× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পিয়াজ ও রসুনের ঝাঁজে কাঁদছে ক্রেতা!

এক্সক্লুসিভ

ইব্রাহিম খলিল, চট্টগ্রাম থেকে
২৪ আগস্ট ২০১৯, শনিবার

বাজেটে আগাম শুল্ককরের জেরে একদফা দাম বেড়েছিল পিয়াজ ও রসুনের। সেই সময় ২০ টাকার পিয়াজ একলাফে হয়ে যায় কেজিপ্রতি ৩২ টাকা। ৭০ টাকার রসুন হয়ে যায় ১৩০ টাকা।
সেই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামের সবচেয়ে পাইকারি ভোগ্যপণ্যের বাজার খাতুনগঞ্জে আরো ১৬ টাকা বেড়ে শুক্রবার পর্যন্ত প্রতি কেজি পিয়াজের দর ঠেকেছে ৪৮ টাকায়। রসুন আরো ৩০ টাকা বেড়ে দর ঠেকেছে ১৬০ টাকায়।
কোরবানির ঈদের অন্তত ১৫ দিন আগে থেকে এ পর্যন্ত এভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পিয়াজ ও রসুনের দাম। এতে রীতিমতো কাঁদছেন ক্রেতারা। অথচ প্রশাসনের কোনো নজর নেই এতে।
এ সুযোগে পিয়াজ ও রসুনের দাম বাড়ানো নিয়ে হোলিখেলায় মেতেছেন আড়তদাররা।
অবশ্য এর পেছনে সরবরাহ সংকটের কথা বলছেন আড়তদাররা। যদিও সত্য নয় তাদের দাবি। বরং সিন্ডিকেট করেই পিয়াজের দাম বাড়াচ্ছেন তারা। একাধিক ব্যবসায়ীর সঙ্গে আলাপকালেও মিলেছে এ তথ্য।
ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে দেশে তাহেরপুরী, বারি-১ (তাহেরপুরী), বারি-২ (রবি মৌসুম), বারি-৩ (খরিপ মৌসুম), স্থানীয় জাত ও ফরিদপুরী পেঁয়াজ উৎপাদন করা হয়। ফলে বছরজুড়েই কোনো না কোনো জাতের পিয়াজ উৎপাদন হচ্ছে।
দেশে বছরে পিয়াজের চাহিদা ২২ লাখ টন। এর মধ্যে ১৮ লাখ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয়। আর ভারত থেকে আমদানি করা হয় বাকি চার লাখ টন। আমদানিকৃত এই পিয়াজই দর ওঠানামায় বড় ভূমিকা রাখে। যেখানে আমদানিকারকদের কারসাজিই মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
আড়তদারদের দেয়া তথ্যমতে, দিনাজপুরের হিলি, সাতক্ষীরার ভোমরা ও চাঁপাই নবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে সামপ্রতিক সময়ে পিয়াজের সরবরাহ কমে গেছে। কোরবানির কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে এখন পর্যন্ত পিয়াজ ও রসুন আমদানিতে ধস নেমেছে।
এছাড়া বাজেটে পিয়াজ আমদানিতে ব্যাংক সুদের হার সাড়ে ১২ শতাংশ থেকে ১৪ শতাংশ করা হয়েছে। নতুন করে ৫ শতাংশ অগ্রিম কর সংযোজন করা হয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে পিয়াজ ও রসুনের দাম বাড়ছে স্থানীয় বাজারে।
খাতুনগঞ্জ ভোগ্যপণ্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সমপাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস দাবি করেন, স্থলবন্দরগুলো দিয়ে পিয়াজ আমদানি কমে গেছে। ফলে পিয়াজ ও রসুনের দাম বাড়ছে। সরবরাহ স্বাভাবিক হলে দাম আবারও কমে যাবে।
তিনি বলেন, সিন্ডিকেট কারসাজির বিষয়টি সঠিক নয়। এসব মানুষের মনগড়া কাহিনী বলে দাবি করেন তিনি।
কিন্তু সরজমিন ব্যবসায়ীরা জানান, কোরবানির ঈদের আগে আমদানিকারকরা প্রচুর পিয়াজ ও রসুন আমদানি করেছে। এরপরও কিছু সংখ্যক পিয়াজের আমদানিকারক সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সরবরাহ সংকট তৈরি করে প্রতিনিয়ত পিয়াজের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছেন।
নগরীর কাজীর দেউড়ী বাজারের খুচরা পিয়াজ ও রসুন ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেন বলেন, পাইকারি রেটে কিনতে এসেও দরদাম নিয়ে চিন্তায় থাকতে হয়। দুই পয়সা লাভ করতে চাইলে একটু তো দাম বেশি হবেই।
তিনি জানান, শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত খুচরা পর্যায়ে ৫২-৫৫ টাকায় প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রয় হচ্ছে। একইভাবে প্রতি কেজি রসুন বিক্রয় হচ্ছে ১৬০ টাকায়। ক্রেতা সাধারণের মতে, কোরবানির ঈদের আগে প্রতিকেজি পিয়াজ ২০ টাকায় বিক্রয় হয়েছে। প্রতিকেজি রসুন বিক্রয় হয়েছে ৭০ টাকায়। এরপর লাফিয়ে লাফিয়ে প্রতিকেজি পিয়াজের দাম ৩৫ টাকা বেড়ে এখন ৫৫ টাকা এবং রসুনের দাম ৯০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকায় বিক্রয় হচ্ছে। যা সত্যিই বিস্ময়কর। আর এই দামে পিয়াজ ও রসুন কিনতে গিয়ে সাধারণ ক্রেতারা কাঁদছে।
ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন পিয়াজ ও রসুনের দাম বৃদ্ধির জন্য প্রশাসনের কোনো রকম মনিটরিং না থাকাকে দায়ী করেছেন।
তিনি বলেন, রমজানের ঈদে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করলেও কোরবানির ঈদকে ঘিরে পিয়াজ ও রসুনের দাম বাড়তে থাকলেও এখনো পর্যন্ত কোনো অভিযান পরিচালনা করা হয়নি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াছ হোসেন বলেন, পিয়াজ ও রসুনের দাম বাড়ার কারণে ক্রেতা সাধারণ হিমশিম খাচ্ছেন। দাম বাড়ার পেছনে আড়তদার ব্যবসায়ীদের কারসাজির বিষয়ে আমরা জেনেছি। পিয়াজ ও রসুনের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলা প্রশাসন খুব শিগগিরই ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে মাঠে নামবেন বলে জানান তিনি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর