সেশনজট, শিক্ষক সংকট, ক্লাসরুম সংকট, আবাসন সংকট, মূল ফটকসহ বেশকিছু মৌলিক সমস্যায় জর্জরিত উত্তরবঙ্গের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)। গত ১২ই অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়টি এক যুগে পদার্পণ করলেও, মৌলিক সমস্যা সমাধানে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। এসব সমস্যা সমাধানের দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় স্মারকলিপি প্রদান এবং গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করলেও এব্যাপারে মাথাব্যথা নেই যথাযথ কর্তৃপক্ষের।
সরজমিন দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশের চারটি গেট থাকলেও, নেই মূল ফটক। ২১টি বিভাগের শিক্ষার্থীদের পাঠদান, শিক্ষকদের ব্যক্তিগত অফিস ও বিভাগের অফিসের জন্য রয়েছে মাত্র চারটি একাডেমিক ভবন। নেই পর্যাপ্ত ক্লাসরুম। কোনো কোনো বিভাগের প্রায় চার শতাধিক শিক্ষার্থীর ক্লাসরুম রয়েছে মাত্র দুটি। কিছু বিভাগের শিক্ষকদের ব্যক্তিগত অফিসে শেয়ারে বসেন দুইজন করে শিক্ষক।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি বিভাগের ১৩টিতে রয়েছে এক থেকে আড়াই বছরের সেশনজট। সাড়ে ৮ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ১৭৮ জন, এর মধ্যে শিক্ষা ছুটিতে রয়েছেন প্রায় ১৫ জনের মতো। শিক্ষার্থী পরিবহন সংখ্যা মাত্র ৯টি। আবাসনের জন্য হল রয়েছে ৩টি। ছেলেদের দুটি, মেয়েদের একটি (মেয়েদের একটি হল নির্মাণাধীন রয়েছে)। আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রায় সাড়ে ৭ হাজার শিক্ষার্থী।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা লাভ করে ২০০৮ সালের ১২ই অক্টোবর তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রার শুরুতে একশ’ তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয় এবং ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়নকে তিন ধাপে ভাগ করা হয়। প্রতিষ্ঠার প্রায় চার বছরের মধ্যেই প্রথম ধাপের কাজ শেষ হওয়ার ৮ বছর অতিক্রান্ত হলেও দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ধাপের কাজ শুরু করতে পারেনি প্রশাসন। সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুর-উন-নবীর সময়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্পের দুটি ভবন শেখ হাসিনা ছাত্রী হল এবং ওয়াজেদ রিসার্চ ইনস্টিটিউট উদ্বোধন করেন। যা এখনো নির্মাণাধীন। দিন দিন আবাসন সংকট, ক্লাসরুম সংকট, সেশনজট তীব্রতর হলেও এ নিয়ে কোনো কার্যকর ভূমিকা নেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের।
সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।