বিয়ানীবাজারে জমিজমা নামজারি নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। গত প্রায় দুই মাসে মাত্র ২টি নামজারি করেছে সহকারী কমিশনার (ভূমি)’র কার্যালয়। এতে জমিজমা ক্রয়-বিক্রয় মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। আর জমিজমা বিক্রয় কমে যাওয়ায় সরকারও রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে।
যদিও নামজারির ক্ষেত্রে ভূমি কার্যালয় থেকে অনলাইন পদ্ধতিকে দোষারূপ করা হচ্ছে। ভূমি কার্যালয় সংশ্লিষ্টদের মতে, অনলাইনে আবেদনের কারণে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। একটি নামজারি আবেদন নিষ্পত্তি করতে নির্ধারিত ২৮ দিন লাগার কথা থাকা থাকলেও মাসের পর মাস থেকে আবেদনগুলো পড়ে আছে। উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গত ২ মাস যাবৎ নামজারি না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন জমির মালিকরা।
তাদের অভিযোগ, নতুন সহকারী কমিশনার খুশনুর রুবাইয়াত যোগদানের পর থেকে কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও নামজারি করা হচ্ছে না। উত্তরাধিকার বা ক্রয় সূত্রে বা অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় কোনো জমিতে কেউ নতুন মালিক হলে তার নাম খতিয়ানভুক্ত করার প্রক্রিয়াকে নামজারি বলে। সহজ ভাষায় জমি হস্তান্তর হলে খতিয়ানে পুরনো মালিকের নাম বাদ দিয়ে নতুন মালিকের নাম প্রতিস্থাপন করানোই হচ্ছে নামজারি (মিউটেশন)। কোনো ব্যক্তির নামজারি সম্পন্ন হলে তাকে একটি খতিয়ান দেয়া হয় যেখানে তার অর্জিত জমির সংক্ষিপ্ত হিসাব বিবরণী উল্লেখ থাকে। কয়েকটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ঘুরে দেখা যায়, গত ২ মাসে জমাকৃত কোনো আবেদনপত্রই যাচাই-বাছাই শেষে উপজেলা ভূমি অফিসে পাঠানো হয়নি। সহকারী কমিশনার (ভূমি) নতুন কোনো নামজারিতে স্বাক্ষর না করার কারণে আবেদনগুলো ইউনিয়ন ভূমি অফিসে রেখে দেয়া হয়েছে। বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী মাহবুব জানান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) একদম নতুন নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি ভূমি সংক্রান্ত বিষয় আসলে তেমন বুঝে উঠতে পারছেন না। তবে যত সহজে নামজারি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়, সে বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হবে। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা হাজী আবদুল মন্নান অভিযোগ করেন, তিনি নামজারির জন্য কয়েকমাস আগে আবেদন করেছেন। সব কাগজপত্র সঠিক থাকার পরও তার নামে জমি নামজারি করতে কালক্ষেপণ করছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি)। অথচ একই দাগের জমি বিগত দিনে অপর আরেকজন অংশ মোতাবেক নামজারি করে নিয়েছেন। দলিল লেখক মোর্তজা আহমদ চৌধুরী বলেন, গত কয়েক সপ্তাহ থেকে জমি নিবন্ধন (রেজিস্ট্রি) নাই বললে চলে। শুধুমাত্র নামজারির ক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা তৈরি হওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিয়ানীবাজার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খুশনুর রুবাইয়াত জানান, অনলাইনে আবেদনের নিয়ম করায় প্রথমদিকে কিছুটা জটিলতা সৃষ্টি হয়। এখন অবশ্য সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চলছে।