× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ডনাল্ড ট্রাম্প কেন জার্মানিকে উপেক্ষা করছেন?

দেশ বিদেশ

মানবজমিন ডেস্ক
২৬ আগস্ট ২০১৯, সোমবার

ফ্রান্সে জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এরপরই তার পোল্যান্ড সফরে যাওয়ার কথা। কিন্তু অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন এজন্য যে, কেন তার সফর সূচিতে বার্লিনে চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ নেই। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই অবন্ধুত্বসুলভ আচরণ বিস্তৃত কৌশলের অংশ।
এ খবর দিয়ে অনলাইন ডয়চে ভেলে লিখেছে, ইউরোপ সফরে ফিরেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ফ্রান্সে জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের উদ্দেশে তিনি শুক্রবার যাত্রা শুরু করে পৌঁছে যান শনিবার। আগস্টের শেষে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৮০তম বার্ষিকীর স্মরণে পোল্যাল্ড যাত্রা করবেন। যদিও তিনি একেবারে দরজার কাছাকাছি, তবু এই সফরে অথবা দৃশ্যমান নিকট ভবিষ্যতে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মারকেলের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হওয়ার কোনো উদ্যোগ নেই।
দু’বছরের বেশি সময়ের মধ্যে জার্মানিতে শুধু একবার মারকেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে ট্রাম্পের। সে ২০১৭ সালে হামবুর্গে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে। কিন্তু কখনোই মারকেলের অতিথি হিসেবে বার্লিনে তাদের সাক্ষাৎ হয় নি।
ইস্যু কি?
ইস্যুর তালিকা অনেক দীর্ঘ। অনেক ইস্যু আছে, যার জন্য দুই দেশ একে অন্যের চোখে চোখ রাখে না। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিরক্ষা ব্যয় থেকে শুরু করে ইরান ইস্যুতে জার্মানির অবস্থান। রাশিয়ার সঙ্গে নর্ড স্ট্রিম-২ গ্যাস পাইপলাইনে সমর্থন, বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্পে চীনকে নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে মারকেলের প্রতিরোধ। রাজনৈতিক ইস্যু ছাড়াও, যখন ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ হয় তখন ট্রাম্প ও মারকেলের মধ্যে সম্পর্কের ভালো রসায়ন নেই বলেই জানেন সবাই। এমনকি এই গ্রীষ্মে ডি-ডে পালনের অনুষ্ঠানে মারকেলের সঙ্গে হাত মেলানোর প্রস্তাবও দেননি ট্রাম্প।
জার্মান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের যুক্তরাষ্ট্র বিষয়ক বিশেষজ্ঞ জোসেফ ব্রামল বলেন, জার্মানির প্রতি এই তিরস্কার এবং গ্রিনল্যান্ড কেনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান ইস্যুতে এই সেপ্টেম্বরে ট্রাম্পের ডেনমার্ক সফর বাতিল হলো তার ‘ট্রানজ্যাকশনাল লিডারশিপ স্টাইল’। তিনি নিজেকে একজন বস হিসেবে দেখেন। নিজেই লক্ষ্য পরিষ্কার করেন। দাবি উত্থাপন করেন। কিন্তু অধীনস্তরা যদি তার চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয় তাহলে তাদেরকে তিনি সুবিধা দিয়ে বা প্রতিকূলতা দিয়ে পুরস্কৃত করেন বা শাস্তি দেন। এ জন্যই উপেক্ষার মাধ্যমে জার্মানি ও ডেনমার্ককে শাস্তি দেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে বিভিন্ন পণ্যে ছাড় দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সন্তুষ্টি অর্জনে সক্ষম হয়েছে পোল্যান্ড।
জার্মানির চেয়ে পোল্যান্ডের প্রভাব বেশি
যখন ওয়াশিংটনে বার্লিনের প্রভাব দুর্বল হয়েছে, তখন ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় নিজেদের ট্রান্স-আটলান্টিক অঞ্চলে প্রভাব উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি দেখতে পেয়েছে ওয়ারশ। জার্মানির সরকারি প্রচার মাধ্যম এআরডি’কে ওয়াশিংটনভিত্তিক হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের নিল গার্ডিনার বলেছেন, জার্মানির চেয়ে পোল্যান্ডের বৃহত্তর প্রভাব রয়েছে। বৃটেনের পর যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে আমি এখন বর্ণনা করবো পোল্যান্ডকে। জোসেফ ব্রামল নিজে ‘ইউএস এক্সপার্টি’ নামে একটি বিশ্লেষণমূলক ব্লগ পরিচালনা করেন। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, বর্তমানে শক্তিশালী কূটনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে সতর্ক হওয়া উচিত পোল্যান্ড ও অন্যদের। তিনি ডয়েচে ভেলে’কে বলেন, পূর্ব ইউরোপে বর্তমানে ট্রাম্পের ‘বন্ধুদের’ বোকা বানানো উচিত নয়। সহসাই অথবা তার পরে যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-কৌশলগত কারণে, চীনের বিস্তৃত কার্যক্রমকে রোধ করার জন্য রাশিয়ার সঙ্গে স্বার্থের পুনর্মিলন ঘটানোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেবে যুক্তরাষ্ট্রের।
ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বিভক্ত করার চেষ্টা
ব্রাসেলসের সঙ্গে সংঘাত আছে এমন দেশগুলোতে যখন বিশেষ দৃষ্টি দেয়া হচ্ছে, তখন ইউরোপের অর্থনীতির পাওয়ার হাউজকে একটি ‘ফ্লাইওভার কান্ট্রি’র (যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলের রাজ্যগুলোকে ফ্লাইওভার কান্ট্রি বলে বর্ণনা করা হয়) মতো দেখাতে আরো বৃহত্তর কৌশল কাজ করে। তা হলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভক্তি আরো বিস্তৃত করা। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পিটারসন ইন্সটিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিকসের সিনিয়র ফেলো জ্যাকব কির্কগার্ড এআরডি’কে বলেন, ট্রাম্পের ইউরোপ সফর ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বিভক্ত করার একটি সুস্পষ্ট প্রচেষ্টা। এরই মধ্যে তার প্রশাসন তা খুব বেশি পরিষ্কার করেছে। এটাই তারা বিশ্বাস করে। তারা বহুত্ববাদের বিরোধী। সুদওয়েস্ট প্রেস পত্রিকাকে জার্মান সরকারের ট্রান্স-আটলান্টিক সমন্বয়কারী পিটার বিয়ার বলেন, যদিও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা করা উচ্চ অগ্রাধিকারে রয়েছে, কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিষয়ে ওয়াশিংটনের অবস্থান তা এই ব্লকের ঐক্য ভঙ্গের জন্য হুমকি। ব্রেক্সিট বিষয়ে কট্টর অবস্থানে আছেন যারা তাদেরকে বার বার সমর্থন দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি সমর্থন দিয়েছেন বৃটেনের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে। অন্যদিকে জার্মানিতে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রিচার্ড গ্রিনেল সম্প্রতি হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, জার্মানি থেকে নিজেদের সেনা তুলে নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। এর পরিবর্তে তাদেরকে মোতায়েন করা হতে পারে পোল্যান্ডে। ট্রাম্প প্রশাসনের দিকে ইঙ্গিত করে পিটার বিয়ার বলেন, তার সরকার শুরু থেকেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ফাটল ধরানোর চেষ্টা করছে। বিষয়টা আমাদের গুরুত্বসহকারে নেয়া উচিত।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর