ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সদর ইউনিয়নের হাজি ডাঙ্গী গ্রামের আবদুল কাদেরের চার সন্তানের মধ্যে সবার বড় লোকমান। জন্মের দুই বছর পর থেকেই দৃষ্টি হারিয়েছেন লোকমান। কিন্তু তারপরও থেমে থাকেননি তিনি। সব প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে এগিয়ে চলেছেন তিনি। দৃষ্টিশক্তি সম্পন্নরা যা করতে পারেন না, সেসব কাজ খুব অনায়াসেই করে চলেছেন তিনি।
লোকমানের বয়স ৪৮। তার ঘরে ৫ বছর বয়সী এক কন্যা সন্তান আছে। তিনি প্রতিদিন বড় বড় গাছ কাটা, নারকেল পাড়া, মাছ ধরা, আখ কাটাসহ যেকোনো কাজ অনায়াসেই করতে পারেন। অদম্য প্রতিভা, মনোবল ও আত্মবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে অন্যের মুখাপেক্ষী না হয়ে এগিয়ে চলছেন তিনি।
এ থেকেই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে চলে তার জীবন। তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়- তিনি বাড়ির পাশের বড় একটি কড়ইগাছে ওঠে সাবলীলভাবে গাছ কাটছেন। লোকমান জানান, দুই চোখে দৃষ্টি না থাকা সত্ত্বেও যেকোনো কঠিন কাজই হোক না কেন, খুব সহজেই নিখুঁত ও দক্ষতার সঙ্গে করতে পারেন তিনি।
লোকমানের মা ছালেহা বেগম বলেন, জন্মের দুই বছর পর থেকেই বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতার কারণে লোকমানের দুটি চোখ সম্পূর্ণভাবে অন্ধ হয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, তারা গরিব। টাকার অভাবে ছেলের চোখের চিকিৎসা করাতে পারছেন না। চিকিৎসা করাতে পারলে ওর চোখ দুটো ভালো হয়ে যেত।
অন্ধ হওয়া সত্ত্বেও লোকমানের এমন কাজে হতবাক এলাকাবাসীসহ অনেক মানুষ। তার মনোবলের প্রশংসা করে একটি উদাহরণ হিসেবেই দেখছেন অনেকে।