জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের লাশ রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে পৌঁছার পর বিপুল নেতাকর্মী ভিড় করেন সেখানে। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর থেকেই উত্তেজিত হয়ে উঠেন জনতা। তারা প্রিয় নেতার লাশ ঢাকা নিতে দিবেন না বলে হুশিয়ারি দেন। বক্তব্য দিতে গিয়ে মাইকে বারবার ঘোষণা দেয়া হয়, ‘কোনোভাবেই এরশাদের লাশ ঢাকায় নিতে দেয়া হবে না। যে কোনো মূল্যে প্রিয় নেতার লাশ রংপুরে সমাহিত করা হবে। প্রয়োজনে রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে রংপুর।’
এসময় এরশাদের ‘শেষ ঠিকানা হবে রংপুর, প্রিয়নেতা এরশাদকে রংপুরে সমাহিত করতে হবে’ লেখা স্লোগান সম্বলিত প্লেকার্ড নিয়ে ভিড় করেন নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে বাকবিতন্ডায় জড়াতে দেখা গেছে নেতাকর্মীদের।
রংপুরের মেয়র ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা ঘোষণা দিয়েছেন, তারা ‘যেকোনো মূল্যে’ এরশাদের লাশ রংপুরে রেখে দেবেন। এরশাদকে রংপুরেই দাফন করতে হবে।
এরশাদকে সমাহিত করতে পল্লীনিবাসের লিচু বাগানে প্রস্তুত করা হয়েছে কবর।
তবে দলের পূর্বসিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রংপুর ঈদগাহ মাঠে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের চতুর্থ জানাজা শেষে তার কফিন হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় নিয়ে আসা হবে। বাদ আসর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কবরস্থানের তাকে সমাহিত করা হবে।
সকাল ১১ টায় বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারযোগে রংপুরে পৌঁছে এরশাদের লাশ। এরশাদের লাশ বহনকারী হেলিকপ্টার রংপুর সেনানিবাসের হ্যালিপ্যাডে অবতরণ করা হয়। এসময় বিপুল নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকে তার লাশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে রংপুর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে। সেখানে সামাজিক, রাজনৈতিক বিভিন্ন সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ তার কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং তাকে শেষ দর্শন করেন। এসময় সাবেক এই প্রেসিডেন্টকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। তার আগে আজ সকাল সাড়ে ১০টায় এরশাদের লাশের কফিন নিয়ে বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার ঢাকা থেকে রংপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
উল্লেখ্য, রোববার সকাল পৌনে ৮টায় রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন মারা যান সাবেক প্রেসিডেন্ট ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। তিনি রক্তে সংক্রমণসহ লিভার জটিলতায় ভুগছিলেন।