× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কর্মকর্তাদের সতর্ক করে সব মিশন প্রধানকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর চিঠি

শেষের পাতা

মিজানুর রহমান
২৪ মে ২০১৯, শুক্রবার

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা বাংলাদেশ মিশনের কার্যক্রম ও সেবা প্রত্যাশীদের সঙ্গে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আচরণে অসন্তোষ বাড়ছে। এ নিয়ে সংসদীয় কমিটির সভায়ও বিস্তর আলোচনা হয়েছে। যা নিয়ে বিব্রত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ অবস্থায়  পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদী কমিটি, প্রবাসী বাংলাদেশী এবং নন রেসিডেন্ট বাংলাদেশীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের অভিযোগের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে এবং দূতাবাসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সতর্ক করে কড়া চিঠি পাঠিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন। গত ২০শে মে সব মিশন প্রধানকে লেখা জরুরি ওই চিঠিতে মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, আসন্ন দূত সম্মেলনের আগে মিশনগুলো তাদের স্ব স্ব অভিযোগ নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেবে এবং সম্মেলনে এ ব্যাপারে ইতিবাচক রিপোর্ট দেবে। সোয়া পৃষ্টার চিঠিতে মন্ত্রী লিখেন- ১৫ই মে’র সর্বশেষ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে বিভিন্ন দেশে অবস্থিত দূতাবাসসমূহে প্রদত্ত সেবা সংক্রান্ত বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। আলোচনায় কমিটির সভাপতিসহ অন্যারা সেবা প্রত্যাশীদের সঙ্গে মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আচরণের ব্যাপারে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

মিশন প্রধানদের উদ্দেশ্যে মন্ত্রী বলেন, আপনি একমত হবেন যে, মিশনসমূহ পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয় হিসেবে এ ধরনের অভিযোগ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর। কেবলমাত্র সংসদীয় কমিটি নয়, বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রায়শই এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
সকল অভিযোগের যে ভিত্তি আছে তা নয়, তবে এ প্রসঙ্গে আমি মনে করি যে কনস্যুলার সেবা দ্রুততম সময়ে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে প্রদান করলে এ ধরনের অভিযোগের সংখ্যা অনেক কম হতো। মন্ত্রী বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই আপনাদের দীর্ঘ চাকরি জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে এটি উপলব্ধি করেন যে, আমাদের মিশনসমূহে আন্তরিকতাপূর্ণ ব্যবহারের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। মিশনের কিছু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ ভদ্র ও মার্জিত ভাষায় সেবা গ্রহীতাদের সঙ্গে কথোপকথনে অনাগ্রহী অথবা অক্ষম। এছাড়াও আপনারা আমার সঙ্গে আরো একমত হবেন বলে মনে করি যে, হাসিমুখে এবং আন্তরিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে সেবা প্রত্যাশীদের সেবা প্রদান করলে মিশনসমূহ সম্পর্কে প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিদ্যমান ধারণায় সম্যক পরিবর্তন আনা খুব সহজেই সম্ভব হবে। মন্ত্রী তাদের সতর্ক করে বলেন, মনে রাখতে হবে যে, নাগরিকদের প্রবাসে সেবা দানে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ও আমাদের অন্যতম দায়িত্ব। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেবা প্রত্যাশীদের সঙ্গে দূতাবাসের দায়িত্বশীল আচরণ নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ ধারাবাহিকতায় সেবা সহজীকরণের নিমিত্তে সম্প্রতি বিদেশে বাংলাদেশি মিশনগুলোতে ২৪ ঘণ্টা ‘হট লাইন’ চালু করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। শ্রমঘন মিশনসমূহের কনস্যুলার তথ্য প্রদানের জন্য বাংলায় পারদর্শী কোন ব্যক্তিকে নিয়োজিত করে তাকে প্রতিটি টেলিফোন কলের জবাব দানের সার্বক্ষণিক দায়িত্ব প্রদান করতে হবে।

এটি বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি মিশনে অভিযোগ বাক্স স্থাপনের উদ্যোগ নিতে হবে। সেবার মানোন্নয়নে রাষ্ট্রদূতরা ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করবেন এমন আশা করে মন্ত্রী বলেন- কনস্যুলার সেবা কক্ষের আমুল পরিবর্তন যেমন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ও সকলের বসার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা করা, প্রতিটি অপেক্ষা কক্ষে মন্ত্রণালয় কর্তৃক সরবরাহকৃত আইপি বক্স স্থাপনের মাধ্যমে দেশীয় টিভি চ্যানেল দেখার ব্যবস্থা করা, ভেন্ডিং মেশিন ও কিউ ম্যানেজমেন্ট মেশিন স্থাপন, ফটোকপি, ওয়াই ফাই সুবিধা প্রদান এবং ক্রেডিট-ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে ফি গ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ করলে সেবা গ্রহীতাগণ উপকৃত হবেন তা বলাই বাহুল্য। এ ধরনের কার্যক্রমের পাশাপাশি যে কোন উদ্ভাবনী উদ্যোগ মন্ত্রণালয় স্বাগত জানাবে। এসব কার্যক্রম বাস্তবায়নে অতিরিক্ত বরাদ্দের প্রয়োজন হলে মন্ত্রণালয় যথাসাধ্য তার সংস্থান করতে প্রস্তুত আছে। তাছাড়া ই-মেইল এবং যোগাযোগের সামাজিক মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সাড়া দানে ব্যবস্থা নিশ্চিত করা দরকার। চিঠির সমাপনী অংশে মন্ত্রী বলেন-“জননেত্রী শেখ হাসিনার অধীনে উন্নয়নের ধাপসমূহ একটির পর একটি অতিক্রমের সঙ্গে সঙ্গে সরকার সাধারণ সেবাপ্রার্থীদের উন্নততর সেবা প্রদানে বদ্ধপরিকর। ইতিমধ্যেই বহু অফিসে সেবার মানের যুগান্তকারী পরিবর্তন হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেবার মান উন্নত করার জন্য সম্প্রতি সকল দূতাবাসে ‘দূতাবাস’ এপস চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে। যার মাধ্যমে প্রায় ৩০০ ধরনের তাৎক্ষণিক সেবাদান সম্ভব হবে। আপনার মিশনকেও এই ডিজিটাল পদ্ধতির আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আমি আশা করবো আপনার নেতৃত্বে আপনার অধীনে নিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীগণের মধ্যে সেবা প্রদানের বিষয়ে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গির ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটবে। আগামী কয়েক মাসের মধ্য ঢাকায় রাষ্ট্রদূতদের একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে আপনাদের প্রত্যেকের নিকট থেকে সেবার মানোন্নয়নে গৃহিত পদক্ষেপ সম্পর্কে জানার জন্য আমরা অপেক্ষায় থাকবো।”
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর