× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

২২ বছর পর রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন

বাংলারজমিন

স্টাফ রিপোর্টার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে
১৬ জুলাই ২০১৯, মঙ্গলবার

 দীর্ঘ ২২ বছর পর আজ মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। সম্মেলনকে ঘিরে যেমন রয়েছে উৎসাহ-উদ্দীপনা তেমনি রয়েছে হতাশা আর ক্ষোভ। সম্মেলনের আগে থানার বিভিন্ন ইউনিয়ন কমিটির সম্মেলন না হওয়ায় এই ক্ষোভ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সম্মেলনের আগে ইউনিয়ন কমিটি না হওয়ায় থানা পর্যায়ে সামনে সুষ্ঠু নেতৃত্ব আসবে না। তবে দীর্ঘদিন পর এ সম্মেলনের কারণে এক ধরনের উৎসবের পরিবেশ বিরাজ করছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ অঙ্গনে। অনেকের প্রত্যাশা এই সম্মেলনে বেরিয়ে আসবে নতুন নেতৃত্ব।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯২ সালে আব্দুল মোতালিবকে সভাপতি, শাজাহান ভূঁইয়াকে সাধারণ সম্পাদক এবং এনামুল হক ভূঁইয়াকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন হয়। পরে ১৯৯৭ সালে পুরানো কমিটি সামান্য সংশোধন করে আবারো কমিটির ঘোষণা করা হয়। এরপর ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে দলের বিরুদ্ধে ভূমিকা রাখার অভিযোগে আবদুল মোতালিবকে সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
২০০৪ সালে সিনিয়র সহসভাপতি তোফাজ্জল হোসেন মোল্লাকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়। পরে ২০০৩ সালে নতুন করে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিলেও কোন্দলের কারণে কমিটি করা আর সম্ভব হয়ে উঠেনি।
নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, প্রায় দুই যুগ ধরে কোন্দলে জর্জরিত জেলার রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ। কোন্দল ছড়িয়ে পরে আওয়ামী লীগের সকল অঙ্গসংগঠনের ভিতরেসহ পৌর, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগেও।
১৯৯০ সালে এরশাদের পতনের পর গণতন্ত্রের পুনঃযাত্রায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রূপগঞ্জ আসনে আবদুল মোতালিবকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়া হয়। এর একদিন পর আবদুল মোতালিবকে বাদ দিয়ে ডাকসুর ভিপি আকতারুজ্জামানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়। মূলত এরপর থেকেই রূপগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগে কোন্দল শুরু হয়। মানজারে আলম টুটুল, অ্যাডভোকেট মফিজ, আবদুর রাজ্জাক, আবুল বাশার টুকু, আমজাদ হোসেন ভূঁইয়াসহ কয়েকজন থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মোতালিবের সঙ্গে যোগ দিয়ে আকতারুজ্জামানের বিরোধিতা করেন। তখন অল্প ভোটের ব্যবধানে বিএনপির প্রার্থী আব্দুল মতিন চৌধুরী বিজয়ী ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী আক্তারুজ্জামানের পরাজয় ঘটে। তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মতিন চৌধুরী তুমুলিয়া ও নাগরী দুই ইউনিয়নকে রূপগঞ্জ থেকে বাদ দিয়ে কালীগঞ্জের সঙ্গে যুক্ত করেন।
ভিপি আকতারুজ্জামান এরপর থেকেই কালিগঞ্জের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন। রূপগঞ্জে তখন আব্দুল মোতালিব গ্রুপ ও শাহজাহান ভূঁইয়া গ্রুপ নামে থানা আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। ১৯৯৬ সালে সাবেক সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল (অব.) কে এম সফিউল্লাহ (বীর উত্তম) আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে বিএনপির সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মতিন চৌধুরীকে পরাজিত করে রূপগঞ্জ আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে নেন। ৯৮ সালের দিকে এক শ্রেণির হাইব্রিড নেতাদের কারণে জেনারেল সফিউল্যাহর সঙ্গে শাহজাহান ভূঁইয়া দূরত্ব শুরু হয়। এতে রূপগঞ্জ আওয়ামী লীগ আবার দুভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। সে সুযোগে গাজী গ্রুপের প্রধান ও বর্তমান বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী শাহজাহান ভূঁইয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে রূপগঞ্জ আওয়ামী লীগের সঙ্গে যোগ দিয়ে নজীরবিহীন আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপির গদিতে ঝাঁকুনি দিয়ে দেশের একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে পরিচিতি পান। ২০০৮ সালের নির্বাচনে দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপিকে পরাজিত করার মধ্যদিয়ে প্রথমবার, এরপর ২০১৪ সালে এবং সর্বশেষ ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ের মধ্য দিয়ে টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় রয়েছে আওয়ামী লীগ। গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক)ও এ আসনে সংসদ নির্বাচিত হন ৩ বার। কিন্তু বিভিন্ন সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে কোন্দলের কারণে আর হয়ে উঠেনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। সর্বশেষ গত নির্বাচনে শক্ত ঐক্যর কারণে দীর্ঘ ২২ বছর পর মঙ্গলবার এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। গত ১৩ই জুলাই শনিবার নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিতসভায় সম্মেলনের এ সিদ্ধান্ত হলেও এর অগ্রনায়ক হিসেবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী প্রধান ভূমিকা পালন করেছেন বলে শোনা যাচ্ছে। তাই এ সম্মেলনকে ঘিরে সারা উপজেলায় এক ধরনের উৎসবের পরিবেশ বিরাজ করছে।

অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর