‘আগ্রহ’। শৈশব থেকেই ইচ্ছা অসহায় নারীর পাশে দাঁড়ানোর। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করার। এই আগ্রহ তাকে প্রবলভাবে ভাবিয়ে তুলেছিল। শেষমেশ আগ্রহকেই বেছে নিলেন নাম হিসেবে। ‘আগ্রহ’ নামের সংস্থা নিয়ে মাঠে নামলেন। তার নাম ডালিয়া রহমান। তার এই ‘আগ্রহ’ নামের প্রতিষ্ঠানে দেয়া হয় নারী এবং প্রতিবন্ধীদের দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ।
যা থেকে তারা হতে পারেন স্বাবলম্বী। এছাড়াও তিনি কাজ করছেন পানি উন্নয়নের জন্য। শিল্পায়নের প্রভাবে রাজধানীর নদীগুলো মৃতপ্রায়। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য তিনি ড্রিপ বাই ড্রিপ নামে জার্মান এক প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে টেকসই পানি বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্ট (ইটিপি) নিয়ে কাজ শুরু করেছেন।
ডালিয়া রহমান আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ (এআইইউবি) থেকে অর্থনীতিতে করেছেন স্নাতক। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি থেকে উন্নয়ন অধ্যয়ন নিয়ে করেছেন স্নাতকোত্তর। ঢাকা শহরের সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালসমূহের সেবার মান নিয়ে একটি তুলনামূলক গবেষণাও প্রকাশ করেন তিনি। যেটি প্রকাশিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তিনি গত বছরের সেপ্টেম্বরে ওয়াশিংটনে অবস্থিত বিশ্বব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) আয়োজিত আন্তর্জাতিক বাজেট নীতিমালা বিষয়ক এক সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন। এ বছর তিনি ইমপ্রুভিং ওয়াটার সিকিউরিটি ফর দ্যা পুওর প্রকল্পের গবেষক হিসাবে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত ‘পানি নিরাপত্তা ও দারিদ্র্য’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক এক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।
গ্রামীণ নারীরা তাদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সমস্যা লুকিয়ে রাখেন। কারণ নারী ডাক্তার না থাকার কারণে তারা পুরুষ ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে লজ্জা পান। এই সমস্যা সমাধানে এবং গ্রামীণ নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্যের মানোন্নয়নে তাদের উপযোগী করে স্বাস্থ্যসেবা শুরু করেছেন। যাতে করে সেবা তাদের দোরগোড়ায় পৌঁছে যায়।
ডালিয়া রহমান স্বপ্ন দেখেন, চা শ্রমিকদের ঔপনিবেশিক ধারার শোষণ এবং বঞ্চনা থেকে বের করে এনে স্বাভাবিক জীবন-যাপনে অভ্যস্ত করতে। তিনি অবহেলিত হাওড় অঞ্চল, উপকূলীয় এলাকা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, পাহাড়ি জনপদের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে ব্যাপক পরিসরে কাজ করতে চান। তিনি বিশ্বাস করেন প্রতিটি মানুষের মধ্যে যে সুপ্ত প্রতিভা এবং অপার সম্ভাবনা আছে তাকে কাজে লাগালে বাংলাদেশ খুব শিগগিরই বিশ্ব ব্যবস্থায় মর্যাদার আসনে সমাসীন হবে।