× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

অনেকেই ভাবেন খালেদা মুক্তি পেলে তাদের অসুবিধা হবে

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
১৮ মে ২০১৯, শনিবার

এলডিপি চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেছেন, রাজনীতিতে এক ধরনের ছাগল আছে। তিনি বলেন, ছাগলগুলো মনে করে বেগম জিয়ার থেকেও তারা বড় নেতা। গতকাল রাজধানীর লেডিস ক্লাবে এলডিপি আয়োজিত ইফতার মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ২০ দলীয় জোটে যোগ দেয়ার পর খালেদা জিয়া বিহীন এটি এলডিপির দ্বিতীয় ইফতার মাহফিল। তার অনুপস্থিতিতে অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমরা এখানে উপস্থিত হয়েছি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়েও বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। ২০ দলীয় জোট ভাঙার জন্য অনেকেই প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

এই প্রক্রিয়া অবশ্য নির্বাচনের আগে থেকেই হয়েছিল।
ইদানিংও আমরা লক্ষ্য করছি কিছু লোক চায় না বেগম খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্তি পাক। অলি আহমদ বলেন, অনেক সময় দেখা যায়, দেয়াল নিচু হলে ছাগল লাফ দিয়ে তার উপর উঠে যায়। পাশে হয়তো মালিক দাড়িয়ে থাকে। অনেক সময় ছাগলের উচ্চতা মালিকের উচ্চতার চেয়ে বেশি হয়। ছাগল মনে করে আমি মালিকের চেয়ে বেশি উচু। রাজনীতিতে এ ধরণের অনেক ছাগল আছে। ছাগলগুলো মনে করে বেগম জিয়ার থেকেও তারা বড় নেতা। সুতরাং বেগম জিয়া যদি কারাগার থেকে বের হয় তাহলে অনেকের অসুবিধা হতে পারে। আমরা সত্যিকার অর্থে মনে প্রাণে চাই খালেদা জিয়া কারাগার থেকে বের হোক। আমরা প্রেস ক্লাবে যে কথাগুলো বলেছি। এগুলো কোনো কথার কথা নয় এবং কাউকে সন্তুষ্ট করার জন্যও বলা হয়নি।

আমরা আমাদের পক্ষ থেকে যথাসাধ্য চেষ্টা করব। প্রেস ক্লাব থেকে আমরা শুরু করেছি। আজকেও কথাগুলো বলছি। আগামীতেও আমরা বলব। বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে আমরা জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা করব। আমরা সরকারের বিরুদ্ধে কোনো কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হব না। তিনি বলেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধা। দেশকে বাঁচানোর জন্য, দেশের মানুষের নিরাপত্তার জন্য যুদ্ধ করেছি। দেশের মানুষকে হত্যা করার জন্য নয়। দেশের কোনো ক্ষতি করার জন্য নয়। দেশের কোনো উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ করার জন্য নয়। বর্তমান সরকার বলছে- দেশে উন্নয়নের রাজনীতি হচ্ছে। এটা কোনো মিথ্যা কথা নয় এটা সত্য কথা। কিন্তু কয়েকদিন আগে আপনারা দেখেছেন ৭৬ শতাংশ যৌন হয়রানি হচ্ছে। সুতরাং উন্নতি যে হচ্ছে না, আবার সোনার ছেলেরা অপকর্মে যে লিপ্ত হচ্ছেনা এটা ঠিক না। কিন্তু গ্রামে গঞ্জে সাধারণ মানুষের অবস্থা ভয়াবহ। কৃষক ধান পুড়িয়ে দিচ্ছে। ধানের দাম পাচ্ছে না। বড় বড় লোকেরা মেগা প্রকল্পের টাকা লুট করছে।

গরীব মানুষ ও মধ্যবিত্ত মানুষ অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। এলডিপি চেয়ারম্যান বলেন, আগামী দুই তিন মাসের মধ্যে দেশে অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক ধস নামতে পারে। ইতিমধ্যে আপনারা দেখেছেন গত দুই তিন দিনে ডলারের দাম টাকার সঙ্গে প্রায় দুই তিন টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানে যদি তুরষ্কের মতো অবস্থা হয় তাহলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা কি হবে? কানাডার মতো হবে নাকি আফ্রিকার কোনো দেশের মতো হবে এটা দেখার বিষয়। কর্ণেল (অব.) অলি বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মোটেও ভালো না। ধামাচাপা দেয়া হচ্ছে। বিদেশীদের দেখানোর জন্য কিছু মানুষকে ধরে নিয়ে বন্দি রেখে তাদের হাতে কয়েকটা বন্দুক দেয়া হয়। বাইরে থেকে গ্রেনেড ফাটিয়ে, মেশিনগান চালিয়ে তাদের হত্যা করে বলা হয় আমরা সন্ত্রাসের প্রতি জিরো টলারেন্স। ওই লোকগুলোকে মাদক সেবন করিয়ে বন্দি রেখে তাদের হত্যা করে এই ধরণের ড্রামা করা হচ্ছে। বহু ড্রামা আমরা দেখেছি। কিন্তু একটা কথা স্মরণ রাখতে হবে- আল্লাহ প্রত্যেকটা জিনিস দেখছেন। কে ভালো আর কে মন্দ। আমরা হয়তো একে অপরকে ধোঁকা দিতে পারি। আইনের শাসন যে নেই সেটা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না।

তিনি বলেন, হাইকোর্ট থেকে একটা আদেশ জারি হয়েছে কোনো রায়ের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলা যাবে না। অর্থাৎ কেউ অন্যায় করলেও তার বিরুদ্ধে কোনো মন্তব্য করা যাবে না। মানবাধিকার খর্ব করার যতো প্রচেষ্টা তা আইনগতভাবেও করা  হচ্ছে। সুশাসন নেই, ন্যায় বিচার নেই, মানবাধিকার নেই, আমাদের বাঁচার অধিকার নেই। আমাদের নিজের দেশে পরাধীন হিসেবে বেঁচে থাকতে হচ্ছে। তিনি বলেন, এলডিপির পক্ষ থেকে কেউ যদি মনে করে কারো দাস হিসেবে কাজ করবো। কারো গৃহপালিত পশু হিসেবে কাজ করবো, এটা ভুল করবে। ২০০৫ সালে আমরা মনে করেছিলাম রাজনীতিতে ভুল হচ্ছে। এই জন্য উপমহাদেশে নজীর বিহীন একটি ঘটনা ঘটেছিল। তিন জন মন্ত্রীসহ ৩২ জন সংসদ সদস্যকে নিয়ে আমরা সেদিন এলডিপি করেছিলাম। এটা বিএনপির বিরুদ্ধে নয়। সামগ্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমাদের সেদিন বিদ্রোহ ছিল।  

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. মো.শফিকুর রহমান বলেন, দেশে এখন দুইটি কারাগার। একটি চার দেয়ালে ঘেরা কারাগার। আরেকটি হল ৫৬ হাজার বর্গমাইলের কারাগার। এই কারাগার থেকে মুক্তি পেতে আমাদের সবাইকে একযোগে লড়তে হবে। আমার আগে একজন বলেছেন সোজা আঙ্গুলে ঘি উঠবে না। কথাটা ঠিক। আসুন আমরা সবাই মিলে এই কথাটার আমল করি।

এলডিপি চেয়ারম্যান কর্ণেল অলি আহমদের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে আরো বক্তব্য রাখেন- কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বীর প্রতীক, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, কামাল ইবনে ইউসুফ, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির(এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, এলডিপি মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মুফতি মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম ভূইয়া, ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য আবদুর রহমান মুসা, লস্কর মুহাম্মাদ তাসলিম, অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন, হাতিরঝিল থানা আমীর আতাউর রহমান সরকার প্রমুখ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর