× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

একজন শর্মিলী আহমেদ

বিনোদন

মুজাহিদ সামিউল্লাহ
২০ আগস্ট ২০১৯, মঙ্গলবার

এক সময়ের রূপালী পর্দার নায়িকা, পরবর্তীতে ছোট পর্দার জনপ্রিয় মা, দাদী কিংবা ভাবী- এসব ধরনের চরিত্রেই সাবলীল অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের মনে নিজের শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করে রেখেছেন শর্মিলী আহমেদ। অভিনয়ের রঙিন ভুবনে তার পথচলা বেশ দীর্ঘ। এখনো তিনি তার অভিনয় জাদু দিয়ে বাংলার কোটি দর্শককে মুগ্ধ করে চলেছেন। ১৯৬৪ সালে তিনি তার অভিনয় পেশা শুরু করেন। সূচনা হয়েছিল বেতারের মাধ্যমে। তিনি বাংলাদেশের প্রথম ধারাবাহিক নাটক ‘দম্পতি’-তে অভিনয় করেছেন। ১৯৭৬ সালে মোহাম্মদ মহসিন পরিচালিত ‘আগুন’ সিনেমায় মায়ের ভূমিকায় প্রথম অভিনয় করেন। সেই থেকে আজও তিনি নিরলসভাবে মমতাময়ী মা চরিত্রে অভিনয় করে চলেছেন।
শর্মিলী আহমেদ অভিনয়ের বাইরে বেশকিছু পণ্যের বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেল হয়েছেন। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো কোনো টেলিভিশন অনুষ্ঠান উপস্থাপনাও করেছেন তিনি। এটি হচ্ছে এ বছর ‘বিশ্ব মা দিবস’ উপলক্ষে একুশে টেলিভিশনে প্রচারিত অনুষ্ঠান ‘আমার মা আমার পৃথিবী’। অনুষ্ঠানটিতে অতিথি ছিলেন রিচি সোলায়মান, আজমেরী হক বাঁধন, দীপা খন্দকার ও ফারজানা চুমকী। গুণী এই শিল্পী অসংখ্য চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ‘দহন’ ছবিতে অনবদ্য অভিনয়ের জন্য ১৯৮৫ সালে বাচসাস পুরস্কার পান তিনি। এর বাইরেও এ অভিনেত্রী বিভিন্ন সংগঠন থেকে অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন। সেসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ঋতিক ঘটক স্মৃতি পুরস্কার, অনন্যা পুরস্কার ও আলোকিত নারী পুরস্কার। শর্মিলী আহমেদ যখন পর্দায় মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেন, তখন দর্শকরা তার মধ্যে নিজ মায়ের অবয়ব খুঁজে পান। গুণী এই শিল্পী যখন কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে হাজির হন, তখন অনেক দর্শক তাকে তাদের ভালোবাসার অনুভূতি প্রকাশ করে শ্রদ্ধা জানান। অনেকে আবেগী হয়ে যান তাকে কাছে পেয়ে। মিষ্টভাষী এই শিল্পী ব্যাক্তিজীবনে এক মেয়ে তনিমার মা। তার স্বামী প্রয়াত ইঞ্জিনিয়ার রাকিব উদ্দিন আহমেদ  সৌখিন চিত্রগ্রাহক ও পরিচালক ছিলেন। তিনি অসংখ্য সরকারি ডকুমেন্টারি নির্মাণ করেছেন। তিনি ‘পাঞ্চি বাউরা’ ও ‘পলাতক’ নামে দু’টি সিনেমা পরিচালনা করেন। ছোট পর্দার আরেক জনপ্রিয় মুখ ওয়াহিদা মল্লিক জলি তার ছোট বোন। শর্মিলী আহমেদ ১৯৪৭ সালে মুর্শিদাবাদের বেলুর চাক  গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রাজশাহী পিএন গার্লস স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। এই গুণী শিল্পী যখন অভিনয় শুরু করেন তখন এদেশে ছিল উর্দু ছবির জোয়ার। শর্মিলী আহমেদও অভিনয় করেন ‘জুগনু’, ‘পাঞ্চি বাউরা’সহ বেশ কিছু উর্দু ছবিতে। বাংলা চলচ্চিত্রে তার অভিষেক হয় প্রখ্যাত পরিচালক সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘আবির্ভাব’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে। সেই সময় সুপার-ডুপার হিট হয় সিনেমাটি। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ব্যস্ত হয়ে পড়েন চলচ্চিত্র অভিনয় নিয়ে। একে একে ‘আগুন’, ‘রূপালী সৈকতে’, ‘এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী’, ‘আকর্ষণ’সহ প্রায় ১৫০টি সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। চলচ্চিত্রের প্রতি তার রয়েছে অন্যরকম ভালোবাসা। দেশীয় চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, সময়ের পরিবর্তনের হাওয়া চলচ্চিত্রেও লেগেছে। দেশীয় চলচ্চিত্রে বর্তমানে ব্যাপক মন্দাবস্থা চলছে। খুবই কষ্ট লাগে এ অবস্থা দেখে। অনেক তরুণ মেধাবী নির্মাতা এখন সিনেমা তৈরি করছেন। কিন্তু তারা আমার মতো অনেক বর্ষীয়ান অভিনেতা-অভিনেত্রীকে আর ডাকেন না। শর্মিলী আহমেদ জানান, আবারো সিনেমায় অভিনয়ের কথা হয়েছে পরিচালক সোহানুর রহমান সোহানের সঙ্গে। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গল্প নিয়ে তিনি সরকারি অনুদানে একটি ছবি নির্মাণ করবেন। সেই ছবিতে দাদীর চরিত্রে অভিনয়ের কথা রয়েছে। এদিকে তার অভিনযে বর্তমানে প্রচার হচ্ছে এসএ টিভিতে ‘তুমি আছো তাই’, আরটিভিতে ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’, বাংলাভিশনে ‘লাকি থার্টিন, ‘ঘরে বাইরে’ ও ‘জায়গীর মাস্টার’ নাটকগুলো।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর