× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ভারতে মেয়েকে পাচার দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ভ্যানচালক বাবা

বাংলারজমিন

বদরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি
১৬ অক্টোবর ২০১৯, বুধবার

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার দোহাজারী পানো কাপড়িয়ার পাড়া গ্রামের রিকশা-ভ্যানচালক একরামুল ইসলামের মেয়ে আঁখি মনিকে (১৪) অপহরণ করে ভারতে পাচার করা হয়েছে। এখন আঁখি অবস্থান করছে ভারতের হরিয়ানা প্রদেশের একটি শিশু নিরাপত্তা হেফাজতে। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তার ভ্যানচালক বাবা ভারত থেকে মেয়েকে ফিরে আনতে তারাগঞ্জ থানার ওসিসহ নানা জনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কিন্তু বিষয়টি দু’দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকায় সহজে মেয়েকে পাচ্ছেন না বাবা। তবে মেয়ের ফেরা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন বাবা একরামুল। এ কারণে তিনি প্রধানমন্ত্রীসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠণগুলোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

আঁখির পরিবার ও থানায় মামলা সূত্রে জানা যায়, আঁখি মনি স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত। গত বছরের ১৪ই নভেম্বর সকাল ৯টায় নিজ বাড়ি থেকে সে বের  হয়ে জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য পরীক্ষা কেন্দ্রের উদ্দেশে রহনা দেয়। এরপর সে আর বাড়িতে ফিরেনি।
অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে গত ১৮ই নভেম্বর তারাগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করেন বাবা একরামুল। যার নং- ৬৪১। পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন আঁখি মনি ঢাকায় আছে। এ কারণে তিনি সেখানে ছুটে যান এবং ঠিকানা অনুযায়ী মেয়ের সঙ্গে দেখা করেন। তবে অপহরণকারীদের বাধার মুখে তিনি সেখান থেকে মেয়েকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়ে ঢাকায় অবস্থানরত শ্যালক সবুজ মিয়ার কাছে ছুটে যান একরামুল। তারা ফিরে এসে সেখানে আর আঁখিকে খুঁজে পাননি। এতে একরামুল কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলায় তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এ অবস্থায় চলতি বছরের ২৫শে মে একটি ফোন (০০৯১৯৪১৬৪১২২৮১) থেকে আঁখির চাচী নিমলী বেগমের মুঠোফোনে মেসেজ আসে। সেখানে ইংরেজিতে লেখা রয়েছে- ‘আঁখি ইজ ইন সেইফ কাস্টডি অফ সিডব্লিউসি চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি পানিপথ ইন হরিয়ানা ইন্ডিয়া, গো টু পুলিশ অ্যান্ড আস্ক টু গেট হার থ্রু পুলিশ।’ এ বার্তা পেয়ে তার বাবা একরামুল ছুটে যান তারাগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে। ওসি জিন্নাত আলী ওই ফোন নম্বরে কল করে আঁখি মনির সঙ্গে কথা বলেন এবং কীভাবে পাচার হয়েছে তার বর্ণনা শোনেন। অথচ তিনি আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে আরো নিশ্চিত হতে কিছুদিন সময় নেন। ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় পাচারকারিরা আত্মগোপনে চলে যায়।

অবশেষে ১৯শে জুন মা দয়ালী বেগমকে বাদী করে তারাগঞ্জ থানায় একটি মামলা নেয় পুলিশ। যাতে আসামি করা হয় পাঁচজনকে। ২০১২ সালের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ৭/১০ ধারায় করা ওই মামলায় পুলিশ এজাহার ভুক্ত মানিক (৩৫) নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করলেও অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

এ বিষয়ে তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিন্নাত আলী বলেন, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে  যোগাযোগের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনে রিপোর্ট পাঠিয়ে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। আঁখিকে ফেরাতে সবাই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টি এখন দু’দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি চালাচালির মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পাচারকারী আসলেই কে এ নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তারপরও এজাহার নামীয় একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।  এ দিকে তারাগঞ্জ থানার ওসি’র ভূমিকায় হতাশা প্রকাশ করে বাবা একরামুল বলেন, ভারতের ওই ফোন নম্বরে কল করে ওসি সবকিছু নিশ্চিত হওয়ার পর মামলা নিয়েছেন। তিনি বলেন, ওই মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও বর্তমানে সে জামিনে মুক্ত হয়ে হুমকিধমকি দিচ্ছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীসহ দেশের সকল মানবাধিকার সংগঠনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর