× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার হস্তক্ষেপে পাল্টে গেল জাবির শিক্ষক রাজনীতি

শিক্ষাঙ্গন

জাবি প্রতিনিধি
(৫ বছর আগে) এপ্রিল ১২, ২০১৯, শুক্রবার, ৭:৩৭ পূর্বাহ্ন

 প্রধানমন্ত্রীর একজন প্রভাবশালী উপদেষ্টার হস্তক্ষেপে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের বিবদমান দুইগ্রুপের রাজনীতি নতুন মোড় নিয়েছে। সম্প্রতি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদারসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক নেতার সঙ্গে গুলশানে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমামের বাসায় মিটিং হওয়ার পর এই নতুন মোড় নিয়েছে। সূত্র জানায়, সরকারের এই উপদেষ্টা বৈঠকে বর্তমান ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলামকে সহযোগিতার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আহ্বান জানান। আহ্বানের প্রেক্ষিতে বিবদমান দুইগ্রুপ এক হওয়ার লক্ষ্যে একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু দুইপক্ষ শেষ পর্যন্ত ঐক্যমতে না পৌঁছানোয় ভিসিবিরোধীদের একাংশ ভিসির পক্ষে যোগ দিচ্ছেন। পহেলা বৈশাখে এ উপলক্ষে একটি ভোজপর্বের আয়োজনও চলছে।

সূত্র বলছে, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অজিত কুমার মজুমদার, সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ, ভিসিবিরোধী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সদ্য সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আলমগীর কবির, প্রীতিলতা হলের প্রভোস্ট কৌশিক সাহার নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন শিক্ষক যোগ দিচ্ছেন ভিসি গ্রুপে। দল পাল্টানো গ্রুপে ৩০ জনের মতো শিক্ষক থাকছেন বলে কয়েকটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নড়েচড়ে বসেছে ভিসিবিরোধী শিক্ষক সমাজের নীতি নির্ধারকরা। তড়িঘড়ি করে অধ্যাপক আব্দুর জাব্বার হাওলাদারকে সভাপতি ও অধ্যাপক খবির উদ্দীনকে সাধারণ সম্পাদক করে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের নতুন স্টিয়ারিং কমিটিও ঘোষণা করা হয়। যোগাযোগ করা হলে অধ্যাপক অজিত কুমার মজুমদার বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে দুইপক্ষকে এক হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে যার প্রেক্ষিতে উপাচার্যের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। দেখা যাক কতদূর কি হয়।’ কিন্তু কেন দুইদল এক না হয়ে আপনারা একটা অংশ এক হচ্ছেন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন অনেকে স্বার্থের ঊর্র্ধ্বে উঠতে পারছেন না বলে এমনটা হচ্ছে।

তবে নতুন কমিটি অবৈধ দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের সংবিধানে স্টিয়ারিং কমিটি নামে কোনো কমিটির কথা বলা নেই। এটা একটা পকেট কমিটি।’ প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘এই কমিটি প্রায় শেষপর্যায়ে তাই নতুন কমিটি ঘোষণার চেষ্টা করা হচ্ছে। সাধারণ সভা ছাড়া নতুন কমিটি হওয়ার নজির নেই তবে আগামী সোমবার সাধারণ সভা হবে। সরকারের পক্ষ থেকে আহ্বান নিয়ে আমাদের মধ্যে কথা হয়েছে। তবে আমাদের মধ্যে মতদ্বৈততা ছিল।’ তিনি বলেন, আমাদের দুইপক্ষের মধ্যে সংলাপ হতে পারতো সেটা হলে আরো ভালো ফল আসতে পারতো কিন্তু সেটা না হওয়া দুর্ভাগ্যজনক।
ভিসিপন্থি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক বশির আহমেদ বলেন, ‘আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের জন্য আমাদের দরজা সবসময় খোলা। আমরা ঐক্যের পক্ষে। আমাদের উপাচার্যও রিটকারী ব্যতীত সবাইকে এক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। দলের একটি পক্ষ এক হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা চেয়েছিলাম দুই দল এক হওয়া। প্রয়োজনে নতুন নাম নিয়ে দুই দল এক হয়ে কাজ করি। কিন্তু সরকারের সেই উদ্যোগকে ভেস্তে দিচ্ছে একটি পক্ষ। তারা বিএনপিকে সব পদ দিয়ে দিচ্ছে কিন্তু আওয়ামী লীগের সঙ্গে এক হবে না। তারা আদৌ আওয়ামী লীগ কি না সে প্রশ্ন থেকে যায়।’

এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে মুখোমুখি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামী শিক্ষকদের মাঝে ঐক্যের গুঞ্জন উঠলেও তা হয়ে উঠেনি। ২৩শে জানুয়ারি সাবেক ভিসি অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবিরপন্থি ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ বিএনপি ও বামপন্থি শিক্ষকদের বৃহত্তর মোর্চা ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’ গঠন করেন। এই মোর্চা ভিসিপন্থিদের বিরুদ্ধে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু সম্মিলিত প্যানেলে জয়ী আওয়ামী শিক্ষকরা সম্প্রতি ‘ডিগবাজি’ দিয়ে ভিসিপন্থিদের দলে ভিড়ছেন। এদিকে আওয়ামীপন্থিদের ডিগবাজিতে জোটসঙ্গী বিএনপি শিক্ষকরা এতে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপি পক্ষের একজন নীতি নির্ধারক বলেন, আমরা আর প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজকে বিশ্বাস করব কি না সেটাও ভেবে দেখতে হবে। আমরা চেয়েছিলাম সবাই সম্মিলিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে একটা যুগপৎ আন্দোলন। কিন্তু তারা ক্ষমতার আকাক্সক্ষায় বিভোর। যেখানে ক্ষমতার স্বাদ সেখানেই তাদের ডিগবাজি।

মেয়াদোত্তীর্ণ ডিন নির্বাচন, সিন্ডিকেট নির্বাচন ও একাডেমিক কাউন্সিল নির্বাচনের দাবিতে সম্মিলিত জোট  যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে আসলেও জোটের মধ্যে এই অবিশ্বাস আন্দোলনকে ব্যাহত করবে বলছেন শিক্ষক নেতারা। শিক্ষক নেতাদের এই ‘ডিগবাজিতে’ শিক্ষক রাজনীতিতে খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলেও মত তাদের। ভিসিবিরোধী তরুণ শিক্ষকরা এই ‘ডিগবাজিতে’ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর