× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

চরম দুর্দিনে চলচ্চিত্রের এক্সট্রা শিল্পীরা

বিনোদন

কামরুজ্জামান মিলু
২১ জুলাই ২০১৯, রবিবার

চলচ্চিত্রের বর্তমান সময়টা ভালো না যাওয়ার কারণে এ মাধ্যমের এক্সট্রা শিল্পীদের দুর্দিন এখন চরমে। বিএফডিসিতে পার্কের মতো বানানো একটি জায়গায় প্রায় প্রতিদিনই অলস সময় কাটে তাদের। এফডিসিতে প্রবেশের পর এমনই দৃশ্য চোখে পড়ে। এক সময় বাংলা চলচ্চিত্রে পার্শ্ব বা এক্সট্রা চরিত্রে অভিনয় করা শিল্পীরাও অনেক ব্যস্ত থাকতেন। কাজ কমে যাওয়ার কারণে তারা এখন অনেকেই বেকার। মোছাম্মৎ কল্পনা তাদের মধ্যে একজন। তিনি জানান, ‘জমিদার বাড়ির মেয়ে’ সিনেমায় প্রথম অভিনয় করেন তিনি। এ পর্যন্ত অনেক ছবিতে নায়িকা অপু বিশ্বাস, পূর্ণিমার বান্ধবীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
বর্তমান সময়ে কাজের ব্যস্ততার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিনেমায় এখন আর কেউ ডাকে না আমাকে। খুব কম কাজ হচ্ছে এখন। কাজ নাই বললেই চলে। আমি তো এখন বেকার। একটি ছবিতে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত অভিনয় করলে বেশকিছু টাকা আয় হতো। আর নাচে কাজ করে দুই হাজার টাকা পর্যন্তও দিনে পেয়েছি। এখন তো কাজ বুইঝ্যা টাকা দেয়। অনেকদিন ধরে তো কোনো কাজই আমরা পাচ্ছি না। অসুখ-বিসুখে অনেকের দিন কেটে যাচ্ছে। আগের পরিচালকরাও নেই, প্রযোজকরাও নেই। মর্জিনা নামে পার্শ্ব বা এক্সট্রা চরিত্রে অভিনয় করা একজনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, কাজের অভাবে উপোস করেছি দিনের পর দিন। অভিনয় করলে ৫০০  থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত পেতাম একটা সময়। এর মধ্যে একেক শিফটের জন্য দালালের মাধ্যমে কাজ পেলে অর্ধেক দিতে হয় তাদের। এসব দিয়ে আমাদের কাছে আর টাকা তেমন থাকে না। রাবেয়া ৩৫ বছর ধরে এফডিসিতে কাজ করছেন। এখন নানি, দাদির চরিত্রের জন্য মাঝে মাঝে ডাক পান। তিনি বলেন, নায়ক জসিম, মান্না যতদিন ছিল আমাদের কোনো অভাব ছিল না। আর এখন কাজই দেয় না কেউ আমাদের। সংসারে অভাব থাকার কারণে এই কাজে এসেছিলাম। এখন সারা দিন ঘুইরাও কাজ পাই না। ষাটোর্ধ্ব নাজমা আক্তার এখনো এফডিসি’র আঙিনায় কাজের অপেক্ষায় থাকেন। দিনে এক হাজার টাকা পর্যন্ত আয় ছিল তার। তিনি জানান, আলেয়া বুড়ি, দিলবাহারী, শুকুর জাহানের অবস্থাও আমার মতো। তারাও নামেমাত্র বেঁচে আছে। নূপুর, সুফিয়া, রাবেয়া, আলেয়া, রেবেকা, জাহাঙ্গীর, সেলিম, মেরিসহ প্রায় তিনশ’ এক্সট্রা শিল্পীর জীবনকাহিনী এমনই মানবেতর। এক্সট্রা শিল্পীদের জুনিয়র আর্টিস্টও বলা হয়। তাদের নিয়ে জুনিয়র আর্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি সংগঠনও ছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই সংগঠনের এক নেতা বলেন, সাড়ে ৩০০ সদস্যকে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে সংগঠনটি। সামান্য আয়ের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ তুলে দিতে হয় দালাল ও চাঁদাবাজদের হাতে। যাদের পূর্ণ সদস্যপদ আছে তারা শিল্পী আর অন্যরা সহযোগী বা জুনিয়র শিল্পী। জুনিয়র শিল্পীরাও এখন শিল্পী সমিতির অন্তর্ভুক্ত। এখন ঈদ, পূজায় ব্যক্তিগতভাবে তাদের সাহায্য করে যাচ্ছি। অনেক শিল্পীকে ভাতাও দিচ্ছি। তারপরও সাহায্য করে আর কতদিন চলে একটা মানুষের সংসার। মানবেতর জীবনযাপন করতে করতে দুস্থ অবস্থায় এবং উন্নত চিকিৎসার অভাবে অনেক শিল্পী মারা যাচ্ছেন। চলচ্চিত্রের সুসময় না এলে তাদের এই অবস্থার পরিবর্তন হবে না বলেই জানান চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট অনেকে।

অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর