স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর এমপিওভুক্তির দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন করেন শিক্ষকরা। দাবি পূরণ না হওয়ায় আজ থেকে আমরণ অনশনে বসার ঘোষণা দিয়েছেন। শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ পেতে আমরা পদযাত্রা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাধাপ্রাপ্ত হবার আশঙ্কায় থাকায় আমরা কাল (আজ) থেকে আমরণ অনশনে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি আরো বলেন, সারাদেশে ৫ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বীকৃতি পেয়েছে। আমরা জানতে পারি মাত্র ২শ’ প্রতিষ্ঠানকে এমপিও করা হয়েছে। যা মানা যায় না। আন্দোলন করার কোনো ইচ্ছা নেই আমাদের।
আমরা শিক্ষক আমরা ক্লাস রুমে ফিরে যেতে চাই। শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ বিনয় ভূষণ রায় বলেন, যে নীতিমালার ওপর ভিত্তি করে সরকার এমপিওভুক্ত করতে চাচ্ছে সে নীতিমালা আমরা মানি না। ভুলে ভরা নানা অসঙ্গতিপূর্ণ নীতিমালা অনুসরণ করে এমপিও তালিকা প্রকাশ হলে বাংলাদেশের বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এদিকে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, উচ্চ পর্যায়ের সম্মতিক্রমে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা চুড়ান্ত করা হয়েছে। এবছর মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে ২ হাজার ৭শ’রও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। এদিকে, বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে ৬৬ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার শিক্ষক সোমবার ২ঘণ্টা, মঙ্গলবার ৩ ঘণ্টা ও গতকাল অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছেন। বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক ঐক্য পরিষদ নামে ১৪টি প্রতিষ্ঠান এতে যোগ দেয়। আজ পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি ও ২৩শে অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আনিসুর রহমান বলেন, বেতন বৈষম্য নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস পেলে আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করব।
এরআগে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হলে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওই আদেশে বলা হয়, বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক ঐক্য পরিষদ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। এ পর্যায়ে দাবি আদায়ের কোনো কর্মসূচি পালিত হলে তা সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বর্তমানে সারাদেশে ৬৫ হাজার ৯৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩ লাখ ২৫ হাজার সহকারী শিক্ষক ও ৪২ হাজার প্রধান শিক্ষক রয়েছেন।