বল পায়ে আরো একবার চমক দেখালেন ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসি। মঙ্গলবার চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোয়ার্টার ফাইনাল ফিরতি লেগে লিওনেল মেসির জোড়া গোলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে ৩-০ গোলে জয় পায় বার্সেলোনা। এতে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-০ এগ্রিগেট নিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট কাটে বার্সা। মেসিকে নিয়ে ম্যাচ শেষে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কোচ ওলে গানার সুলশার বলেন, ‘আমি মেসিকে দেখছিলাম, সে উঁচুমানের খেলোয়াড়। তার দুই গোলই ম্যাচ থেকে আমাদের ছিটকে দিয়েছে।’ প্রথম লেগে ম্যানইউর মাঠে ১-০ গোলে জয় পেয়েছিল কাতালানরা। ২০১৫ সালের পর প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লীগের সেমিফাইনালে উঠলো পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা। আর ইউরোপের কোনো ক্লাবের বিপক্ষে দুই লেগ মিলিয়ে বড় পরাজয় দেখলো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। এর আগে ১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে এসি মিলানের বিপক্ষে ৫-২ গোলে হার দেখেছিল রেড ডেভিলরা।
এবং ১৯৯১-৯২ মৌসুমে কাপ উইনার্স কাপের শেষ ষোলোর লড়াইয়ে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ৪-১ গোলে হেরেছিল তারা। ১৯৯৯ সালের পর প্রথমবার প্রতিপক্ষের মাঠে টানা চার ম্যাচে হারের অভিজ্ঞতা হলো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের।
ম্যাচ শুরুর দশম মিনিটে ডি-বক্সের ভিতরে ম্যানইউ ডিফেন্ডার ফ্রেডের সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে ইভান রাকিটিচ পড়ে গেলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তবে ভিএআর পর্যালোচনা শেষে রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত বাতিল করেন। ম্যাচের ১৬তম মিনিটে লিওনেল মেসির দুর্দান্ত গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। ডি-বক্সের বাইরে থেকে কোণাকুণি ট্রেডমার্ক শটে ম্যানইউর জাল কাঁপান ‘এলএম টেন’। ২০১৩ সালের পর চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোয়ার্টার ফাইনালে প্রথম গোল পেলেন মেসি। সবশেষ ২০১২-১৩ চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোয়ার্টার ফাইনাল প্রথম লেগে প্যারিস সেইন্ট জার্মেই’র (পিএসজি) বিপক্ষে গোল পেয়েছিলেন মেসি। ওই ম্যাচে প্যারিসে ২-২ গোলের সমতায় শেষ হয় খেলা। আর নিজ মাঠে দ্বিতীয় লেগে ১-১ সমতায় খেলা শেষ করে অ্যাওয়ে গোলের বিচারে সেমিফাইনালে ওঠে বার্সেলোনা। পরের ছয় বছরে কোয়ার্টার ফাইনালের ১২ ম্যাচে মোট ৫০টি শট নিয়েও গোলবঞ্চিত থাকেন বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন তারকা। মঙ্গলবার নিজেদের ন্যু ক্যাম্প মাঠে ম্যাচের ২০তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মেসি। বল পেয়ে ম্যানইউর রক্ষণভাগের খেলোয়াড়দের পরাস্ত করে গোলপোস্টে মেসির শট। বল ম্যানইউর স্প্যানিয়ার্ড গোলরক্ষক ডেভিড ডি গেয়ার হাতের নিচ দিয়ে জালে জড়ায়। চলতি চ্যাম্পিয়ন্স লীগে সর্বোচ্চ ১০ গোলের কৃতিত্ব মেসির। আসরে বায়ার্ন মিউনিখের পোলিশ স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানদোস্কি পেয়েছেন ৮ গোল। চলতি আসরে ৬ গোল পেয়েছেন জুভেন্টাসের পর্তুগিজ সুপারস্টার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, এফসি পোর্তোর মুসা মারেগা ও আয়াক্স আমস্টারডামের দুসান তাদিচ।
চ্যাম্পিয়ন্স লীগে ইংলিশ ক্লাবগুলোর বিপক্ষে সর্বাধিক ২৪ গোলের রেকর্ড মেসির। আর এবারের মৌসুমে বার্সার জার্সিতে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লীগে সর্বাধিক ৪৫ গোল পেলেন মেসি। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়ান ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ফিলিপ্পে কুটিনহো। জর্ডি আলবার পাসে ডি-বক্সের বাইরে থেকে দারুণ শটে ম্যানইউর জালে বল জড়ান এই ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার। চলতি আসরে এটি কুটিনহোর তৃতীয় গোল।