× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

এগিয়ে যাচ্ছে মহম্মদপুরের সাইকেল কন্যারা

বাংলারজমিন

মাহামুদুন নবী, মহম্মদপুর (মাগুরা) থেকে
১৭ জুলাই ২০১৯, বুধবার

চৈত্রের খাঁ-খাঁ রোদ, ঝড়-বৃষ্টি কিংবা তীব্র শীত বা গরম কোনো কিছুই থামিয়ে রাখতে পারেনি মহম্মদপুর উপজেলার রাজাপুর রাজপাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাইকেল বালিকাদের অগ্রযাত্রা। শিক্ষার আলো পেতে প্রতিদিন তারা ৫-৭ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ছুটে যাচ্ছে স্কুলে। রাজপাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বেশিরভাগ স্কুল বালিকারাই বাইসাইকেলে যাতায়াত করে থাকে। বিদ্যালয়ের প্রায় দুই শতাধিক ছাত্রী প্রতিদিন বাইসাইকেলে চড়ে স্কুলে যাওয়া-আসা করে। উপজেলা এমনকি জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক এই স্কুলের মেয়েরা সাইকেলে স্কুল করে। সাইকেলে স্কুলে আসার গল্প ও পথ  মসৃণ  বা সুখকর কোনটাই ছিল না। চলার পথে ছিল নানা ঝক্কিঝামেলা। ৪-৫ বছর আগে সাহসী দুই-তিনজন মেয়ে সাইকেল যাত্রা শুরু করে।
তাদের দেখাদেখি দিনকে দিন সাইকেল বালিকাদের সংখ্যা বাড়ছেই। প্রতিদিন স্কুল যাত্রায় আসা-যাওয়া মিলে পাঁচ থেকে সাত কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয় মেয়েরা। বেশির ভাগ দলবেঁধে যাতায়াত করে তারা নিয়মিত। এরা সবাই সাইকেল বালিকা নামেই পরিচিত সবার কাছে। মহম্মদপুর উপজেলার এ বিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু অথবা শেষ হলে এমন মনোরম দৃশ্য চোখে পড়ে। বিশেষ করে রাজপাট, গোবরনাদা, মালদ্বিপ, জগড়দিয়া, নিত্যনন্দপুর, নাওভাঙ্গা, রাড়িখালী, রাহাতপুর, কলমধারি, বনগ্রামসহ আরো কয়েকটি ইউনিয়ন থেকে বাইসাইকেলে স্কুল আসে মেয়েরা। তাদের বাবা-মার কেউ শ্রমিক, কেউ দিনমজুর, আবার কারও অভিভাবক স্থানীয় সঞ্চয় সমিতি থেকে কিস্তিতে টাকা নিয়ে মেয়েদের পড়াশোনার জন্য বাইসাইকেল কিনে দিয়েছেন।
রাজাপুর রাজপাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী দৃষ্টি মণ্ডল জানায়, পড়াশোনার অনেক খরচ। তবু তাদের পড়াশোনা করে অনেক বড় হতে হবে। তাদের এলাকা থেকে স্কুলে আসতে গাড়ি কিংবা ভ্যান-রিকশা পাওয়া যায় না। পেলেও আসতে যেতে প্রতিদিন ৪০-৫০ টাকা ভাড়া দিতে হয়। তাই বাইসাইকেল কিনে দিয়েছেন তার বাবা-মা। একই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী সাথী বলে, বিদ্যালয়ে আসতে যেতে প্রথম প্রথম বখাটে ছেলেদের উৎপাতসহ ছোটখাটো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতো। বিশেষ করে কাঁচা রাস্তা থাকায় বর্ষা মৌসুমে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে। তবে এখন সবই সয়ে গেছে।
৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী কানিজ বলে, আগে সাইকেল চালালে গ্রামের মানুষ বিভিন্ন কথা বলতো। এখন আর কেউ কিছু বলে না। কম সময়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করতে পারায় বাকি সময়টা পড়ার টেবিলে দিতে পারি।
রাজপাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত কুমার মণ্ডল বলেন, গ্রামাঞ্চলের মেয়ের আর পিছিয়ে নেই। তারাও এখন শিক্ষায় এগিয়ে গেছে। তারা সাইকেল চালিয়ে বিদ্যালয়ে আসে। নানা রকম সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ করছে। স্কুল শেষে পবিবারের বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করছে। তিনি বলেন, মেয়েরা সাইকেল চালিয়ে বিদ্যালয়ে আসা শুরুর প্রথম দিকে রাস্তায় বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিত, মানুষ হাসাহাসি করত। এখন আর কোনো সমস্যা হয় না। মেয়েরা যখন দলবদ্ধ হয়ে আসা-যাওয়া করে, তখন পথচারীরা রাস্তা ছেড়ে দাঁড়ায়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর