× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

জাফলং ভ্যালি বোর্ডিং স্কুল /সবুজের কোলে অধ্যায়ন

ষোলো আনা

পিয়াস সরকার
১৮ অক্টোবর ২০১৯, শুক্রবার

সিলেট ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য প্রিয় একটি স্থান। আর সিলেটের অন্যতম দর্শনীয় একটি স্থান জাফলং। একপাশে ভারতের মেঘালয় রাজ্য। অন্যপাশে সিলেটের জাফলং। পাহাড়ের কোল ঘেঁষা স্থানটিতে সবুজের সমারোহ। আর এই কোলাহলহীন সবুজের সমারোহের কোলে গড়ে উঠেছে দৃষ্টিনন্দন একটি স্কুল। এ যেন প্রকৃতির সানিধ্যে লেখাপড়া।

১৫০ একর জায়গাজুড়ে গড়ে উঠেছে জাফলং ভ্যালি বোর্ডিং স্কুল। ৬৫টি ক্লাসরুম, ৪টি অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি, ৬টি খেলার মাঠ, ৩টি হোস্টেল ব্লক, ইনডোর গেমসের ব্যবস্থা, স্টাফ কোয়ার্টার, মসজিদসহ নানা স্থাপনা নিয়ে গড়ে উঠেছে স্কুলটি।
স্কুলটিতে পাঠদান করাচ্ছেন দেশি-বিদেশি শিক্ষকরা।

সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলার শ্রীপুরে সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের পাশেই সম্পূর্ণ আবাসিক এই স্কুলের অবস্থান। প্রবেশ ফটক পেরিয়েই  চূড়ায় এক একটি বিল্ডিং। টিলা নষ্ট না করে গড়ে তোলা হয়েছে স্কুলের বিভিন্ন ভবন। স্কুল ক্যাম্পাসে টিলার ফাঁকে ফাঁকে চা-বাগান। প্রকৃতির এমন রূপের মধ্যেই পড়ালেখা করছেন জাফলং ভ্যালি বোর্ডিং স্কুলের শিক্ষার্থীরা।

ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত জাতীয় কারিকুলামের অধীনে ইংলিশ ভার্সনে পড়ালেখার সুযোগ রয়েছে এখানে। বিদেশি শিক্ষকরাও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিজেরাও আমাদের জাতীয় কারিকুলামে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। ২০১৮ সেশন থেকে যাত্রা শুরু করা স্কুলটির অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়েছেন ভারতীয় শিক্ষক ব্রিজ কিশোর ভারদ্বাজ। তিনি বলেন, প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী দেশের বাইরে বিভিন্ন বোর্ডিং স্কুলে পড়তে যায়। বিশেষ করে দার্জিলিংয়ে। আমাদের লক্ষ্য ওইসব শিক্ষার্থীকে ধরে রাখা। আমার বিশ্বাস কোনো অভিভাবক যদি একবার আমাদের স্কুল পরিদর্শন করেন তাহলে তিনি আর অন্য কোথায়ও যাবেন না। এখানে ন্যাশনাল কারিকুলামে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

এই স্কুলটিতে একজন শিক্ষার্থীকে প্রতিবছর সেশন ফি দিতে হয় ৬০ হাজার টাকা। আর মাসিক বেতন ২০ হাজার টাকা। এখানে শিক্ষার্থীদের ক্যাডেট কলেজের মতোই নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হয়। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার ও নাস্তা পায় শিক্ষার্থীরা। ৬টি খেলার মাঠে রয়েছে পর্যাপ্ত খেলাধুলার সুযোগ। সকালে জগিং বাধ্যতামূলক। রয়েছে স্পেশাল ক্লাস, কোচিং, সাংস্কৃতিক চর্চার ব্যবস্থা।

বর্তমানে স্কুলটিতে ১২০ জন আবাসিক ছাত্র ও ২১ জন শিক্ষক রয়েছেন। প্রিন্সিপালসহ ৩ জন ভারতীয় শিক্ষক রয়েছেন। যদিও এখানে প্রায় ৯৫০ জন শিক্ষার্থীর আবাসন সুবিধা রয়েছে। শিক্ষকদের দক্ষতা বাড়াতে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

শিক্ষার্থীদের ১ নম্বর ডরমেটরি ভবনের ১০৩ নম্বর রুমে গিয়ে কথা হয় অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহীদুল ইসলাম মাহবুবের সঙ্গে। সে জানায়, প্রথমত প্রকৃতির সানিধ্যে পড়তে পারছি। এ ছাড়া আগে যখন একটি বিষয় বুঝতাম না তখন  পরেরদিনের কোচিংয়ের জন্য ফেলে রাখতে হতো। কিন্তু এখন স্কুল, স্পেশাল কোচিংয়ের বাইরেও সব সময়ের জন্য শিক্ষক পাচ্ছি। বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলাও করতে পারছি।

ঢাকার উত্তরার ছেলে ওয়াসিফ আলী। সপ্তম শ্রেণির এই শিক্ষার্থী থাকে ১০১ নম্বর রুমে। সে জানায়, আমরা একেক রুমে ৪ জন থাকি। সবার জন্যই স্বতন্ত্র খাট, টেবিল, আসবাব রয়েছে।

১ নম্বর ডরমেটরি আবার পদ্মা, মেঘনা, সুরমা ও কুশিয়ারা চারভাগে বিভক্ত। কথা হয় কুশিয়ারার হাউজ মাস্টার এমরান হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলাম। ইসলামিক স্টাডিজে ফ্লাস্টক্লাস থার্ড হয়েছি। এখন এই স্কুলে শিক্ষকতা করছি। অন্যান্য শিক্ষকরাও মেধাবী ও দক্ষ। শিক্ষার্থীদের যে কোনো সমস্যায় আমরা সাড়া দেই। কারণ ৩০ জন শিক্ষার্থীর পুরো দায়িত্ব আমার। আর স্কুলটির নিয়ম-কানুন ও ব্যবস্থাগত পদ্ধতি এতটাই উন্নত যে, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা নিয়ে নিজেকে ভাবতে হয় না। নিয়মের মধ্য থেকেই সে প্রস্তুত হয়ে ওঠে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর