ওয়ানডে বিশ্বকাপে আগের ৬ দেখায় প্রত্যেকবারই পাকিস্তানকে হারিয়েছে ভারত। ১৯৯২ সালে প্রথম সাক্ষাৎ তাদের। সর্বশেষ গত বিশ্বকাপের গ্রুপপর্বে। একপেশে লড়াইয়ের কিছু খণ্ডচিত্র তুলে ধরা হলো-
মিঁয়াদাদের ক্যাঙ্গারু লম্ফ (১৯৯২)
ভারত: ২১৬/৭ (৪৯ ওভার)
পাকিস্তান: ১৭৩ (৪৮.১ ওভার)
ফল: ভারত ৪৩ রানে জয়ী
সেবার ইমরান খানের অধিনায়কত্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু ওই আসরে রাউন্ড রবিন লীগের ম্যাচে ভারতের কাছে ৪৩ রানে পরাজিত হয় পাকিস্তান। আগে ব্যাট করতে নেমে ভারত তুলেছিল ২১৬ রান। জবাবে ওপেনার আমির সোহেলের ৬২ ও জাভেদ মিঁয়াদাদের ৪০ রানের পরও পাকিস্তান থেমে যায় ১৭৩ রানে। ম্যাচটিতে মিঁয়াদাদের ক্যাঙ্গারু লাফ উল্লেখযোগ্য ঘটনা।
ভারতীয় উইকেটরক্ষক কিরণ মোরে বারবার আপিল করায় বিরক্ত হয়ে ওঠেন মিঁয়াদাদ। এক পর্যায়ে ‘হাউ ইজ দ্যাট’ বলে ক্যাঙ্গারুর মতো লাফাতে থাকেন তিনি।
ব্যাঙ্গালোরে জাদেজা ঝড় (১৯৯৬)
ভারত: ২৮৭-৮ (৫০ ওভার)
পাকিস্তান: ২৪৮-৯ (৪৯ ওভার)
ফল: ভারত ৩৯ রানে জয়ী।
১৯৯৯ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল। ব্যাঙ্গালোরে চিরশত্রু ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি। হাজার হাজার দর্শকের সমানে সেদিন টি-টোয়েন্টি ব্যাটসম্যান হয়ে ওঠেন অজয় জাদেজা। পাকিস্তানি গ্রেট পেসার ওয়াকার ইউনুসের শেষ ২ ওভারে ৪০ রান নিয়েছিলেন জাদেজা। ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ৯৩ রান করেন ওপেনার নভোজোৎ সিং সিধু। কিন্তু জাদেজার ২৫ বলে ৪৫ রানের ইনিংসটিই ব্যবধান গড়ে দিয়েছিল সেদিন। স্লো ওভার রেটের কারণে ৪৯ ওভারে পাকিস্তানকে জয়ের জন্য করতে হতো ২৮৮ রান। আমির সোহেল-সাঈদ আনোয়ারের ওপেনিং জুটিতেই এসেছিল ৮৪। কিন্তু এই জুটি ভাঙার পর নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে পাকিস্তান। শেষতক পাকিস্তান ম্যাচটি হেরেছিল ৩৯ রানে।
প্রসাদে চূর্ণ পাকিস্তান (১৯৯৯)
ভারত: ২২৭/৬ (৫০ ওভার)
পাকিস্তান: ১৮০ (৪৫.৩ ওভার)
ফল: ভারত ৪৭ রানে জয়ী।
কারগিল যুদ্ধের উত্তেজনা সরিয়ে রেখে ওল্ড ট্রাফোর্ডে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত-পাকিস্তান। পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা দলটিও সেদিন ভারতের সঙ্গে পেরে ওঠেনি। ম্যানচেস্টারে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শচীন টেন্ডুলকারের ৪৫, রাহুল দ্রাবিড়ের ৬১ ও অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের ৫৯ রানে ভারত তুলে ২২৭। জবাব দিতে নেমে ভেঙ্কট প্রসাদ-জাগাভাল শ্রীনাথের পেসে মুখ থুবড়ে পড়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ। ২৭ রানে ৫ উইকেট নেন প্রসাদ। শ্রীনাথ নেন ৩৭ রানে ৩ উইকেট।
সেঞ্চুরিয়নে টেন্ডুলকার শো (২০০৩)
পাকিস্তান: ২৭৩/৭ (৫০ ওভার)
ভারত: ২৭৪/৪ (৪৫.৪ ওভার)
ফল: ভারত ৬ উইকেটে জয়ী।
আগের তিন দেখায় পরে ব্যাট করে হারা পাকিস্তান এবার টস জিতে আগে ব্যাটিং নেন। দক্ষিণ আফ্রিকার সেঞ্চুরিয়নে সাঈদ আনোয়ারের সেঞ্চুরিতে ২৭৩ রানের লড়াকু পুঁজি গড়েছিল ওয়াকার ইউনুসের দল। কিন্তু শচীন টেন্ডুলকারের ৭৫ বলে ৯৮ রানের ঝড়ো ইনিংসে ম্যাচ বের করে ফেলে ভারত। এরপর যুবরাজ সিংয়ের ৫৩ বলে অপরাজিত ৫০ রানে ৬ উইকেটের সহজ জয় তুলে সৌরভ গাঙ্গুলীর দল।
ক্যাচ মিসে ম্যাচ মিস পাকিস্তানের (২০১১)
ভারত: ২৬০/৯ (৫০ ওভার)
পাকিস্তান: ২৩১ (৪৯.৫ ওভার)
ভারত: ২৯ রানে জয়ী
মোহালিতে সেমিফাইনালে আগে ব্যাট করতে নামা ভারতের একটা সময় স্কোর ছিল ১১২-২। ওয়াহাব রিয়াজের তোপে সেখান থেকে ১৮৭-৫ হয়ে যায় তাদের স্কোর। পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে শচীন করেছিলেন ৮৫ রান। অথচ তাকে ৪ বার জীবনদান করেন পাকিস্তানি ফিল্ডাররা। জবাবে পাকিস্তান একটা পর্যায়ে ভালো অবস্থানে থাকলেও শেষের দিকে দ্রুত উইকেট হারিয়ে অলআউট হয় ২৩১ রানে। ম্যাচের পর পাকিস্তানি ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে ক্ষমা চান দলীয় অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি।
অ্যাডিলেডে আলো কাড়লেন কোহলি (২০১৫)
ভারত: ৩০০/৭ (৫০ ওভার)
পাকিস্তান: ২২৪ (৪৭ ওভার)
ফল: ভারত ৭৬ রানে জয়ী।
অ্যাডিলেডে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে নতুন শচীন ‘বিরাট কোহলি’ জেতালেন ভারতকে। কোহলির ১০৭ রান ও রায়নার ৫৬ বলে ৭৪ রানের ঝড়ো ইনিংসে পাকিস্তানকে ৩০১ রানের বড় লক্ষ্য দেয় ভারত। পাকিস্তানের হয়ে ডানহাতি পেসার সোহেল খান ৫ উইকেট নেন। জবাব দিতে নেমে ২২৪ রানের বেশি তুলতে পারেনি পাকিস্তান। সর্বোচ্চ ৭৪ রান করেন অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হক।
ভারতের পক্ষে ডানহাতি পেসার মোহাম্মদ শামী ৪ উইকেট নেন।