× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

৩ বছর বিদেশ থেকে ভিডিওকলে জনসেবা দিচ্ছেন ইউপি সদস্য

এক্সক্লুসিভ

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, মঙ্গলবার

নাটোরের বড়াইগ্রাম সীমান্ত সংলগ্ন লালপুর কদিমচিলান ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ড সদস্য মো. আবুল কালাম (আবু মেম্বার) ২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ৭ মাস পরে জীবিকার উদ্দেশ্যে চলে যান কাতার। কিন্তু তিনি যথারীতি ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম রেজা মাস্টারের যোগসাজশে বেতন-ভাতা উত্তোলন করে যাচ্ছেন। তবে ওই মেম্বারের স্ত্রী মাসুদা বেগম জানান, কাতার থেকে ভিডিওকলের মাধ্যমে তার স্বামী এলাকার জনগণের সেবা করছেন। এক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদের যাবতীয় সকল কাগজপত্রে স্ত্রী মাসুদা নিজেই আবুল কালাম নামীয় স্বাক্ষর ও সিল মারেন। এদিকে আবুল কালাম মেম্বার দীর্ঘ সময় নিজ এলাকা (ওই ইউনিয়নের গোধড়া এলাকায়) না থাকায় এলাকার জনগণ বার বার ইউপি চেয়ারম্যানকে অবগত করেন। এরপরও কোনো সুরাহা না পাওয়ায় গত ২৭শে আগস্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ভুক্তভোগী জনগণ একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় সাংবাদিকদের সুকৌশলী অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। নির্বাচিত হওয়ার ৭ মাস পর থেকেই প্রায় ৩ বছর যাবৎ ইউপি সদস্য আবুল কালাম কাতার প্রবাসী।
চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় নিয়মিত উত্তোলন হচ্ছে সরকারি বেতন-ভাতা। গত রোববার সকালে সরজমিনে ইউপি সদস্যের বাড়িতে গেলে তার স্ত্রী মাসুদা বেগম নিজ মুঠোফোনে স্বামী আবুল কালামের ইমো (ওগঙ) ০০৯৭৪৬৬৭৫৯২৯৭ নম্বরে ফোন করে। পরে সাংবাদিকরা বিষয়টি নিয়ে আবুল কালামের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, ৩ বছর যাবৎ তিনি কাতারে চাকরি করলেও এলাকার জনগণের সেবা করতে তার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। নিয়মিত ইমো নম্বরে ভিডিওকলের মাধ্যমে জনগণের সমস্যার কথা শোনেন ও ব্যবস্থা নেন এবং এ বিষয়ে সহযোগিতা করছেন ইউপি চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রী। আবুল কালাম আরো জানান, ইউপি চেয়ারম্যানের অনুমতিক্রমে তিনি বিদেশে গেছেন এবং কাতারে থেকেই স্থানীয় সকল কাজ কর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। আবুল কালামের বাড়িতে সাংবাদিক এসেছে এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে ভিড় জমান স্থানীয়রা। এ সময় স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, ইউনিয়ন পরিষদ হতে ওয়ার্ডে বরাদ্দকৃত সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধা যেমন ভিজিএফ, ভিজিডি, বয়স্কভাতা, বিধবা ভাতাসহ উন্নয়নমূলক সকল সুবিধা হতে বঞ্চিত হচ্ছে তারা।
ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ এ উল্লেখ আছে কোনো ইউপি সদস্য পরপর ৩টি কার্যকরী মিটিংয়ে অনুপস্থিত থাকলেই তার সদস্য পদ বাতিল হবে এবং সুনির্দিষ্ট কারণে ১ বছরে ছুটি নিতে পারবেন সর্বোচ্চ ৩ মাস। এসব নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে দীর্ঘ সময় প্রবাস যাপন করছেন এই ইউপি সদস্য। এলাকাবাসী জানান- মেম্ব্বার না থাকায় কোনো প্রকার সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না তারা।
এ বিষয়ে কদিমিচিলান ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম রেজা মাস্টার বলেন, ইউপি সদস্য কোথায় আছেন তিনি জানেন না, ১নং ওয়ার্ডের সকল দায়িত্ব তিনিই পালন করছেন, তবে মানবিক দিক বিবেচনা করে সরকারি ভাতার টাকা তুলে দেন ইউপি সদস্যের পরিবারের কাছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মূল বানীন দ্যুতি বলেন, কোনো ইউপি সদস্য অনুমতি ছাড়া দেশত্যাগ করতে পারবে না, সে আইন বহির্ভূত কাজ করেছে। অভিযোগ এর ভিত্তিতে আইন অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক গোলাম রাব্বী বলেন, কোনো ইউপি সদস্য ৩টি কার্যকরী মিটিংয়ে অনুপস্থিত থাকলেই তার সদস্য পদ বাতিল হবে। কিন্তু এই দীর্ঘ সময় তিনি কীভাবে পদে বহাল থেকে সরকারি ভাতা ভোগ করলেন তা তদন্ত করে দেখা হবে ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর