শারীরিক প্রতিবন্ধী মো. শামিম। তার পিতা মো. আজাদ স্থানীয় প্রশাসন, ওয়ার্ড মেম্বার ও জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও একটি ভাতা কার্ড পায়নি। এমনকি ইউএনও’র কাছে আবেদন করা হলেও বিষয়টি আমলে নেয়নি প্রশাসন। অতিদরিদ্র পরিবারের সন্তান মো. শামিম। বয়স ১৭ বছর। জন্মলগ্ন থেকেই মো. শামিমের দু’পা ও দু’হাত অতি চিকন। তেড়াবাঁকা ও দুর্বল। নিজের পায়ে ভর দিয়ে চলতে পারে না মো. শামিম।
অর্থাৎ যাকে বলা হয় শারীরিক প্রতিবন্ধী। তার পিতা মো. আজাদের বসতভিটা ব্যতীত কোনো জায়গা-জমি নাই। তিনি পেশায় একজন দিনমজুর। তার ৩ ছেলে ও ১ মেয়ে রয়েছে। সংসারে একমাত্র উপার্জনকারী মো. আজাদ। তার বাড়ি সোনাইমুড়ী উপজেলার অন্তর্গত নদনা ইউনিয়নের কালুয়াই গ্রামে। নানা অভাব অনটনে দিন কাটে মো. আজাদের। এর মধ্য দিয়ে প্রতিবন্ধী সন্তান মো. শামিমকে সুস্থ করতে বিভিন্নভাবে চিকিৎসা অব্যাহত রেখেছেন। ইতিমধ্যে চিকিৎসা বাবদ প্রায় ১ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। তবে কিছুতেই উন্নতি হচ্ছে না মো. শামিমের। সে নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যেতে জ্বালাযন্ত্রণা দিয়ে থাকে। একা একা যেতে পারে না। একটু হাঁটলে পড়ে যায়। দিন দিন অবস্থার অবনতি ঘটছে মো. শামিমের। সম্প্রতি চরম বেকায়দায় পড়েছে দরিদ্র পরিবারটি। চোখে যেন শস্য ফুল দেখতে শুরু করেছে। একদিকে পেটের ভাত জোগাড়, অন্যদিকে মো. শামিমের চিকিৎসার খরচ জোগাতে ব্যর্থ হয়ে পড়েছে মো. আজাদ ও মা সুমি বেগম। অদ্যাবধি প্রতিবন্ধী মো. শামিমের খোজ রাখে না কেউ। যেন সমাজের বোঝা হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। প্রতিবন্ধী শিশুদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের নানা কর্মসূচি থাকলেও শিশু মো. শামিম সেসব সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এদিকে মো. আজাদের অভিযোগ, প্রতিবন্ধী শিশু মো. শামিমের জন্য একটি হুইলচেয়ার ও ভাড়া সুবিধা পাওয়ার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। আজও তার ছেলের ভাগ্যে জুটেনি হুইলচেয়ার কিংবা প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড। সরকারের এ সুবিধা আদৌ পাবেন কী? এটাই এখন মো. আজাদ ও সুমি বেগমের প্রশ্ন। তবে সরকারের নানা সুবিধা পেতে আকুতি জানিয়েছে পরিবারটি। নদনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, সরকারের বরাদ্দের চেয়ে চাহিদা বেশি হওয়ায় মো. শামিমকে ভাতা কার্ড দেয়া সম্ভব হয়নি। সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) টিনা পালের সঙ্গে তার অফিসে যোগাযোগ করে না পেয়ে ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।