× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

প্রয়োজনে থানায় বসে ওসিগিরি করব

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, সোমবার

থানায় গিয়ে যদি মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা না পায় এবং পুলিশ যদি কারো সঙ্গে খারাপ আচরণ করে তবে নিজে থানায় বসে ওসিগিরি করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) নয়া কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম। দায়িত্ব গ্রহণের পর গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কমিশনার এ কথা বলেন। তিনি বলেন, থানায় পুলিশ সদস্যদের আচরণগত কাঙ্খিত পরিবর্তন না হলে সিনিয়র অফিসারদের থানায় বসিয়ে দেব। ডিসিদের সপ্তাহে অন্তত একদিন থানায় বসাব। তারা ওই এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন। তাদের কথা শুনবেন। প্রয়োজনে আমি নিজেই থানায় ওসিগিরি করবো।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা কমিশনারকে প্রশ্ন করেন, ডিএমপির বিভিন্ন থানার ওসিরা ঘুরে ফিরে বছরের পর বছর চাকরি করছেন।
তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও আছে। অথচ ডিসি এডিসিদের বদলি করা হলেও ওসিদের বদলি করা হয় না। জবাবে কমিশনার বলেন, ঘুরেফিরে ডিএমপিতে থাকাতে কোনো অসুবিধা নাই। দেখতে হবে তিনি কতটুকু কাজ করছেন। তাকে দিয়ে কতটুকু কাজ আদায় করানো যাচ্ছে। ওসিদের আচরণ যেন হয়রানিমুখী না হয় সেদিকে নজরদারি আছে। তাদের বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ থাকে তবে বদলি করতে কোনো আইনগত বাধা নাই। এছাড়া একটা অভিজ্ঞতার বিষয় আছে। মেট্রোপলিটন এলাকায় দায়িত্বপালন আর জেলায় দায়িত্বপালন আলাদা। জেলার ওসিদের রাত ১০টার পরে কোনো কাজ থাকে না আর মেট্রোপলিটনের ওসিদের রাত ২টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়। এরপরেও আমরা নতুন ওসি তৈরি করছি। থানায় পরিদর্শকরা আছেন তাদের আমরা ওসি হিসাবে বিভিন্ন থানায় দিচ্ছি।

কমিশনার বলেন, আমরা থানাকে জনমুখী করতে চাই। থানা থেকে মানুষ যেন আশ্বস্থ হয়ে বের হয়ে যেতে পারেন। থানায় সেবা নিতে আসা কাউকে যেন হয়রানির শিকার না হতে হয়। সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে ওসি-ডিসিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দায়িত্ব নেয়ার পর ঢাকার সকল থানার ওসি ও জোনের ডিসিদের সঙ্গে বসেছিলাম। তাদের প্রয়োজনীয় ও কঠোর মনিটরিংয়ের নির্দেশনা দিয়েছি। সাধারণ মানুষ যাতে পুলিশ ভীতি থেকে বের হতে পারে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, আমি চাই কোনো ভুক্তভোগী যেন থানায় গিয়ে হয়রানি ছাড়া মামলা ও জিডি করতে পারে। পুলিশ সেই সহযোগিতা করবে সেটি নিশ্চিত করতে চাই। সাধারণ মানুষ যাতে পুলিশের দ্বারা হয়রানি, চাঁদাবাজির শিকার না হয় এবং পুলিশি সেবার বিপরীতে যাতে আর্থিক লেনদেন না হয় সেদিকে নজর রাখবো। কারো বিষয়ে যদি কোনো অভিযোগ পাওয়া যায় তবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঢাকার লালবাগের একজন মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি দখলের ঘটনা তুলে ধরে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ওই ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট এক ডিসিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কিন্তু অভিযুক্ত ওসিকে তাঁর পদে বহাল রেখে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, কার দায় কতটুকু সেটা বিবেচনা করা হয়েছে। আমি কাগজপত্র দেখব। রাজনৈতিকভাবে পুলিশকে ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা এমন আরেক প্রশ্নে তিনি বলেন, রাজনৈতিক পরিচয় দেখে কখন কি করা হয়েছে বা কে কী করেছে বলুন? পুলিশ আইনের মধ্যে থেকে কাজ করে। নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় হেলমেটধারীদের হাতে সাংবাদিক নির্যাতন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি নতুন এসেছি। তদন্ত রিপোর্ট দেখি এসেছে কিনা। অনেক পুরোনো বিষয়।

জঙ্গিবাদ নিয়ে শফিকুল ইসলাম বলেন, জঙ্গিবাদ এমন একটি মতবাদ। যে একবার এই পথে যায় তাকে ফিরিয়ে আনা দুরহ। মানুষকে বুঝানোর জন্য বাড়ি বাড়ি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছি। নতুন জঙ্গি যাতে তৈরি না হয় সেদিকে নজরদারি আছে। পুলিশের ওপর হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশের ওপর আক্রমণের ঘটনায় মামলার তদন্ত চলছে। এছাড়া এ বিষয়ে আমরা কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েছি এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মাদক নিয়ে কমিশনার বলেন, চাহিদা বন্ধ না করা গেলে পৃধিবীর কোথাও মাদক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না। সেবনকারি যদি কমানো না যায় তবে মাদকের চাহিদা থাকবেই। তাই সন্তানরা যাতে মাদকে জড়িয়ে না যায় সেদিেক খেয়াল রাখতে হবে। যারা জড়িয়ে পড়েছে তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের সহযোগিতা নিন। তিনি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের জিরো টলারেন্স রয়েছে। পুলিশের কোনো সদস্য যদি মাদক সংশ্লিষ্টতায় থাকে, তাহলে তাকে আমরা মাদক ব্যবসায়ীদের মতই ট্রিট করবো। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় ডিসিরা মাঠে থাকবেন: এদিকে ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন কমিশনার। তিনি বলেছেন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সিনিয়র অফিসারদের মাঠে থাকতে হবে। সকালে স্কুল কলেজ ও অফিস টাইমে তিন ঘন্টা ও বিকালে অফিস ছুটির সময় আরও তিন ঘন্টা ট্রাফিকের ডিসি থেকে শুরু করে সবাইকে মাঠে থাকতে হবে। শুধুমাত্র সার্জেন্ট আর টিআইদের ওপর দায়িত্ব দিলে হবে না। ইতিমধ্যে এরকম নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ নির্দেশনা ঠিকমত প্রতিপালিত না হলে বিভিন্ন পয়েন্টে আট ঘন্টা করে সিনিয়র অফিসারদের দায়িত্ব দেয়া হবে। কমিশনার বলেন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা পুরোটা পুলিশের হাতে নয়। রাস্তায় খোঁড়াখুড়ি চলছে, সড়কে গাড়ি বাড়ছে, রাস্তায় নির্মাণ সরঞ্জামাদি ফেলে রেখে নির্মান কাজ হচ্ছে। আমাদের পর্যাপ্ত রাস্তা হচ্ছে না। তাই চাইলেই আমরা সবকিছু পরিবর্তন করতে পারবো না। তবে যানজট সহনীয় পর্যায়ে আনার চেষ্টা করবো। জেব্রা ক্রসিং দিয়ে যদি কেউ রাস্তা পারাপারের চেষ্টা করে তবে তাকে গাড়ি থামিয়ে পার হওয়ার সুযোগ দেব। আমাদের অফিসারদেরকে বলেছি। এই চর্চা যেন সবাই শুরু করে। তাহলে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর