স্বাধীনতার ৪৮ বছর পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশের শিশুরা এখনও অধিকার বঞ্চিত, অমানসিক নির্যাতনের শিকার উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ কেমন বাংলাদেশ? কোন সমাজ আমরা নির্মাণ করছি? যে সমাজে আমাদের ফুলের মতো শিশুগুলোকে আমরা ভালোবাসতে পারছি না। যে সমাজ আমাদের শিশুদের জন্য সুন্দর একটি ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে পারছে না। চতুর্দিকে আজ একটি অনিশ্চয়তা, অস্থিতিশীলতা, ভয়-শঙ্কা কাজ করছে।
আজ রাজধানীর আইডিইবি ভবনে জিয়া শিশু একাডেমী আয়োজিত ১১তম জাতীয় শিশু শিল্পী প্রতিযোগিতা শাপলা কুঁড়ি-২০১৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান চেয়েছিলেন, শিশুরা পাখির মতো ডানা মেলে উড়বে, সুশিক্ষা ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে জীবন গড়ার মাধ্যমে বিশ্বকে দেবে এক নতুন বাংলাদেশ। কিন্তু আজ দেশের শিশুরা অধিকার বঞ্চিত, অমানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে কুশিক্ষা ও অপসংস্কৃতির রোষানলে আবদ্ধ। প্রতিনিয়ত শিশুদের ওপর চলছে পৈশাচিক নির্যাতন। যা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে বিরাট অন্তরায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭১ সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম তখন আমি যুবক ছিলাম।
আজকে আমি প্রায় বৃদ্ধ। ৪৮ বছর হয়েছে আমাদের স্বাধীনতার। কিন্তু এমন স্বাধীনতার স্বপ্ন আমরা দেখিনি এ বাংলাদেশে। বাংলাদেশের এমন চিত্র আমরা আশা করিনি এবং সেজন্য আমরা অস্ত্র তুলে নিয়ে যুদ্ধ করিনি। আমরা যুদ্ধ করেছিলাম সত্যিকার অর্থে ‘একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে’ এই গানটিকে প্রেরণা হিসেবে সামনে রেখে। বাংলাদেশ আমাদের সেই ফুল। সেই ফুলকে ফোঁটাতে চেয়েছিলাম আমরা।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা ছোট ছোট শিশু বন্ধুদের স্বপ্নের দেশ উপহার দেয়ার জন্য কাজ করি। আমরা কাজ করি আমাদের শিশুদের জন্য যেনও একটি শান্তির পৃথিবী তৈরি করতে পারি। যে পৃথিবীতে থাকবে না কোনও হিংসা-বিদ্বেষ। যেখানে তৈরি হবে ভালোবাসাময় এক পৃথিবী।
মির্জা ফখরুল বলেন, অপরাজনীতির করাল গ্রাসে আজকে শিশুরা পর্যন্ত ঘৃণা ও সন্ত্রাসের বাইরে থাকতে পারছে না। আমরা দেখছি যে, আমাদের শিশুরা আহত অহরহ নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, হত্যার শিকার হচ্ছে। একটা ফুলের মতো নিষ্পাপ শিশুকে কী করে নির্যাতন ও হত্যা করা যায়? এটা আমাদের বোধগম্য নয়।
একাত্তরে শহীদ জিয়ার ভূমিকা ও তাকে নিয়ে বিভিন্ন সময় কটূক্তির জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে তো জিয়াউর রহমান সম্পর্কে অনেক বিকৃত খারাপ কথা আমাদের শুনতে হয়। আসলে সেটা সঠিক নয়। সত্যিকার অর্থে জিয়া হচ্ছেন, সেই ব্যক্তি যিনি আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি সেই ব্যক্তি যিনি বাংলাদেশের মানুষকে স্বাধীনতাযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। আমরা কাউকে ছোট করতে চাই না। যারা মাথার উপরে আছেন আমরা তাদের সবাইকে মাথার উপরেই রাখতে চাই। কিন্তু যে মানুষটির অবদান আছে যে মানুষটি তার জীবনবাজি রেখে লড়াই করেছেন, যুদ্ধ করেছন, স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন তাকে ছোট করার অধিকার কারও নেই। দুর্ভাগ্য আমাদের আজকে অনেকেই তাকে ছোট করতে চাই। কিন্তু চাইলেও তাকে ছোট করা যায় না। যার যা অবদান জাতি তা সবসময় স্মরণ রাখে, তা স্বীকার করে এবং তার মূল্য তাকে দেয়। আমরা অনেকেই জানি না, এই যে শিশু একাডেমি এটাও তো তৈরি করেছিলেন জিয়াউর রহমান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জিয়া শিশু একাডেমির মহাপরিচালক এম. হুমায়ুন কবির। এ সময় অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।