কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে জহিরুল আলম ভুঁইয়া বাবু (২২) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বাদ আসর নামাজে জানাজা শেষে তাকে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়। নিহত বাবু উপজেলার চিওড়া ইউনিয়নের সাস্তানগর গ্রামের ভুঁইয়া বাড়ির মরহুম শাহ আলম ভুঁইয়ার ছোট ছেলে। মাত্র এগার দিন আগে তার বাবা লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন বাবুর আত্মীয় এম এ কুদ্দুস।
নিহত বাবুর দাদা মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান ভুঁইয়া, জেঠা পেয়ার আহমদ ভুঁইয়া ও চাচা আবদুল কাদের জানান, লিভার
সিসোসিস রোগে আক্রান্ত হওয়ায় শাহ আলম ভুঁইয়াকে(৬০) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় বিশ দিন চিকিৎসা দেয়া হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শাহ আলম ভুঁইয়ার সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নেয় ছোট ছেলে জহিরুল আলম ভুঁইয়া বাবু। সে ঢাকায় একটি কোম্পানীতে চাকরি করতো।
হাসপাতালে বাবুর হাতে একটি মশা কামড় দেয়। এতে তাঁর হাত কিছুটা ফুলে যায়। বিষয়টি সে পরিবারের অন্য সদস্যদের জানায়। গত ৪ আগস্ট বোন রুপার পূর্ব নির্ধারিত বিয়েতেও পিতাকে নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন বাবু। পরদিন ৫ আগস্ট সোমবার বিকেলে বাবুর পিতা শাহ আলম ভুঁইয়ার মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার সকালে নামাজে জানাযা শেষে তাকে গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়। ৭ আগস্ট বুধবার বাবুর জ্বর বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর ডেঙ্গু ধরা পড়ে। ফলে বাবুকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিন দিন চিকিৎসার পর বাবুর অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। একদিন পর তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়ায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার ভোরে জহিরুল আলম ভুঁইয়া বাবুর মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর খবরে যেন পরিবারের উপর আকাশ ভেঙে পড়ার মত অবস্থা। বাদ আসর নামাজে জানাযা শেষে তাকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে স্বামীর মৃত্যুর এগার দিন পর ছোট ছেলের মৃত্যুতে বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন ছরুরা বেগম। একইভাবে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বাবুর ভাই মিলন, রাজিব, সজিব, বোন টুম্পা ও রুপা। শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে ভুইয়া বাড়িসহ পুরো গ্রামের লোকজন।
এ ব্যাপারে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাসিবুর রহমান জানান, জ্বর হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এতে গাফেলতি করবেন না। বিশেষ করে ঢাকা থেকে জ্বরে আক্রান্ত কেউ হলে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া হাসপাতাল না ছাড়াই উত্তম।