হতাশাগ্রস্ত ও মানসিকভাবে দুর্বল তরুণদের র্যাডিকালাইজড করার জন্য জঙ্গিরা ইন্টারনেটে আকর্ষনীয় প্যাকেজ দিচ্ছে। জঙ্গিবাদের রিক্রুটার ও মোটিভেটরাই প্রতিনিয়ত এসব প্যাকেজ দিয়ে জঙ্গিবাদে তরুণদের টানছে। সম্প্রতি যে জঙ্গিরা ধরা পড়ছে তাদের অনেকেই আগে থেকে জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত ছিল। আবার কেউ কেউ র্যাডিকালাইজড হয়ে এই পথে এসেছে। গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম। ইউএসএআইডির সহায়তায় ‘ঢাকা পিস টক’ নামের একটি কর্মসূচি সর্ম্পকে অবগত করতে সেন্টার ফর সোশ্যাল অ্যাডভোকেসি এন্ড রিসার্স ফাউন্ডেশন (সিসার্ফ) এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে মনিরুল বলেন, মানসিকভবে দুর্বল তরুণরাই জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকছে। জঙ্গি রিক্রুটাররা তাদেরকেই টার্গেট করছে যারা মানসিকভাবে দুর্বল, যাদের ভেতরে এন্টি বডি কম, দেশপ্রেম নাই, দায়িত্ববোধ নাই, মতাদর্শিক জায়গায় ধারণা নাই, টলারেন্স নাই এবং জীবনের বাস্তবতা মেনে না নিয়ে যারা সহজ পথ খোঁজছে তারাই র্যাডিকালাইজড হচ্ছে।
ইন্টারনেটে আকর্ষণীয় প্যাকেজ দেখেই মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধহীন তরুণরাই জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে। এটা ১৫ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে বেশি। তিনি বলেন, সারাবিশ্বই এখন সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তবে বাংলাদেশে ঝুঁকির মাত্রা অত্যন্ত কম। মনিরুল বলেন, কয়েক বছর আগে গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর অনেক তরুণ ঘর থেকে পালিয়ে জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি প্রকাশ পায়। হলি আর্টিজেনে হামলার পর জঙ্গিবাদ নির্মূলে অনেকেই কাজ করেছেন। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কমে যাওয়ায় অনেকেই মনে করেছেন বিপদ কেটে যায়নি। কিন্তু এই বিপদ এখনও কেটে যায়নি। জঙ্গি নির্মূলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করলেও ঝুঁকি এখনও রয়েছে। তাই জঙ্গি বিরোধী কাজ আমাদেরকে আরও বেশি বেশি করতে হবে। আমাদেরকে জঙ্গি বিরোধী একটি এন্টি বডি তৈরি করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজক সিসার্ফ নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শবনম আজীম বলেন, গবেষণার ফল বলে উগ্রবাদের নির্দিষ্ট কোনো কারণ নাই। একক পরিস্থিতিতে এককভাবে উগ্রবাদের সৃষ্টি হয়েছে। কোনো ছকেই এই উগ্রবাদকে সরলীকরণ করা যাবে না। সহিংস উগ্রবাদ বা ঘনীভূত রুপ সন্ত্রাসবাদ দমনের মতো একটি দীর্ঘমেয়াদি জটিল কাজ কোনো সুনির্দিষ্ট বাহিনী, সংস্থা ও ব্যক্তির পক্ষেও সম্ভব না। এজন্য সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, শুধু যে ধর্মীয় উন্মাদনার কারষে সহিংস উগ্রবাদের ঘটনা ঘটছে তা নয়। নানা সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য ও মূল্যবোধ এরকম নানান বিষয় এর সঙ্গে জড়িত।