× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

অন্ধজনে আলো ফেরাতে অনন্য উদ্যোগ

এক্সক্লুসিভ

স্টাফ রিপোর্টার
২১ জুলাই ২০১৯, রবিবার

একদল যুবক বাঁচার তাগিদে ছুটে আসে শহরে। কাজ করে, জীবন গড়ে। কিন্তু মন পড়ে থাকে গ্রামে। গাঁয়ের মেঠোপথে। যেখানে কৃষক তার ঘাম ঝরিয়ে সন্তান মানুষ করতে শহরে পাঠায়। অথচ তাদের নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। দু’বেলা ঠিকমতো খাবার জোটে না। চিকিৎসায় মেলে না ওষুধ।
যুবকরা এইসব মানুষের জন্য কিছু করবেন এমন স্বপ্নের তাড়না নিয়ে কাজ শুরু করেন ২০১৬ সালে। সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুলে গড়ে তোলেন দুস্থ কল্যাণ ফাউন্ডেশন। সেই উদ্যোক্তাদের একজন আলাউদ্দিন সরকার। যিনি ঢাকায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রকাশনা বিভাগে কাজ করেন। তিনি বলেন কীভাবে তাদের উদ্যোগ আলোর মুখ দেখে। আলাউদ্দিন সরকার বলেন,
হাজারও জল্পনা-কল্পনা নিয়ে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ঈদে গ্রামে যাই। অনেক সাহস ও প্রত্যয় নিয়ে সন্ধ্যায় গ্রামের ১৪ জন চাকরিজীবী এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে বিষয়টি আলোচনা করি। মানুষের জন্য কিছু করা যায় কিনা? প্রশ্ন আসে টাকা কোথায় পাবো? যদি প্রতিদিন এক কাপ চা কম খেয়ে মাসিক ১০০/- টাকা করে মহৎ উদ্দেশে প্রদান করি এবং বছরের শেষে একজন অসহায় মানুষের চোখের আলো জ্বালাতে পারি সেটাইবা কম কিসের। কথাগুলো শুনে উপস্থিত সবাই বিষয়টির ওপর আগ্রহ প্রকাশ করেন। তাদের আগ্রহের পরিমাপ জানার জন্য ১ মাস পর আবার বসার কথা বললে সকলে ওই সময়ে দুস্থ কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সদস্য হওয়ার আগ্রহ ব্যক্ত করেন এবং সদস্য হন। দেখতে দেখতে দুস্থ কল্যাণ ফাউন্ডেশনের এখন তিন বছর পূর্ণ হতে চলেছে। সদস্য সংখ্যা হয়েছে ৩৩ জন। অনুদান প্রদান করেছেন ৪ জন। অসহায় মানুষের চোখের ছানি অপারেশনসহ আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন ১৮ জন।
এরই মধ্যে ২৮শে জুন সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুলে ‘দুস্থ কল্যাণ ফাউন্ডেশন’-এর আর্থিক সহযোগিতা এবং আরিফ মরিয়ম চক্ষু হাসপাতাল অ্যান্ড ফ্যাকো সেন্টার-এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে দুস্থ অসহায় গরিব মানুষের বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য চক্ষুশিবির অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ক্যাম্প শেষে জেলার ৩২ জন দৃষ্টিহীন মানুষকে ওইদিনই বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতি ছিলেন ‘দুস্থ কল্যাণ ফাউন্ডেশন’-এর উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান এবং প্রধান অতিথি ছিলেন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আব্দুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন আরিফ মরিয়ম চক্ষু হাসপাতাল অ্যান্ড ফ্যাকো সেন্টার-এর পরিচালক আরিফুল ইসলাম ও বোয়ালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে হাবিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে বলেন, গরিব, অসহায়, দুস্থ মানুষের চোখের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দেয়াই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আব্দুর রহমান বলেন, ‘মহানবীর অমিয়বাণী, ‘তোমরা পৃথিবীতে বিচরণকারীদের যদি ভালোবাসো তাহলে আসমানবাসীরাও তোমাদের ভালোবাসবেন।’ বিশ্বনবীর এই বাণীকে পুঁজি করে উত্তর পুস্তিগাছা গ্রামের মরহুম আব্দুল জব্বার সরকারের পুত্র মো. আলাউদ্দিন সরকার-এর প্রস্তাবনায় গ্রামের কিছু ক্ষুদ্র চাকরিজীবী ও ব্যবসায়ীদের সুচিন্তিত মতামতের ভিত্তিতে ফাউন্ডেশন যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে মানুষের দৃষ্টি দানের মতো মহতী কল্যাণমুখী কাজ করে সকলের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘দুস্থ কল্যাণ ফাউন্ডেশন-এর এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ বিবেকবান মানুষের হৃদয়ের ভেতর পুঞ্জীভূত সুপ্ত বিবেককে নাড়া দেয়ার মতো ঘটনা।
আমন্ত্রিত অতিথি সলংগা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) হাবিবুল্লাহ বলেন, ছোটবেলায় বাপ-দাদাদের দেখেছি এরকম মহতী জনকল্যাণমূলক কাজে অংশগ্রহণ করতে। আজকের মহৎ কর্মকাণ্ড দেখে আমি মুগ্ধ এবং বিমোহিত। এই ফাউন্ডেশনের সদস্য হতে পারলে আমি নিজেকে গর্বিত মনে করবো।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর