× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ক্যাসিনো গডফাদারদের তালিকা ধরে অভিযান

প্রথম পাতা

রুদ্র মিজান
২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, শুক্রবার

রাজধানীতে অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনাকারী গডফাদারদের বিরুদ্ধে তালিকা ধরে অভিযান শুরু করছে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী। বুধবার থেকে র‌্যাব এ অভিযান শুরু করে। এদিন অন্তত চারটি ক্যাসিনোতে অভিযান চালানো হয়। র‌্যাব সূত্র জানায়, ক্যাসিনো পরিচালনা করেন এমন ব্যক্তিদের তালিকা করা হয়েছে। এখন পর্যায়ক্রমে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে। এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ডিএমপিও ক্যাসিনো ও জুয়ার আসর বিরোধী অভিযান জোরদার করবে। সূত্র জানায় রাজধানীতে বড় ধরণের অন্তত একশো ক্যাসিনো বা জুয়ার আসর রয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৬০টি রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
তারা ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। র‌্যাবের অনুসন্ধান সূত্র জানায়, রাজধানীর বহুতল ভবনের ছাদগুলোতে গড়ে তোলা হয়েছে ক্যাসিনো। রাত হলেই জমে উঠে ক্যাসিনোগুলো। দেশের বিভিন্ন এলাকার ধনাঢ্য জুয়ারিরা ভিড় করেন সেখানে। জুয়ারিদের পাশে বসে সঙ্গ দেন সুন্দরী তরুণীরা। তাদের অনেকে মডেল, অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিত। এ্যালকোহল পান করে বুঁদ হয়ে থাকেন নেশায়।

স্বল্পবসনা এসব তরুণীরদের সেবা, খাবার, মদ সবকিছু মিলিয়ে ঢাকার বুকে এক ভিন্ন জগত রচনা করেছেন ক্যাসিনো মালিকরা। ক্যাসিনোর নিয়ন্ত্রকরা অত্যন্ত প্রভাবশালী। বৈধ-অবৈধ অস্ত্র, গার্ড নিয়ে চলাফেরা করেন তারা। ঢাকার অর্ধশতাধিক ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত রয়েছেন দুই শতাধিক ব্যবসায়ী। এই তালিকা এখন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। ওই তালিকা ধরে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসার আগে দীর্ঘদিন দাপটের সঙ্গে চলছিলো জুয়া। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই শুরু হয়েছে সাঁড়াশি অভিযান। ইতিমধ্যে র‌্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া। আতঙ্কে রয়েছেন তার সহযোগীরাও। এরমধ্যেই ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের কমিশনার (ডিএমপি) শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ক্যাসিনোতে র‌্যাব অভিযান শুরু করেছে, পুলিশও করবে। জুয়ার বোর্ড ও ক্যাসিনোর তালিকা করা শুরু হয়েছে। ঢাকায় ক্যাসিনো মালিক ও এর সঙ্গে জড়িতরা যত প্রভাবশালী হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, রাজধানীতে জুয়ার আসর বসতে দেয়া হবে না। কোথাও অবৈধ জুয়ার আড্ডা, ক্যাসিনো চলতে  দেয়া হবে না। এসব জুয়ার বোর্ড, ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িতরা যত প্রভাবশালীই হোক না কেন, আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে পুলিশ কঠোর হবে। পুলিশ কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ যদি ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।

র‌্যাবের অভিযানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে ক্যাসিনো মালিকদের মধ্যে। ক্যাসিনো বন্ধ করে আত্মগোপনে রয়েছে জড়িতরা।
বুধবার রাত থেকে ঢাকার মোট চারটি ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র?্যাব। অভিযান চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। এর মধ্যে মতিঝিলের ইয়াংমেন্স ক্লাব থেকে ২৪ লাখ ২৯ হাজার নগদ টাকাসহ ১৪২ জনকে আটক করা হয়। বনানীর আহম্মেদ টাওয়ারে অবস্থিত গোল্ডেন ঢাকা বাংলাদেশ নামক ক্যাসিনোতে অভিযান চালিয়ে কাউকে না পেয়ে সেটি সিলগালা করা হয়। মতিঝিলের ঢাকা ওয়ান্ডার্স ক্লাবে অভিযান চালিয়ে ১০ লাখ ২৭ হাজার টাকা, ২০ হাজার ৫০০ জাল টাকাসহ ক্যাসিনোটি গুড়িয়ে দেয়া হয়। গুলিস্তানের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্লাবে ৪ লাখ ৯৮ হাজার ৬০০ টাকা জব্দ করা হয়। এসব অভিযানে আটক ১৮২ জনের মধ্যে ৩১ জনকে এক বছর করে এবং বাকিদের ৬ মাস করে কারাদণ্ড দিয়েছেন র?্যাবের দু’জন ম্যাজিস্ট্রেট।

খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, মতিঝিল, ফকিরাপুল এলাকায় কমপক্ষে ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। প্রতিটি ক্লাব থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে এক লাখ টাকা নেন তিনি। এসব ক্লাবে সকাল ১০টা থেকে ভোর পর্যন্ত ক্যাসিনো বসে। চলে মদ ও নারীর আড্ডা।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর