× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

তিউনিশিয়া উপকূলে আটকা ৬৪ বাংলাদেশি /খাবার নিচ্ছেন না, ইউরোপ যাওয়ার তেল চান

প্রথম পাতা

মিজানুর রহমান
১৭ জুন ২০১৯, সোমবার

তিউনিশিয়া উপকূলে তেলফুরিয়ে যাওয়া নৌকা নিয়ে আটকা ৬৪ বাংলাদেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী এখনো গোঁ ধরে আছেন। তাদের ইউরোপ যেতে দিতে হবে, অন্যথায় তারা সাগরেই থাকবেন। তারা খাবার ও আশ্রয় প্রত্যাখ্যান করে বলছেন, আমরা এগুলো চাই না। আমাদের ইতালি পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি দিন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে। দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা লিবিয়া দূতাবাসের রিপোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, বাংলাদেশিদের ওই অনড় অবস্থানেও টলছে না তিউনিশিয়া কর্তৃপক্ষ। তারা কোনো অবস্থাতেই অভিবাসন প্রত্যাশীদের আর একচুলও এগোতে দিতে চাইছে না। লিবিয়াস্থ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ সিকান্দার আলী ঘটনাস্থলে পৌছেছেন দু’দিন আগেই।
তিনি জার্জিস কর্তৃপক্ষ এবং তিউনিশয়ার সেন্ট্রাল গর্ভমেন্টের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন। তাদের রাজী করিয়েছেন ওই নৌকাকে সমতলে ভিড়তে দিতে এবং অভিবাসন প্রত্যাশী বাংলাদেশীদের স্থলসীমান্তে সাময়িক আশ্রয় দিতে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কনস্যুলার ও কল্যাণ অনুবিভাগের দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা জানান, তিউনিশিয়ার কেন্দ্রীয় সরকার কোন অবস্থাতেই অভিবাস প্রত্যাশীদের তাদের মাঠিতে পা ফেলার সূযোগ দিতে নারাজ ছিল। রাষ্ট্রদূত তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ৩ দফা বৈঠক করে অন্তত স্থল সীমান্তে অস্থায়ী আশ্রয় দেয়ার বিষয়ে রাজী করিয়েছেন । কিন্তু বিপত্তি ঘটেছে অভিবাসন প্রত্যাশীদের নিয়ে। তারা এখনও তাদের দাবিতে অনড়। ইতালী যেতে দিলেই তারা ওই এলাকা ছাড়বে, অন্যনাথ নয়। তারা তাদের নৌকার জন্য তেল চায় বলে ঢাকায় রিপোর্ট করেছেন রাষ্ট্রদূত। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, শুরুতে তারা পানি, খাবার এমকি ওষুধ পর্যন্ত প্রত্যাখ্যান করেছিল। তিউনিশয়ার রেড ক্রিসেন্ট তাদের মানবিক সহায়তা দিতে এগিয়ে গেলে তারা তা গ্রহণ করেনি। পরে অবশ্য তাদের কয়েকজন এটি গ্রহণ করেছে এবং তারা তা নিয়ে সাগরে ভাসমান অবস্থায় বেঁচে আছে। বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিরা বলেন, রাষ্ট্রদূত এবং তার সহকর্মী রেডক্রিসেন্টের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।

সবাই মিলে চেষ্টা করছেন বাংলাদেশী অভিবাসন প্রত্যাশীদের কোন মতে নিরাপদে আটকা নৌকা থেকে নামিয়ে আনার। কিন্তু এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অন্যান্য দেশের অভিবাসন প্রত্যাশীরা কোন শর্ত ছাড়া নিজ নিজ দেশে ফিরতে রাজী হলেও বাংলাদেশীরা তাদের দাবিতে অনড়। প্রায় ১৫ দিন ধরে তিউনিশিয়া উপকূলে সাগরে ভাসছেন ৬৪ বাংলাদেশি সহ ৭৫ অভিবাসন প্রত্যাশী। নৌকাযোগে ইতালি যাওয়ার পথে তাদের বহনকারী নৌকার তেল ফুরিয়ে যায়। পরে একটি উদ্ধারকারী জাহাজ তাদেরকে উদ্ধার করে এবং সাগরেই ভাসমান অবস্থায় কর্ডন করে রাখে। স্থানীয় জার্জিস উপকূল থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে তাদের অবস্থান। তিউনিশ রেড ক্রিসেন্ট বলছে, লিবিয়া থেকে একটি গ্রুপে এসব মানুষ ইউরোপের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলেন সমুদ্রপথে। এর মধ্যে ৬৪ জন বাংলাদেশি। বাকিরা মরক্কো, সুদান ও মিশরের নাগরিক। তিউনিশিয়ার জলসীমায় আটকা এসব অভিবাসীকে গ্রহণে স্থানীয় মেডিনিন শহর এবং জার্জিস কর্তৃপক্ষ শুরুতে অস্বীকৃতি জানায়।

রয়টার্স বলছে, শরণার্থী রাখার জন্য তাদের যেসব সেন্টার রয়েছে তাতে অত্যাধিক মানুষে ঠাসা। স্থান সংকুলান হবে না সেখানে। ফলে তারা ওইসব অভিবাসীকে তীরে ভিড়তে দেয়নি। রেড ক্রিসেন্টের কর্মকর্তা মঙ্গি স্লিমকে উদ্বৃত করে রয়টার্স জানায়- সাগরে থাকা অভিবাসীদের চিকিৎসা দিতে ডাক্তাররা গেলে অল্প ক’জন চিকিৎসা নেন। বাকিরা সহায়তা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, এতদিন ধরে সমুদ্রে আটকা থাকা এসব অভিবাসীর অবস্থা খুব শোচনীয় হয়ে উঠছে। উল্লেখ্য, লিবিয়ার পশ্চিম উপকূল ইউরোপের উদ্দেশ্যে আফ্রিকান অভিবাসীদের পাচারের প্রধান ট্রানজিট হয়ে উঠেছে। এক্ষেত্রে ইতালির নেতৃত্বে পাচারবিরোধী প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এতে সহায়তা করছে লিবিয়ার কোস্টগার্ড। তা সত্ত্বেও থামানো যাচ্ছে না। এই তো গত মাসে কমপক্ষে ৬৫ জন অভিবাসী নিয়ে তিউনিশিয়া উপকূলে ভূমধ্যসাগরে একটি বোট ডুবে যায়। তাতে বাংলাদেশের বেশ কয়েকজন অভিবাসী ডুবে মারা গেছেন। এ বছরের প্রথম চার মাসে এই রুটে কমপক্ষে ১৬৪ জন মানুষ ডুবে মারা গেছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর