নরসিংদী শহরের কাউরিয়াপাড়া নতুন লঞ্চঘাটের টয়লেটে নুসরাত জাহান তাইন (১০) ও তানিশা তাইয়েবা (৪) নামের দুই কন্যা শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে তাদের বাবা শফিকুল ইসলাম। এমন তথ্য জানিয়েছেন নরসিংদী পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেসব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান তিনি। ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার বলেন, নিহত দুই শিশুর বাবা শফিকুল ইসলাম ও তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শফিকুল ইসলাম আগে থেকেই মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল। গতকাল ওই বাবা তার দুই মেয়েকে নিয়ে মনোহরদী থেকে শিবপুরে ডাক্তার দেখাতে যায়। ডাক্তার না থাকায় নরসিংদী সদরে ঘুরতে আসে মেয়েদের নিয়ে। পরে বড় মেয়ের আবদার অনুযায়ী নরসিংদী কাউরিয়াপাড়া নতুন লঞ্চ ঘাট দেখতে আসে তারা।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, তার কথাবার্তায় নানা রকমের অসঙ্গতি লক্ষ্য করেছি।
জিজ্ঞাসাবাদে ওই বাবা জানিয়েছেন, পারিবারিক দারিদ্র্য, মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ দিতে না পারা, আবদার অনুযায়ী মেয়েদের নতুন জামা দিতে না পারা সবকিছু মিলিয়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে প্রথমে ছোট মেয়েকে লঞ্চ ঘাটের একটি টয়লেটে নিয়ে গিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে বড় মেয়েকে একই টয়লেটে নিয়ে গিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ফেলে রেখে যায়। হত্যার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে দু’জনকে নিজের সন্তান দাবি করলেও কথাবার্তায় সন্দেহ হলে তাকে আটক করা হয়। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। নিহতদের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হবে। এর আগে গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে নরসিংদী কাউরিয়াপাড়া নতুন লঞ্চ ঘাটের টয়লেটের ভিতর থেকে দুই কন্যাশিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। নিহত দুই কন্যাশিশু মনোহরদী উপজেলার পূর্ব চালাকচর গ্রামের শফিকুল ইসলামের কন্যা। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের পিতা শফিকুল ইসলামকে আটক করেছে পুলিশ।