× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

তারাগঞ্জে জলমহালে বাণিজ্য /বঞ্চিত প্রকৃত মৎস্যজীবীরা

বাংলারজমিন

তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
১৮ আগস্ট ২০১৯, রবিবার

তারাগঞ্জে জলমহাল লিজ নেয়ার নামে একটি সমিতির বাণিজ্য চলছে। বঞ্চিত হচ্ছে প্রকৃত মৎস্যজীবীরা। এসব বাণিজ্যের নেপথ্যে রয়েছে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাসহ অনেকে। উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, তারাগঞ্জে মোট ১০টি জলমহাল রয়েছে। প্রতিবারের ন্যায় এবারো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভূমি) জলমহাল ইজারার (১৪২৬-১৪২৮ বাংলা) জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তাদের মধ্যে পুটিমারী বিল, ডাংগীর বিল, হাতখোপা, ফলিমারী বিল, সিংগীমারী বিল, বাইস পুকুর ও শুকান দিঘী অন্যতম। এর মধ্যে পুটিমারী ও ডাংগীর বিল একমাত্র ও সর্বোচ্চ ডাককারী হিসেবে গত ০৭/০৩/২০১৯ইং তারিখে উপজেলা জলমহাল কমিটির সিদ্ধান্তে ঘনিরামপুর বড়গোলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লি.-এর নামে ইজারা প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উক্ত তারিখে সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয় থেকে সমিতির সভাপতি বরাবর বিল দুইটির প্রথম কিস্তির টাকা প্রদানের জন্য চিঠি প্রদান করেন।
চিঠি প্রাপ্তির পর সমিতির সভাপতি বিল দুইটি উপেন চন্দ্র ও সম্রাট নামের দুইজনের কাছে বাৎসরিক চুক্তি করেন। চুক্তি অনুযায়ী তাদের প্রথম কিস্তির টাকা প্রদান করতে বলেন। গত ২৩/০৬/২০১৯ইং তারিখে ডাংগীর বিল ট্রেজারি চালান বাবদ শ্রী উপেন চন্দ্র  সোনালী ব্যাংক তারাগঞ্জ শাখায় যার ট্রেজারি চালান নং ৪১-এর প্রথম কিস্তি জমা বাবদ ৩৩৫০ টাকা, ৪২নং চালানে ১৫% ভ্যাট বাবদ ১৫০৭.৫০ টাকা এবং ৪৩নং চালানের ৫% আয়কর জমা বাবদ ৫০২ টাকা জমা দেন। ঠিক একইভাবে ২৭/০৬/২০১৯ইং তারিখে পুঁটিমারী বিল বাবদ সম্রাট ট্রেজারি চালান নং ১৯৪-এর প্রথম কিস্তি জমা বাবদ ২৫০৩৩ টাকা, ১৯৫নং চালানে ৫% আয়কর জমা বাবদ ৩৭৫৪.৯৫ টাকা, ১৯৬নং চালানে ভ্যাট বাবদ ১১২৬৪.৮৫ টাকা মাধ্যমে সোনালী ব্যাংক তারাগঞ্জ শাখা প্রদান করেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যক্তিদয় ঘনিরামপুর বড়গোলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লি.-এর কোনো সদস্য নয়। এ বিষয়ে উপেন চন্দ্রের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, সমিতিতে আমার কোনো সদস্য পদ নেই, সভাপতি (দেবাশীষ) আমার কাছ থেকে ৬০০০/- (ছয় হাজার) টাকা নিয়ে আমাকে বিলটি পাইয়ে দেন। চালানের টাকা প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমি আমার টাকা চালানের মাধ্যমে ব্যাংকে জমা দিয়েছি। তার সঙ্গে বাৎসরিক চুক্তি হয়েছে তাই। সম্রাটের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, বাৎসরিক ৩০,০০০/- (ত্রিশ হাজার) টাকা চুক্তি সাপেক্ষে পুটিমারী বিলটি আমাকে প্রদান করেছেন। তাই আমি আমার নামে প্রথম কিস্তির টাকা জমা দিয়েছি। গত ০৬/০৮/২০১৯ইং তারিখে উপজেলা নির্বাহী কার্যালয়ে জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্তে ডাংগীর বিল বাতিল হলে দিশাহারা হয়ে পড়েন দিনমজুর শ্রী উপেন চন্দ্র। তিনি আরো বলেন, বাতিল হলে দুইটি বিলই বাতিল হবে। এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ঘনিরামপুর বড়গোলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লি.-এর সভাপতি দেবাশীষের সঙ্গে মুঠোফোনে ফোন দেয়া হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে লাইনটি কেটে দেন। সরজমিন গতকাল গিয়ে জানা যায়, পুটিমারী বিলে সম্রাট মাছ চাষ করছে। এলাকাবাসী জানান গরিব মানুষের জন্য সরকার বিল বরাদ্দ দিলেও কিছু অসাধু কর্মকর্তা টাকা খেয়ে নয়ছয় করে বিলগুলো প্রকৃত মৎস্য চাষিদের না দিয়ে টাকার বিনিময়ে মৎস্যচাষি নামধারী ধনীদের বিলগুলো প্রদান করেন। যার প্রকৃত প্রমাণ এই পুটিমারী বিল।
এসব বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের (ভারপ্রাপ্ত) সঙ্গে এ প্রতিবেদকের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন- ফোনে এসব বিষয়ে বলা সম্ভব নয়, সাক্ষাতে এসে কথা বলেন, বলে মুঠোফোনের লাইনটি কেটে দেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি রাগান্বিত হয়ে বলেন, কেউ অভিযোগ করলে আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর