× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মেডিকেলে সুযোগ পাওয়া লিটনের পাশে ডিসি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান

বাংলারজমিন

মাগুরা প্রতিনিধি
২১ অক্টোবর ২০১৯, সোমবার

দারিদ্র্যকে হার মানিয়ে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে এ বছর মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়া মাগুরার শ্রীরামপুর গ্রামের অদম্য মেধাবী মো. লিটন হোসেনের পাশে দাঁড়ালেন মাগুরা জেলা প্রশাসক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। রোববার দুপুরে প্রাথমিক খরচ হিসাবে লিটনের হাতে ১০ হাজার টাকা করে মোট ২০ হাজার টাকা তুলে দেন তারা। লিটন মাগুরা সদরের শ্রীরামপুর গ্রামের হতদরিদ্র সিরাজুল ইসলাম ও আলেয়া বেগমের ছেলে। ৫ বছর আগে গাছ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়ে কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন লিটনের কৃষক পিতা সিরাজুল ইসলাম। পরিবারের বড় ভাই এর সামান্য কৃষিকাজে সংসার চলে না। মা আলেয়া বেগম লোকের কাছে চেয়ে-চিন্তে কষ্টে-সৃষ্টে ছেলের লেখাপড়া চালিয়ে যান। এ সময় লিটনের মেধার পরিচয় পান সদরের হাজিপুর ইউনিয়নের শ্রীমন্তপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুস সবুর। সবুর মেধাবী লিটনের লেখাপড়ার ভার নেন।
তার প্রচেষ্টা ও এলাকার শিক্ষানুরাগী মানুষদের সহায়তায় লিটন পার্শ্ববর্তী হাটগোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ ও ঝিনাইদহ কেসি কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ ৪.৯২ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। অধ্যবসায়ী লিটন মেধার গুণে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু মেডিকেলে পড়ার খরচ চালানো তার জন্য কষ্টকর হওয়ায় লিটন ও তার মা মাগুরার জেলা প্রশাসক আলী আকবর ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পংকজ কুণ্ডুর স্মরণাপন্ন হন। তারা দুজনে তাকে প্রাথমিকভাবে ভর্তি ও আনুষাঙ্গিক খরচ বহনের জন্য ২০ হাজার টাকা প্রদান করেন। এছাড়া মোরাল প্যারেন্টিং নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন লিটনের লেখাপড়ার আংশিক খচর বহনের জন্য সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। লিটনের মা আলেয়া বেগম বলেন, আমার ছেলে অত্যন্ত মেধাবী ও লেখাপড়ার প্রতি মনোযোগী। মেডিকেলে ভর্তির জন্য সুযোগ পাওয়ার খবর শুনে পারিবারিক অনটনের কারণে ওর লেখাপড়া নিয়ে শঙ্কায় ছিলাম। আজ ডিসি সাহেব, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাহেব আমাদের পাশে দাঁড়ালেন। আমরা চিরদিন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবো।
লিটনের শিক্ষক আবদুস সবুর বলেন, লেখাপড়ায় লিটনের মেধার পরিচয় পেয়ে আমরা তাকে সহায়তা দিয়েছি। এখন সে মেডিকেলে পড়েবে। টাকার অভাবে তার লেখাপড়া যেন বাধাগ্রস্ত না হয় সবাই সেদিকে নজর রাখবেন।
মাগুরার জেলা প্রশাসক আলী আকবর জানান, লিটনের মতো অদম্য মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের জন্য জেলা প্রশাসনের দ্বার সব সময় উন্মুক্ত। টাকার অভাবে তার লেখাপড়া যেন বিঘ্নিত না হয় সেদিকে আমরা সব সময় খেয়াল রাখছি।
মাগুরা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা পংকজ কুন্ডু জানান, জননেত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকার হিসেবে উন্নত আগামী গঠনে বর্তমান মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের জন্য জেলা পরিষদের মাধ্যমে শিক্ষা সহায়তা দেয়া হচ্ছে। গরিব ও মেধাবী লিটন হোসেনের পাশে থাকতে পেরে আমরা গর্বিত। সে যেন একজন ভালো ডাক্তার হতে পারে সেই দোয়া করি।
লিটন হোসেন সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, পরিবারিক অনটনের কারণে অনেক সময় দুবেলা খেতেও পারিনি। কিন্তু লেখাপড়া কখনো ছেড়ে দিইনি। আর এ কাজে আমাকে সকল পর্যায়ের শিক্ষকবৃন্দ ও সমাজের দানশীল মানুষ যেভাবে সহযোগিতা করেছেন তাতে আমি ও আমার পরিবার কৃতজ্ঞ। সবাই দোয়া করবেন আমি যেন একজন ভালো চিকিৎসক হয়ে গরিব-দুখি মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর