যন্ত্রপাতি ক্রয় দেখিয়ে সরকারের সাড়ে ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল দুদকের রংপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. ফেরদৌস রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলায় আসামি করা হয়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মো. নুর ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সারোয়াত হোসেন, বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিকেল কোম্পানির মালিক মো. জাহের উদ্দিন সরকার, তার পিতা মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল-এর স্বত্বাধিকারী মো. আব্দুস সাত্তার সরকার, জাহের উদ্দিনের ছেলে আহসান হাবীব এবং বোন জামাই ইউনির্ভাসেল ট্রেড করপোরেশনের মালিক আসাদুর রহমান।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, রংপুর মেডিকেল কলেজে ভারী যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদির প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন না নিয়ে তা ক্রয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়। এজন্য অধ্যক্ষ ডা. মো. নুর ইসলাম কর্তৃক বিধি বহির্ভূতভাবে বিভিন্ন কমিটি গঠন করে এবং যথাযথ চাহিদা ও সুনির্দিষ্টকরণ ছাড়াই দরপত্র আহবান করা হয়।
পরবর্তীতে পছন্দের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানিকে ২০১৮ সালের ২৩শে জুন কার্যাদেশ প্রদান করেন। কার্যাদেশ প্রাপ্তির পর শর্তানুযায়ী যন্ত্রপাতি সরবরাহ না করলেও নিজে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে বিল পাস করিয়ে ৪ কোটি ৪৮ লাখ ৮৯ হাজার ৩০০ টাকা টাকা আত্মসাৎ করেন।
দুদকের অনুসন্ধানে দেখা যায়, আসামিরা শর্তানুযায়ী যন্ত্রপাতি সরবরাহ না করে অপ্রয়োজনীয় ও নিম্নমানের ব্যবহার অনুপযোগী যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছে। এখানে ডা. মো. সারোয়াত হোসেন একাই বাজার দর কমিটি, দরপত্র উন্মুক্তকরণ কমিটি, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি ও সার্ভে কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আত্মসাতে সহযোগিতা করেছেন। আর দরপত্রে অংশগ্রহণকারী ও দরপ্রস্তাব দাখিলকারী বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মো. জাহের উদ্দিন সরকার, তার পিতা মার্কেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মো. আব্দুস সাত্তার সরকার, ছেলে আহসান হাবীব এবং বোন জামাই আসাদুর রহমানের পরিচয় গোপন করে সিন্ডিকেট করে সাজানো দরপত্র দাখিল করে আত্মসাতে যোগ দিয়েছেন। তাই দুদক আসামিদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলাটি দায়ের করে।