রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে নাসা গ্রুপের গার্মেন্টের সামনে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। বুধবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত অবস্থানের পর গতকাল ভোর থেকে আবারো তারা সড়কে অবস্থান নেন। পরে পুলিশের চেষ্টায় দুপুর ১টার দিকে শ্রমিকরা সড়ক ছেড়ে যান। এদিকে দীর্ঘ সময় অবরোধের কারণে তেজগাঁওয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকা সবকটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শ্রমিকরা জানান, গার্মেন্টে নিয়মবহির্ভূত শ্রমিক ছাঁটাই ও নির্যাতনের প্রতিবাদে তাদের এই অবস্থান। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল হক জানান, বুধবার রাত ১১টার পর শ্রমিকরা গার্মেন্টের আশপাশে অবস্থান নেন। উত্তেজিত শ্রমিকরা গার্মেন্টসে ভাঙচুর করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। গত দু’দিন শ্রমিক ছাঁটাই নিয়ে তাদের এই অসন্তোষ।
সকাল থেকে তারা আবারো সড়কে অবস্থান নেন।
এদিকে, নাসা গার্মেন্টের শ্রমিক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বেতনসহ অন্যান্য আর্থিক সুবিধা পরিশোধ না করেই আমাদের ছাঁটাই করা হয়েছে। অনেকে ছাঁটাইয়ের পর গার্মেন্টস থেকে বের না হতে চাইলে তাদের মারধর করা হচ্ছে। মো. আজাদ নামের এক শ্রমিক বলেন, শ্রম আইন অনুযায়ী পাওনা পরিশোধ না করা হলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
ভোর থেকে শুরু হওয়া এই সড়ক অবরোধ দুপুর ১টার দিকে গিয়ে স্থগিত হয়। এ সময় শ্রমিকরা সড়ক থেকে সরে দাঁড়ান। ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক উত্তর বিভাগের তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল জোনের সহকারি কমিশনার (এসি) হামিদুল হক বিশ্বাস বলেন, সপ্তাহের শেষ দিন হওয়ায় এমনিতেই সড়কে যানবাহনের চাপ সামাল দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়েছে। সেখানে সকাল ৯টা থেকে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিল একটি গার্মেন্টেসের শ্রমিকরা। ক্রাইম ডিভিশন ও ট্রাফিক পুলিশের চেষ্টায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরানো গেছে। দুপুর ১টা থেকে রাস্তায় যান চলাচল ফের শুরু হয়েছে। এর আগে বুধবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত অবস্থানের পর গতকাল ভোর থেকে আবারও সড়কে অবস্থান নেন শ্রমিকরা। সকালে পোশাক শ্রমিক ও পুলিশ মুখোমুখি অবস্থানে ছিল। প্রথমে তাদের অবস্থান ছিল তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের লাভ রোডে। পরে সকাল ৯টার দিকে তারা মূল সড়ক অবরোধ করে দাঁড়িয়ে যান।
এরপর শুরু হয় যানজট। শ্রমিকদের অবরোধের কারণে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের সাতরাস্তা মোড়, মগবাজার, অপরদিকে মহাখালীর সড়ক, ও বিজয়সরণি থেকে ওভারপাস হয়ে লাভ রোড, নাবিস্কো সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী কর্মজীবী ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা। অবরোধকারী শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরাতে কয়েক দফা চেষ্টা করে পুলিশ। এতে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে।