নবীগঞ্জে থানার ওসিসহ (তদন্ত) এক এসআইকে কুপিয়ে জখমের মামলায় ছাত্রলীগ নেতা সোহান আহমেদ মুসার মা-বোন ও ভগ্নিপতি গ্রেপ্তারের পর এবার তার সেকেন্ড ইন কমান্ড সাবেক ছাত্রলীগ সহসভাপতি আবুল কাশেমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টায় পার্শ্ববর্তী বানিয়াচং উপজেলা থেকে শহরের গন্ধা এলাকার আলোচিত ওই ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে থানার ওসি মো. ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে এসআই শামসুল ইসলামসহ একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে কাশেমকে বানিয়াচং বড় বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। ওদিকে, শহর এলাকার ত্রাস পৌর এলাকার সালামতপুর গ্রামের খোরশেদ মিয়ার পুত্র উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সোহান আহমদ মুমসাকে গ্রেপ্তারের জন্য প্রযুক্তির সহযোগিতা নেয়া হচ্ছে। পুলিশ জানায়, গত ১২ই সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পৌর এলাকায় তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহ সোহান আহমেদ মুসাকে ধরতে শহরের সালামতপুর এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানকালে ওসি (তদন্ত) উত্তম কুমার দাশ এবং এসআই ফখরুজ্জামানকে কুপিয়ে পালিয়ে যায় মুসা।
এ ঘটনায় আহত ওসি (তদন্ত) উত্তম কুমারকে সিলেট এবং এসআই ফখরুজ্জামানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ নিয়ে এসআই ফিরোজ আহমেদ ১৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
ওই দিন রাতেই মুসার মা সামছুন্নাহার (৫০) বোন মৌসুমি আক্তার (২৬) শাম্মী আক্তার (২২) ও তন্বী আক্তারকে (১৯) গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। বুধবার মুসার ভগ্নিপতি মামলার অন্যতম আসামি কামাল হোসেনকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন হয়েছে। আগামীকাল রোববার এনিয়ে আদালতে শুনানির কথা রয়েছে। এদিকে, পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক সম্রাট মুসার আত্মগোপনে থেকে শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে ফোনালাপের তথ্য পাওয়ার দাবি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, পুলিশ কর্মকর্তাকে কুপিয়ে এলাকায় আলোচনার শীর্ষে রয়েছে ছাত্রলীগ নেতা সোহান আহমেদ মুসা। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, মাদক অপহরণসহ ৯টি মামলা চলমান থাকার পরও সে ছিল বেপরোয়া। সম্প্রতি উপজেলা আওয়ামী লীগের জনৈক শীর্ষ নেতার আনুগত্য ত্যাগ করায় প্রশাসনে তার অজানা অনেক তথ্য পাচার হয়। স্থানীয় সূত্র জানায়, উপজেলার শীর্ষস্থানীয় ছাত্রলীগ নেতার আশীর্বাদে উপজেলা ছাত্রলীগের পদবি পায় মুসা। ২০১৩ সালে উদীয়মান ছাত্রলীগ নেতা হেভেনকে প্রকাশ্যে হত্যার পর পুলিশ তাকে তালিকাভুক্ত করে। এরপর ছাত্রলীগের ওই নেতার আনুগত্য ত্যাগ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের জনৈক শীর্ষ নেতার আশীর্বাদ নিয়ে বেপরোয়া হয়ে ওঠে। সম্প্রতি দ্বিতীয়দফা নেতা পরিবর্তন করে মুসা। বিভিন্ন অভিযোগ থেকে বাঁচার জন্য প্রভাবশালী যুবলীগ নেতার আশ্রয় নেয়। এরই জের হিসেবে ১২ই সেপ্টেম্বর রাতে আওয়ামী লীগের ওই নেতা পুলিশকে খবর দিয়ে তাকে গ্রেপ্তারের উদ্যোগ নেয়। অভিযানে গিয়ে আহত হন নবাগত ওসি (তদন্ত) উত্তম কুমার আর এসআই ফখরুজ্জামান।