সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবনঘেঁষা দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরার কপোতাক্ষ নদে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। গতকাল ভোরের দিকে পার্শ্বেখালী টেকেরহাট সংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) শতাধিক ফুট ব্লক কপোতাক্ষ নদে ধসে পড়ে। স্থানীয় কবিরুল জানান, ভোরে ফজরের নামাজের সময় বিকট শব্দে ব্লক দিয়ে তৈরি পাউবো বেড়িবাঁধ কপোতাক্ষ নদে ধসে যায়। এ সময় মুসল্লিদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।
গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ জিএম মাসুদুল আলম জানান, ২০০৯ সালে আইলার আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত পাউবো বাঁধ অদ্যাবধি টেকসই ভাবে নির্মাণ করা হয়নি। পাউবো কর্তৃপক্ষকে বার বার বলা শর্তেও সংশ্লিষ্টদের ঢিলেমিতে ভাঙন শুরু হয়েছে। স্থানীয়দের সহায়তায় স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে কাজ শুরু করা হয়েছে। তবে টেকসই বাঁধ নির্মাণ করা না গেলে ক্ষতিগ্রস্ত স্থান সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে নোনা পানিতে সমগ্র গাবুরা ইউনিয়ন তলিয়ে আইলার মতো ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্ভাবনা আছে। সংশ্লিষ্ট ১৫ নং পোল্ডারের দায়িত্বরত সেকশন অফিসার (এসও) সাজ্জাদুল ইসলাম ভাঙনের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি পাউবোর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী (এক্স-ইন) আবুল খায়ের ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বলেন, ভাঙনকবলিত স্থানে বিকল্প রিং বাঁধ নির্মাণ করা হবে।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে এই গাবুরা ইউনিয়নের দৃষ্টিনন্দন ট্রলার ঘাট সংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাঁধে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়। শুক্রবার সন্ধ্যার পরে খোলপেটুয়া নদীতে উত্তাল জোয়ারে দুই শতাধিক ফুট বেড়িবাঁধ নদীতে ধসে পড়ে। এ সময় হাজার হাজার গাছের চারাও ধসে পড়ে। গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান জানান, তাৎক্ষণিক বিষয়টি পাউবো কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। টেকসই ভাবে ভাঙন দ্রুত সংস্কার না হলে ২০০৩ সালে সরকারি অর্থায়নে সুপেয় পানির জন্য দৃষ্টিনন্দন প্রকল্পটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। এতে গাবুরার মানুষ মিষ্টি পানি থেকে বঞ্চিত হবে। তাছাড়া দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সাইক্লোন শেল্টার সহ ফুটবল খেলার জন্য একমাত্র মাঠটি নোনা পানিতে তলিয়ে যাবে। ২০০৯ সালে আইলার আঘাতে পাউবো বেড়িবাঁধ লণ্ডভণ্ড হয়ে সমগ্র গাবুরা নোনা পানিতে তলিয়ে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ইউনিয়নের চারপাশে ২৭ কিলোমিটার পাউবো বেড়িবাঁধের অধিকাংশ স্থান ঝুঁকিপূর্ণ বলে তিনি জানান।