ভুয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচারের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক পাক-প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির ১১ দিনের শারীরিক রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ইসলামাবাদের বিশেষ আদালত। সোমবার তাকে নিজ বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো (এনএবি)। মঙ্গলবার এনএবি ১৪ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে ১১ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। এ খবর দিয়েছে দ্য ডন।
এদিকে জারদারির গ্রেপ্তারের ঘটনাকে রাজনৈতিক শিকার বলে আখ্যায়িত করেছেন পিপিপি সভাপতি ও তার ছেলে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। এই গ্রেপ্তারের সময় নির্ধারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন)। তারা বলেছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর প্রস্তুত করা জনবিরোধী বাজেট থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে সরিয়ে দিতে জারদারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ওদিকে জারদারিকে গ্রেপ্তারের খবরে পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। পিপিপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন।
বিশেষ করে পিপিপি শাসিত সিন্ধু প্রদেশে এই বিক্ষোভ প্রকট আকার ধারণ করেছে। তবে নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিলাওয়াল। বলেছেন, দলীয় নির্দেশনা মেনে চলতে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডন।
ভুয়া ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে অর্থ পাচারের মামলায় গ্রেপ্তার-পূর্ববর্তী বা আগাম জামিন আবেদন করেছিলেন আসিফ আলি জারদারি। কিন্তু ন্যাশনাল একাউন্টেবলিটি ব্যুরো (এনএবি) সোমবার তা প্রত্যাখ্যান করে ইসলামাবাদের সেক্টর এফ-৮/৩ নম্বরে জারদারি হাউস থেকে গ্রেপ্তার করে তাকে। একটি কালো গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয় এনএবি’র রাওয়ালপিন্ডি অফিসে। সেখানে এনএবি’র ১৫ সদস্যের একটি টিম তাকে গ্রেপ্তার দেখায়। তখনও জাতীয় পরিষদে অধিবেশন চলছিল। পিপিপি তার কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির (সিইসি) বৈঠক আহ্বান করে। এতে বাজেট অধিবেশনে তাদের কৌশল কী হবে তা নির্ধারণ করার কথা।
এখানে উল্লেখ্য, একই মামলায় আসামি আসিফ আলি জারদারি বোন ফারিয়াল তালপুর। তার জামিনও বাতিল করেছে ইসলামাবাদের হাইকোর্ট। কিন্তু তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। কারণ, তার বিরুদ্ধে তখনও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যু করা হয়নি। এ বিষয়ে এনএবি’র একজন কর্মকর্তা ডন’কে বলেছেন, মিসেস তালপুরকে এক বা দু’দিনের মধ্যে গ্রেপ্তার করা হবে।
আসিফ আলি জারদারিকে গ্রেপ্তারের পর রাতে আলাদা একটি সংবাদ সম্মেলন করেন বিলাওয়াল। দলীয় সিইসির বৈঠকে জারদারিকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানানো হয়। বলা হয়, এ বিষয়ে দলগুলোর সঙ্গে পার্লামেন্টের ভিতরে ও বাইরে যোগাযোগ স্থাপনে একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করবে পিপিপি। বিলাওয়াল বলেন, আমরা গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও মানবাধিকার নিয়ে কোনো সমঝোতা করতে প্রস্তুত নই। আমরা বিশ্বাস করি, আসিফ আলি জারদারিকে গ্রেপ্তার একটি সামান্য অজুহাত। তাদের (সরকার) আসল টার্গেট হলো ১৯৭৩ সালের সংবিধান, ১৮তম সংশোধনী ও গণতন্ত্র।