষেত্রেও।
অল পার্টিস শিখ সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান জগমোহন সিং রাইনা বলেছেন, আমাদের সম্প্রদায় বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। এক্ষেত্রে শিখ সম্প্রদায়ের কোনো অন্যায় নেই। তাই এর প্রতিবাদে আমরা লোকসভা নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই নীরব প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে আমাদের ক্ষোভ জানাতে চাই। জানাতে চাই আমাদের সঙ্গে ভাল আচরণ করা হয় নি।
তিনি আরো বলেন, পর্যায়ক্রমে যেসব সরকার ক্ষমতায় এসেছে তারাই মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সব সময়। আর এই সম্প্রদায়কে ফাঁদে ফেলেছে। তিনি জানান, রাজ্যে ৩ লাখ ২০ হাজার শিখ আছেন। তার মধ্যে কাশ্মিরেই আছেন প্রায় ৮০ হাজার। কাশ্মিরের দক্ষিণে ট্রাল, শ্রীনগরের আমিরা কাদাল ও বাটামালু, উত্তর কাশ্মিরের বড়মুল্লাহ এলাকায় তাদের উপস্থিতি বেশি। তবে এ এলাকার যারা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন বা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন, তারা সেটা করেছেন যার যার ব্যক্তিগত উদ্যোগে। তাদের এ কর্মকান্ডকে পুরো শিখ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব হিসেবে দেখা উচিত হবে না।
তিনি বলেন, ক্ষমতার কাঠামোতে আমাদের কোনোই প্রতিনিধিত্ব নেই। আমাদেরকে সংখ্যালঘু অভিবাসী নন এমন ক্যাটেগরিতে কিছু কাজ দেয়া হয়েছে। কিন্তু তা কেড়ে নেয়া হয়েছে অন্য সম্প্রদায়ের মাধ্যমে পিডিপি সরকারের সহায়তায়। এমন অভিযোগ করেছেন ইউনাইটেড শিখ ফোরামের মনমিট সিং।
তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ থেকে আসি নি। আমরা রাজ্যেরই। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে আমাদের সুবিধা কি হবে, যখন আমাদের সমস্যার কথা মাথায়ই আসে না তাদের? তিনি অভিযোগ করেন, সরকারের কারণে কাশ্মির উপত্যকার শিখ যুব সম্প্রদায় ভুগছে। রাজনৈতিক দলগুলো তাদেরকে শুধু ব্যবহার করছে। কখনো এ সম্প্রদায়ের উদ্বেগের বিষয়ে মাথাই ঘামায় না তারা। এ বিষয়ে তারা খুব শিগগিরই সংবাদ সম্মেলন করবেন বলে জানান তিনি।
বড়মুল্লাহর শিখ প্রতিনিধি জনক সিং সোধি সম্প্রতি পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি ত্যাগ করে যোগ দিয়েছেন ন্যাশনাল কনফারেন্সে। তিনি বলেছেন, যদি তারা (শিখরা) নির্বাচন থেকে দূরে থাকতে চায় তাহলে নেতৃত্ব সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পদক্ষেপ নেবে বলে তিনি আশা করেন। তিনি বলেন, আমরা যদি নির্বাচন বর্জন করি তাহলে আমাদের স্থান দখল করবে হুরিয়াত। আমরা জানি আমাদেরকে ঠকিয়েছেন মেহবুবা মুফতি, ফারুক আবদুল্লাহ নন। তারপরও যদি আমার সম্প্রদায় নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে আমি তাদেরকে সমর্থন করবো। তবে মুষ্টিমেয় কয়েকজনের জন্য এমনটি হবে না।